Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

পক্ষিরাজ ঘোড়া যখন নেই, তখন সে অলীক গল্প শোনানো কেন? সত্যিই, সে যদি স্কুলে গিয়ে ‘তোমার প্রিয় প্রাণী’ রচনায় পক্ষিরাজের কথা লিখে আসে?

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:৩৩
Share: Save:

সান্তার রূপকথা

অনেক বাড়িতে এখন বাংলা রূপকথার গল্প শোনানোর চল উঠে গিয়েছে, কারণ অভিভাবকরা মনে করছেন, এ সব রাক্ষস-খোক্কস-ডাইনি বুড়ির গাঁজাখুরি শোনালে ছোটদের মনে মন্দ প্রভাব পড়তে পারে। পক্ষিরাজ ঘোড়া যখন নেই, তখন সে অলীক গল্প শোনানো কেন? সত্যিই, সে যদি স্কুলে গিয়ে ‘তোমার প্রিয় প্রাণী’ রচনায় পক্ষিরাজের কথা লিখে আসে?

অথচ এই বাবা-মায়েরাই সন্তানদের অবাধে কার্টুন দেখতে দিচ্ছেন এবং সেখানে উদ্ভট প্রাণীদের মেলা বসে গিয়েছে, হ্যারি পটার পড়াচ্ছেন দেখাচ্ছেন শোনাচ্ছেন এবং সেখানে গাঁজাখুরির শেষ নেই।

সবচেয়ে বড় কথা, এঁরা বড়দিন আসতে না আসতে বাচ্চাদের বোঝাচ্ছেন, সান্তা ক্লস আসবেন এবং তাদের বালিশের পাশে খেলনা রেখে যাবেন। আদিখ্যেতা করে বলছেন, সান্তার কাছে কী কী চাও, তার লিস্ট করো। এই যে একটা মিথ্যে গল্প শেখানো হচ্ছে, একটা কাল্পনিক চরিত্রকে সত্যি বলে প্রচার করা হচ্ছে, তার বেলায় কোনও মন্দ প্রভাব পড়ছে না? বিশেষ করে যখন
বাচ্চাটা এক দিন না এক দিন জানতে পারবে, সান্তা বলে কেউ নেই এবং তার বাবা-মা এত দিন মিথ্যে বলেছেন? তখন তার মনে হতে পারে না কি, তা হলে মা-বাবা হয়তো বহু ক্ষেত্রেই মিথ্যেবাদী!

রূপকথা পড়া বা শোনার সময় তবু তো বলে দেওয়া হয়, এগুলো কাল্পনিক। সিরিয়াস মুখে তো গাঁজাখুরি প্রচার করা হয় না!

কল্যাণ মজুমদার

টালিগঞ্জ

সমুদ্রবিমান

কৃষ্ণা বসুর (‘যেন সি-প্লেন আজব বস্তু...’, ১৬-১২) লেখা পড়ে হাওড়া জেলার বালি বিমানবন্দরের কথা মনে পড়ে গেল। এটিও ১৯৪৬-৪৭ সালের কথা। তখন বালি উইলিংডন ব্রিজের (এখন বিবেকানন্দ ব্রিজ) মাথা টপকে বিওএসি-র যাত্রিবাহী বড় বিমান গঙ্গাবক্ষে নামত, দক্ষিণেশ্বর-উত্তরপাড়ার মাঝামাঝি জায়গায়। ছোটবেলায় সেই বিমান নামতে ও গঙ্গায় দৌড় দিয়ে বিমান উঠতে দেখেছি। এগুলো ছিল বড় সমুদ্রবিমান। লেখক লিখিত বিমানের সঙ্গে সম্ভবত এই সার্ভিসের কোনও সম্পর্ক ছিল না।

রঞ্জিতকুমার দাস

বালি, হাওড়া

রোজ আতঙ্ক

আর যে সহ্য হচ্ছে না! সকাল হলেই এক আতঙ্ক গ্রাস করে, এই আসছে সে আবার নতুন খবর নিয়ে। পাতায় পাতায় শুধু খুন, ধর্ষণ, হানাহানি, মারামারি, কাটাকাটি, অ্যাক্সিডেন্ট, রক্ত আর রক্ত। খবরের কাগজ এই খবরগুলো বিস্তারিত করে ছাপছে। এ দিকে শয়তানরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এত যে ঘটনা ঘটছে, এগুলোর কি কোনও শাস্তি হয় না?

যদি কোনও ঘটনায় কোনও শাস্তি হয়, কেন কাগজগুলো সেই কথা বিস্তারিত ছাপে না? তা যথেষ্ট ‘মুখরোচক’ নয় বলেই কি?
মনে হয় ঘটনার বর্ণনার থেকে শাস্তির কথা বেশি ছাপলে, শয়তানরা একটু হলেও ভয় পাবে। সমাজের প্রতি সেই দায়বদ্ধতা সংবাদপত্রের থাকা উচিত।

সুজাতা চৌধুরী

উদয়নপল্লি, বোলপুর, বীরভূম

স্বাদের গুড়

মরশুমের প্রথম নলেন গুড় খেলাম। একেবারে টাটকা। কিন্তু, নলেন গুড়ের সেই পরিচিত স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ গেল কোথায়? রহস্য উদ্ঘাটনে এক সকালে পৌঁছে গেলাম পরিচিত এক শিউলি ভাইয়ের বাড়ি। বড় সালতিতে খেজুর রস মারার গন্ধে চার পাশ ম-ম করছে। দু’চার কথার পরে কারণটা জানতে চাইলাম। শিউলি ভাইটি সলজ্জ হেসে বলল, ‘দেশে খেজুর গাছ কমে যাচ্ছে। পরিবেশের কারণে রস ও কমছে। চাহিদা মেটাতে আর লাভ বাড়াতে অনেকে চিনি ঢালছে। বাজারে চিনির দাম ৪৫ আর গুড়ের দাম ৬০/৬৫।’ বুঝলাম, স্বাদের গুড় চিনিতে খাচ্ছে।

প্রণবকুমার মাটিয়া

পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

গুজরাত মডেল

শিবাজীপ্রতিম বসুর লেখায় (‘গুজরাত মডেলের কেন্দ্রটিই একটু টাল খেয়ে গেল যে’, ১৯-১২) দেখলাম, ‘জো জিতা ওহি সিকন্দর’ কথাটাও যেন মাঝে মধ্যে খাটো হয়ে দাঁড়ায়। একটু নয়, বেশ টাল খেল গুজরাত মডেল। কংগ্রেসের সভাপতি পদে আসীন হয়ে রাহুল গাঁধীর কাজটি যে বেশ কঠিন তা বলা যায়। কিন্তু এই প্রথম তিনি রাজনীতির ময়দানে নেমে প্রতিপক্ষের দুর্বল জায়গাটা ঠিকঠাক ধরে ফেলেছেন। জিএসটি, নোটবন্দি যে আমজনতার উপর কতখানি প্রভাব ফেলেছে, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল গ্রামীণ গুজরাত।

জাতপাতের রাজনীতি ও উন্নয়নের মিথ্যা ফানুস যে সর্বদা ভোট-বৈতরণি পার করতে পারবে না, সে ইঙ্গিত মোদীজিকে দিল এই জনাদেশ। বিজেপি ভবিষ্যতে নিশ্চয় এখান থেকে শিক্ষা নেবে।

আহমেদ পটেল কংগ্রেসের এই হারের জন্য নিচুতলার কর্মীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন! কিন্তু মাঠে নেমে আগেই হেরে বসে থাকা উপরতলায় কংগ্রেস কর্মীদের দোষ কোনও অংশে কম নয়। সে দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।

গুজরাত মোদীজির কাছে সত্যিই মূল্যবান ছিল। কারণ এত দিন তিনি সারা দেশে গুজরাত মডেলকে সুচারু ভাবে ফেরি করে গেছেন। এক এক করে উনিশটি রাজ্য গৈরিক রঙে রঙিন। তাও এই ফল স্বভাবত মোদীজিকে স্বস্তিতে থাকতে দেবে না। ‘আওরঙ্গজেব’ ইতিহাস থেকে হঠাৎ করে বাস্তবে নেমে এসেছেন এই নির্বাচনে! মেরুকরণ যে কতটা জরুরি ছিল বিজেপির কাছে, তা বিরোধীরা বেশ বুঝতে পেরেছে!

ধন্যবাদ রাহুল গাঁধীকে, তিনি বয়সে তরুণ হলেও কাদা ছোড়াছুড়ির এই রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছেন। রাহুলের বরং ভারতে বসে ভারতীয় রাজনীতিটা মন দিয়ে করা উচিত। বঞ্চিত মানুষের না-পাওয়ার দিকগুলি ঠিকঠাক তুলে ধরতে পারলে, তিনি অনেক দূর যাবেন।

ভাস্কর দেবনাথ

বহরমপুর

দিঘা

দিঘা ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে সৈকত উৎসবের খবর পড়ে সত্তর দশকের স্মৃতি ফিরে এল। প্রতি বছরই প্রায় শীতের সময় দিঘা যেতাম। সমুদ্রের গর্জন, ঝাউবনের মধ্য দিয়ে বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দ, নির্জন সমুদ্র সৈকত এখনও অনুভূতিতে স্পষ্ট। এখন শীতকালে হেলিকপ্টার, বেলুন, ডিজে, কার্নিভাল, মেলা— এ সবের ভিড়ে সেই পুরনো দিঘাকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। মানুষের রুচি
ও পছন্দ অনুসারেই পরিবর্তন আসে। তবে আমার মনে হয়, বহু মানুষই সেই হারানো দিঘার জন্য দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন।

নির্মাল্য মণ্ডল

কলকাতা-৫২

ঠাকুর সেলফি

গত ৯ ডিসেম্বর মা সারদার জন্মতিথি উৎসবে বেলুড় মঠে গিয়েছিলাম। বড় বড় করে নোটিস বোর্ডে ‘ছবি তোলা নিষিদ্ধ’ লেখা থাকা সত্ত্বেও কিছু মহিলা-পুরুষকে দেখলাম, তাঁরা সমানে ও প্রবল উৎসাহে ছবি, সেলফি তুলে চলেছেন। নেশা এতটাই তীব্র যে, পারলে বোধহয় তাঁরা ঠাকুর, মা, স্বামীজির প্রতিমূর্তির সঙ্গেও সেলফি তোলেন!

অরূপরতন আইচ

কোন্নগর, হুগলি

পদ্মাবতী

‘পদ্মাবতীর জন্মভূমিতে’ (রবিবাসরীয়, ১০-১২) শীর্ষক প্রবন্ধে মহম্মদ জায়সি রচিত কাব্যটির ঠিক নাম হল ‘পদুমাবৎ’। এই কাব্যই সৈয়দ আলাওল অনুবাদ করে ‘পদ্মাবতী’ নামকরণ করেছিলেন।

অরূপ রতনদার

টাকি, বসিরহাট

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Letters To Editor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE