Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে আসেনি বই, বিপাকে ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়ারা

বাংলা মাধ্যমের স্কুলে বই নিয়ে সমস্যা কাটলেও মধ্যশিক্ষা পর্যদের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে এখনও সরকারি পাঠ্যবই আসেনি। এর ফলে পুরুলিয়া জেলার দু’টি মডেল স্কুল ও পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছে। তার মধ্যে অষ্টম শ্রেণির সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় তাদের কার্যত কী পড়াবেন ভেবে পাচ্ছেন না শিক্ষকরা।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:০০
Share: Save:

বাংলা মাধ্যমের স্কুলে বই নিয়ে সমস্যা কাটলেও মধ্যশিক্ষা পর্যদের ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে এখনও সরকারি পাঠ্যবই আসেনি। এর ফলে পুরুলিয়া জেলার দু’টি মডেল স্কুল ও পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছে। তার মধ্যে অষ্টম শ্রেণির সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় তাদের কার্যত কী পড়াবেন ভেবে পাচ্ছেন না শিক্ষকরা।

এ বার শিক্ষাবর্ষ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে সরকারি বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছয়। কিন্তু বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলিতে বই গেলেও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে এখনও বই কেন আসেনি তার সদুত্তর মেলেনি। বই সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক প্রদীপ পতি শুধু বলেন, “ইংরেজি মাধ্যমের কোনও ক্লাসের বইই এখনও আমাদের হাতে এসে পৌঁছয়নি। বই এলেই বিলি করা হবে বলে স্কুলগুলিকে জানিয়ে দিয়েছি।”

জেলায় মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দু’টি মডেল স্কুল রয়েছে রঘুনাথপুর ২ ও বান্দোয়ান ব্লকে। পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক স্বামী শক্তিপ্রদানন্দ বলেন, “পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে সরকারি বই পড়ানো হয়। আমাদের বিদ্যাপীঠে বাংলা ও ইংরেজি দুই মাধ্যমের পড়ুয়ারাই রয়েছে। বাংলা মাধ্যমের বই আমরা পেয়েছি। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের বই এখনও পাইনি। তার উপরে অষ্টম শ্রেণির নতুন সিলেবাস চালু হওয়ায় পড়ুয়াদের বই না দিতে পারায় খুব সমস্যা তৈরি হয়েছে।” তিনি জানান, এমনকী স্কুলের বিষয় শিক্ষকরাও নতুন সিলেবাসের বই পাননি। ফলে তাঁরাও জানেন না কী পড়াতে হবে। এতে পড়াশোনার বেজায় ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি জানান, স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে সর্বশিক্ষা মিশনে তাঁরা চিঠি পাঠিয়ে সমস্যার কথা জানিয়ে দ্রুত বই পাঠাতে বলেছেন। কিন্তু বই মেলেনি। স্বামী শক্তিপ্রদানন্দ বলেন, “গত ডিসেম্বর মাসেই জেলা স্কুল পরিদর্শকের (মাধ্যমিক) সঙ্গে দেখা করে আমাদের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির জন্য কতগুলি ইংরেজি মাধ্যমের বই প্রয়োজন তা জানিয়ে এসেছিলাম। তার পরেও কেন বই পেতে দেরি হচ্ছে বুঝতে পারছি না।”

একই সমস্যায় জেলার রঘুনাথপুর ২ ও বান্দোয়ান ব্লকের দু’টি মডেল স্কুলও। এই দু’টি স্কুলে শুধুমাত্র ইংরেজি মাধ্যমেই পড়াশোনা হয়। রঘুনাথপুর ২ ব্লকের মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সুপ্রীতি ভট্টাচার্য বলেন, “আমাদের পড়ুয়াদের জন্য এখনও বই পাইনি।” একই বক্তব্য বান্দোয়ান মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক তারাপদ দত্তেরও। তাঁর কথায়, “অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যক্রম এ বার বদল হয়েছে। নতুন বই প্রয়োজন। কিন্তু এখনও নতুন বই আশেনি। আর ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণির ক্ষেত্রে পুরনো বই (যা আগে পড়ুয়ারা ব্যবহার করেছে) দিয়ে কোনওরকমে চালাচ্ছি। কিন্তু কোনও বই ছেঁড়া, কোনও বইয়ে কালি লাগানো রয়েছে। পড়ুয়াদের সকলকে দিতেও পারিনি। এতে সমস্যা হচ্ছে।” তাঁরা জানিয়েছেন, বইয়ের জন্য মৌখিক ভাবে জানানোর পাশাপাশি লিখিত ভাবেও শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছেন। কিন্তু কবে বই আসবে তা নিয়ে নিশ্চিত ভাবে কেউ জানাতে পারেনি।

জেলা পরিষদের শিক্ষা বিভাগের কর্মাধ্যক্ষ সুষেণচন্দ্র মাঝি বলেন, “বাংলা মাধ্যমের বই এলেও ইংরেজি মাধ্যমের বই কেন এল না তা নিয়ে খোঁঝ নিচ্ছি।” জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাধারানি মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলগুলিতে বই পাঠায় জেলা সর্বশিক্ষা মিশন। আমরা ওদের কাছে যত পরিমাণ বই প্রয়োজন তা লিখিত ভাবে জানিয়েও দিয়েছি। কিন্তু কেন বই আসছে না জানি না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

prasanta pal purulia book
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE