ফের কি কাছাকাছি আসছে দু’দল? ছবি: পিটিআই।
বহু দিনের একটা সম্পর্ক। অনেক উত্থান-পতনের সাক্ষীও বটে। জাতীয় রাজনীতির সাম্প্রতিকতম সমীকরণ বলছে, সে সম্পর্ক আবার একটা নতুন বাঁকে।
ফিরে যেতে হচ্ছে ২০০৮ সালে। প্রকাশ কারাতদের নেতৃত্বধীন বাম ব্রিগেড সমর্থন প্রত্যাহার করেছিল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের উপর থেকে। সংসদে অনাস্থার মুখে পড়তে হয়েছিল মনমোহন সিংহ সরকারকে। বাম-কংগ্রেসের সেই ছাড়াছাড়ি দ্রুত পরস্পরের কাছাকাছি এনে দিয়েছিল সনিয়া গাঁধী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কংগ্রেস-তৃণমূলের সেই মৈত্রী বিভিন্ন নেতিতে জর্জরিত বাংলার তদানীন্তন বাম সরকারকে আচমকা এক গলা জলে ঠেলে দিয়েছিল। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকারের জন্য ধাক্কা আসতে শুরু করেছিল দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দ থেকে। বাম নেতাদের অনেকেই আজও বিশ্বাস করেন, কংগ্রেসের সঙ্গ ত্যাগ করার সেই সিদ্ধান্ত ২০১১-র ভরাডুবির অন্যতম কারণ। হুবহু এক রকম না হলেও, কংগ্রেস, তৃণমূল ও বামেদের আজকের অবস্থান আবার অনেকটা মিলে যাচ্ছে ২০০৮-এর সেই বিন্যাসের সঙ্গে।
দেশজোড়া নোট সঙ্কটের প্রেক্ষিতে বিরোধী পক্ষে ঐক্যের একটা ছবি দেখা যাচ্ছিল। সে ছবি আবার যেন কিয়ৎ ফিকে হওয়ার পথে। আশু রণকৌশল স্থির করতে গোটা বিরোধী পক্ষকে বৈঠকে ডেকেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বাগ্রে সাড়া দিয়েছেন সে ডাকে, পৌঁছে গিয়েছেন রাজধানীতে। তবে বিরোধী ঐক্যের ছবিটা যে তাতে সম্পূর্ণতা পাচ্ছে, তেমন নয়। নীতীশ কুমার, শরদ পওয়ার, মায়াবতীরা কংগ্রেসের হাত শক্ত করতে রাজি নন। বঙ্কিম বার্তা এল বাম শিবির থেকেও। সীতারাম ইয়েচুরি সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেসের ডাকা বৈঠকে নেই তাঁর দল।
জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ ঠিক কী আকার নেবে, সে পূর্বাভাস এখনই দেওয়া অবান্তর। তবে অদ্ভুত এক সমাপতন বা সাদৃশ্যের চিত্রকল্প ভেসে উঠছে ঘটনার প্রবাহে। আবার যেন কংগ্রেসের হাত ছাড়ার পথে বামেরা। আবার যেন সনিয়ার হাত ধরার পথে মমতা। সেই ২০০৮-এর পুনরাবৃত্তি যেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি আবার কোনও রাজনৈতিক বাঁকের মুখে তা হলে? বিরোধী শিবির জমাট রাখতে দৃঢ় অবস্থান তাঁর এখনও পর্যন্ত। এই অবস্থান কি ২০১৯ এবং পরবর্তী বছরগুলিতে সর্বভারতীয় রাজনীতির আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনও আসনে উত্তরণ ঘটাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? পূর্বাভাস এখনই অনুচিত। কিন্তু সূচকগুলো তেমনই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy