Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটক টানতে সমুদ্রবাঁধে নয়া ভাবনা

বিশাল জলাশয়। অনতিদূরেই গভীর জঙ্গল। সেখানে মাঝেমধ্যেই হাতির পাল দেখা যায়। রয়েছে বেশ কিছু হরিণ ও বন শুয়োরও। পর্যটকদের সুবিধার্থে বন দফতর থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেই টাওয়ার লাগোয়া তিনটি ঘরে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বাঁকুড়ার জয়পুরে সমুদ্রবাঁধকে ঘিরে এই পর্যটনকেন্দ্র এখন প্রশাসনের নজরের অভাবে জলুস হারাচ্ছে। তবে পর্যটক এই আক্ষেপ দূর করতে এগিয়ে আসছে প্রশাসন। সমুদ্রবাঁধকে ঘিরে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের আরও কিছু পরিকল্পনা নিচ্ছে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি।

জয়পুরের সমুদ্রবাঁধের এখন এমনই দশা। হতাশ পর্যটকেরা, আক্ষেপ বাসিন্দাদেরও। ছবি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।

জয়পুরের সমুদ্রবাঁধের এখন এমনই দশা। হতাশ পর্যটকেরা, আক্ষেপ বাসিন্দাদেরও। ছবি তুলেছেন শুভ্র মিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জয়পুর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:৫৪
Share: Save:

বিশাল জলাশয়। অনতিদূরেই গভীর জঙ্গল। সেখানে মাঝেমধ্যেই হাতির পাল দেখা যায়। রয়েছে বেশ কিছু হরিণ ও বন শুয়োরও। পর্যটকদের সুবিধার্থে বন দফতর থেকে তৈরি করে দেওয়া হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। সেই টাওয়ার লাগোয়া তিনটি ঘরে পর্যটকদের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। বাঁকুড়ার জয়পুরে সমুদ্রবাঁধকে ঘিরে এই পর্যটনকেন্দ্র এখন প্রশাসনের নজরের অভাবে জলুস হারাচ্ছে। তবে পর্যটক এই আক্ষেপ দূর করতে এগিয়ে আসছে প্রশাসন। সমুদ্রবাঁধকে ঘিরে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের আরও কিছু পরিকল্পনা নিচ্ছে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি।

সমুদ্রবাঁধের আয়তন প্রায় ৫৯ একর। ওই বাঁধকে ঘিরেই তৈরি করা হয়েছিল ওয়াচ টাওয়ার। টাওয়ারে চড়ে অনেক দূর পর্যন্ত জঙ্গল যেমন দেখা যায়, তেমনই সৌভাগ্য হলে হাতির পালও নজরে এসেছে পর্যটকদের। এ ছাড়া হরিণের পালের চকিত দৌড়ও অনেককে মুগ্ধ করেছে। তাই এই পর্যটন কেন্দ্রের আকর্ষণ পর্যটকদের কাছে দিন দিন বেড়েছে। ওয়াচ টাওয়ার লাগোয়া তিনটি ঘরে ছ’জনের থাকার ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু অনেক সময় বেশি লোকজন এলে তাঁদের থাকার জায়গা দেওয়া যায় না। অনেকে আক্ষেপ নিয়ে ফিরে যান। নতুন থাকার ব্যবস্থা তৈরি করার সঙ্গেই আধুনিক বিনোদনের আরও কিছু সুবিধা চাইছেন পর্যটকেরা।

কলকাতার বরাহনগর থেকে সম্প্রতি এই এলাকায় বেড়াতে এসেছিলেন শঙ্কর রায়। তিনি বলেন, “ছোটদের সঙ্গে এনেছি। কিন্তু ওদের খুশি করার মতো কিছুই নেই। সমুদ্রবাঁধে নৌকাবিহার চালু করা হলে বড়দের সঙ্গে ওদেরও ভালো লাগবে।” জলাশয়ের উপর এলাকার মানুষজনও নির্ভরশীল। দৈনন্দিন নানা কাজে ঝিলের জল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ঝিলটি সংস্কারের অভাবে নষ্ট হচ্ছে। এলাকার তরুণ বিকাশ মহাদণ্ড বলেন, “বিশাল এই বাঁধটি এলাকার গর্বের। পরিযায়ী পাখিরা আসে এই ঝিলে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে সব নষ্ট হচ্ছে।”

এ বার তাই ওয়াচ টাওয়ার লাগোয়া সমুদ্রবাঁধের সংস্কার করে পর্যটন আকর্ষণ বাড়াতে আরও নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে জয়পুর পঞ্চায়েত সমিতি। ওই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ইয়ামিন শেখ বলেন, “বাঁধ সংস্কার করে নৌকাবিহার চালুর পরিকল্পনা নিয়েছি আমরা। এ ছাড়া রিসর্ট তৈরি করা হবে। সেই সঙ্গে বাঁধের পাড়ের সৌন্দার্যায়ণের কাজও করা হবে।” তিনি জানান, পর্যটক টানার উদ্দেশে এই খাতে ১ কোটি টাকার প্রকল্প জেলা পরিষদে জমা দেওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “জেলার পর্যটন উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। তার মধ্যে জয়পুরের সমুদ্রবাঁধ প্রকল্পটিও রয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা পরিকল্পনা বিভাগের এক আধিকারিক ওই বাঁধ পরিদর্শন করে এসেছেন।”

এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়িত হলে জয়পুরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। পর্যটকরাও জানাচ্ছেন, জয়পুর বনাঞ্চল নানা দিক থেকেই আকর্ষণীয়। কিন্তু বন দফতরের একটি রেস্ট হাউস ও ওয়াচ টাওয়ার ছাড়া সরকারি ভাবে থাকার জায়গার খুব অভাব। সমুদ্রবাঁধে সরকারি উদ্যোগে রিসর্ট হলে কিছুটা হলেও সে সমস্যা কাটবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

joypur tourist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE