Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় খুন, দাবি প্রতিনিধি দলের

সিপিএম ছেড়ে তাঁদের দলে যোগ দেওয়াতেই বাঁকুড়ার কোতুলপুরের রাজু হাজরাকে তৃণমূল কর্মীরা পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য প্রতিনিধিরা। শুক্রবার কোতুলপুরের বাজিকরডাঙা গ্রামে কল থেকে জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে গোলমালে মুগুর দিয়ে রাজুকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর স্ত্রী জ্যোত্‌স্নাদেবীও আহত হয়ে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অভিযোগেই পুলিশ শনিবার দুপুরে ওই গ্রামের স্বপন বাগ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে।

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিহতের দেহ পরীক্ষা করছেন বিজেপি-র রাজ্য সহ সভাপতি সুভাষ সরকার।নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিহতের দেহ পরীক্ষা করছেন বিজেপি-র রাজ্য সহ সভাপতি সুভাষ সরকার।নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:৩২
Share: Save:

সিপিএম ছেড়ে তাঁদের দলে যোগ দেওয়াতেই বাঁকুড়ার কোতুলপুরের রাজু হাজরাকে তৃণমূল কর্মীরা পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ তুললেন বিজেপির রাজ্য প্রতিনিধিরা। শুক্রবার কোতুলপুরের বাজিকরডাঙা গ্রামে কল থেকে জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে গোলমালে মুগুর দিয়ে রাজুকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর স্ত্রী জ্যোত্‌স্নাদেবীও আহত হয়ে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অভিযোগেই পুলিশ শনিবার দুপুরে ওই গ্রামের স্বপন বাগ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে।

এ দিন হাসপাতালে যান বিজেপির চার রাজ্য সহ সভাপতির একটি দল। তাঁরা আহত জ্যোত্‌স্নাদেবীর সঙ্গে দেখা করেন। তিনি অবশ্য কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। দলের রাজ্য সহ সভাপতি সুভাষ সরকার পেশায় চিকিত্‌সক। তিনি নিহতের দেহ পরীক্ষা করে দাবি করেন, “বাইরে আঘাতের চিহ্ন যা দেখলাম, তাতে বোঝা যাচ্ছে বুকে, মাথায় ও পিঠে মুগুর দিয়ে খুব মারধর করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ইন্টারনাল হ্যামারেজেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দেহটি ময়না তদন্তের পরে ভিসেরা পরীক্ষারও দাবি জানিয়েছি।” ওই প্রতিনিধি দলে সুভাষবাবুর সঙ্গে ছিলেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রভাকর তিওয়ারি ও তাপস চট্টোপাধ্যায়।

নিহতের ভাই সুরেশ হাজরা প্রতিনিধি দলকে জানান, তাঁরা আগে সিপিএম করতেন। মাস ছয়েক আগে তাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তা নিয়ে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের রাগ ছিল। তাঁর অভিযোগ, “কল থেকে জল নেওয়াকে কেন্দ্র করে পরিকল্পনা মাফিক শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলের লোকেরা বউদিকে মারধর করে। দাদা বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মুগুর দিয়ে পেটায় ও ইট ছুঁড়ে মারে।” তাঁকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ও পরে বিষ্ণুপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষ্ণুপুর হাসপাতালেই পরে তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি ওই খুনের ঘটনায় বিজেপির প্রতিনিধিদের কাছে আরও কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। একই অভিযোগ তুলেছেন এই জেলারই বাসিন্দা সুভাষবাবুও। তিনিও বলেন, “বিজেপির প্রভাব ওই এলাকায় বাড়ছে দেখেই প্রতিহিংসাবশত রাজুকে পিটিয়ে খুন করেছে তৃণমূলের লোকেরা। জেলার পুলিশ সুপারের কাছে আমরা নিরপেক্ষ ভাবে তদন্তের দাবি জানাব।”

যদিও বাঁকুড়া জেলা সভাধিপতি তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, “ওই ঝামেলায় আমাদের দলের কেউ জড়িত নয়।” তবে দলের কোতুলপুর ব্লক সভাপতি প্রবীর গড়াই জানিয়েছেন, ধৃত স্বপন তাঁদের দলেরই কর্মী। তাঁর দাবি, “ওকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।” এ দিকে, জেলার এসপি মুকেশ কুমার বলেন, “নিহতের স্ত্রী অভিযোগপত্রে ওই ব্যক্তির নামেই খুনের অভিযোগ করেছিলেন। তাঁকে পুলিশ অভিযোগ পেয়েই গ্রেফতার করেছে। তদন্তও চলছে।”

এ দিন বিকেলে বিষ্ণুপুর মর্গ থেকে নিহতের দেহ গ্রামে নিয়ে যান তাঁর পরিজন ও বিজেপির স্থানীয় কর্মীরা। সেখানেই শেষকৃত্য হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp party representative murder bishnupur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE