প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসার অভাবে যিনি প্রিয়জনকে হারাইয়াছেন, তাঁহার আক্ষেপ কখনও প্রশমিত হয় না। কেহ আজীবন নিজের অক্ষমতাকে দুষিতে থাকেন, কেহ মন্দ কপালকে, কেহ বা ডাক্তারকে। এ বার স্পষ্ট হইল, দুষিতে হইবে সরকারের ব্যর্থতাকে। একটি আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় প্রকাশ, ভারতে অচিকিৎসায় মৃত্যু হয় বৎসরে অন্তত আট লক্ষ আটত্রিশ হাজার ব্যক্তির। আর হাসপাতালের দ্বারস্থ হইবার পরেও কম চিকিৎসায়, মন্দ চিকিৎসায় প্রাণ হারাইতেছেন আরও অন্তত ষোলো লক্ষ। অর্থাৎ ভারতে প্রতি বৎসর তেইশ লক্ষেরও অধিক মৃত্যু ঘটিতেছে চিকিৎসা পরিষেবার অপ্রতুলতা এবং অক্ষমতায়। অচিকিৎসা বা অপচিকিৎসায় মৃত্যুর হার ভারতে এক লক্ষ মানুষে একশো বাইশ। চিনে এই হার এক লক্ষে ছেচল্লিশ, বাংলাদেশে সাতান্ন, তাইল্যান্ডে বত্রিশ। এই তথ্য লজ্জাজনক, কিন্তু বিস্ময়কর নহে। এই প্রথম সারা বিশ্বে অচিকিৎসা বা অল্প-চিকিৎসায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান সংগৃহীত হইল। তাহাতে দক্ষিণ এশিয়ার স্থান পশ্চাতে। উপমহাদেশের দেশগুলির মধ্যেও মানব উন্নয়নের অধিকাংশ সূচকেই শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানের পশ্চাতে ভারত। সুতরাং নেতারা যতই ভারতকে এশিয়া তথা দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠার আস্ফালন করুন, ভারতের নাগরিক রহিয়াছেন অনেক পশ্চাতে। আফ্রিকার দরিদ্রতম দেশগুলির দিকে তাকাইয়া সান্ত্বনা খুঁজিবার প্রয়োজন নাই। বরং প্রশ্ন করা দরকার, দরিদ্রের চিকিৎসার ব্যবস্থা বাংলাদেশ করিতে পারিলে, ভারত পারে না কেন?
একটি উত্তর এই যে, ভারতে মানব উন্নয়নের ও সমাজ সুরক্ষার প্রকল্পগুলি লইয়া বাগাড়ম্বর যত হয়, কাজ তত হয় না। ঘোষণার ঘটাপটায় নেতারা এত সময় ব্যয় করিয়া ফেলেন, যে প্রকল্পের মূল্যায়নের সময় খুঁজিয়া পান না। ভারতে যত চিকিৎসক প্রয়োজন, তত নাই। নার্স বা চিকিৎসাকর্মীও যথেষ্ট নাই। যত রোগী তত শয্যা নাই। সমস্যাগুলি কাহারও অজানা নহে, কিন্তু মেডিক্যাল কলেজের সংখ্যা বাড়াইয়া যথেষ্ট চিকিৎসক তৈরি করিতে, যথেষ্ট প্রশিক্ষিত কর্মী তৈরি করিতে যে উদ্যোগ প্রয়োজন, তাহা চোখে পড়ে নাই। ফলে গ্রামাঞ্চলে রোগীদের একটি বড় অংশ ডিগ্রিহীন চিকিৎসকের ভরসায় দিন কাটাইতেছেন। অপ্রশিক্ষিত চিকিৎসকেরা রোগীর উপকার করিতেছেন না কি অপকার, সে বিতর্কে গিয়া লাভ নাই। এটুকু বলিলেই যথেষ্ট যে, তাঁহাদের উপস্থিতি সত্ত্বেও প্রতি দিন মন্দ চিকিৎসায় চার হাজার তিন শত লোকের মৃত্যু হইতেছে।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের সমাধান স্বাস্থ্যবিমা। জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মিশনের অধীনে দশ কোটি দরিদ্র পরিবার বিমার সুবিধা পাইবে। হাসপাতালে পাঁচ লক্ষ টাকা অবধি চিকিৎসা বিনামূল্যে মিলিবে। ইহা সুখবর, কিন্তু যদি সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালে যথেষ্ট চিকিৎসক না থাকে, পরিকাঠামো ও প্রশিক্ষণের অভাব থাকে, টাকা কি সেই শূন্যতা পূরণ করিবে? প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির অবস্থা যে কত করুণ, কেন্দ্রই তাহা স্বীকার করিয়াছে। বিমার বি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy