Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

আজও এ দেশের পাঁচ বছরের নীচে ৪২.৫% শিশু অপুষ্টির শিকার এবং গ্লোবাল হাঙ্গার সূচক-ক্রমে আমাদের অবস্থান পিছনের সারিতে।

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:১৬
Share: Save:

খাবারেও আধার!

মিড-ডে মিলে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক হওয়া ও কেন্দ্রের এই ফরমানে রাজ্য সরকারের সম্মতি জ্ঞাপন বিস্ময়কর (২৭-১২)। দরিদ্র পরিবারের সন্তানের জন্য দু’মুঠো খাবারের সংস্থান করে তাদের স্কুলমুখী করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালের ১৫ অগস্ট মিড-ডে মিলের সূচনা। স্কুলছুটের হার কমানো ও অপ্রতুল হলেও শিশুদের পুষ্টির ব্যবস্থা সৃষ্টিকারী এই কার্যক্রমে এক উল্লেখযোগ্য সামাজিক বিপ্লব সম্ভব হয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। প্রতীচী ট্রাস্টের রিপোর্টেও এর সদর্থক ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। পাশাপাশি, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে এই প্রকল্পে গ্রামে কর্মসংস্থানও সৃষ্টি করা সম্ভব হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বিরূপ মনোভাব সত্ত্বেও (পড়াব, না রান্না, খাবারের বিলি-বন্দোবস্ত করব?) অধিকাংশ প্রাথমিক শিক্ষক এই বিড়ম্বনা হাসিমুখে স্বীকার করে নিয়েছেন।

তা সত্ত্বেও আজও এ দেশের পাঁচ বছরের নীচে ৪২.৫% শিশু অপুষ্টির শিকার এবং গ্লোবাল হাঙ্গার সূচক-ক্রমে আমাদের অবস্থান পিছনের সারিতে। মাত্র মাথাপিছু ৪.১৩ টাকায় নিম্ন প্রাথমিকে ১০০ গ্রাম ভাত (সঙ্গে ডাল/সবজি বা ডিম) ও ৬.১৮ টাকায় উচ্চ প্রাথমিকে ১৫০ গ্রাম ভাতের যে ব্যবস্থা করা যায় না, তা সরকারি কর্তাব্যক্তিরা ভালমত জানেন। তাই বাধ্য হয়ে মাস্টারমশাইদের সংখ্যার কারচুপির আশ্রয় নিতে হয়। আধার নিয়ে কড়াকড়ি করার আগে তাই বাস্তব অবস্থা ভেবে দেখা জরুরি।

দিন-আনি-দিন-খাই পরিবারের কাছে সুষ্ঠু ভাবে আধার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। আধার থাকায় একটি শিশু থালা হাতে স্কুলের আঙিনায় পৌঁছে যাবে, আর তার বন্ধু কার্ড না থাকায় ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকবে— এ দৃশ্য চূড়ান্ত অমানবিক। সব শিশুর হাতে আধার পৌঁছনো না পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত মুলতুবি থাক। অপচয় রোধ করতে, প্রকৃত ছাত্রসংখ্যা নির্ণয় করতে অন্য কোনও ব্যবস্থা হোক।

সরিৎশেখর দাস চন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

স্বেচ্ছামৃত্যু

‘এ বার এসো’ নিবন্ধ (২১-১২), ‘কেন স্বেচ্ছামৃত্যু (২৭-১২) চিঠি পড়লাম। স্বেচ্ছামৃত্যু পশ্চিমের অনেক দেশে আইনসিদ্ধ ও প্রচলিত। ভারতে মিনু মাসানি প্রথম এর পক্ষে আন্দোলন শুরু করেন। বছর দশেক আগে কেরল হাই কোর্ট দুই শিক্ষকের ইচ্ছামৃত্যুর‍ আবেদন নাকচ করে এক কাল্পনিক কারণে। কোর্টের বক্তব্য ছিল, ঈশ্বর মানুষের জন্মদাতা, তাই একমাত্র তাঁরই অধিকার আছে মানুষের মৃত্যু ঘটানোর।

বাসুদেব দত্ত ই-মেল মারফত

ছাড়াও, ছাড়াই

‘আধার ছাড়াও দিতে হবে তথ্য’ (২৯-১২) এই শিরোনামটি দেখে মনে হল, কোনও বিষয়ে আধার ছাড়াও অন্য তথ্য চাওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, আধার দিলেই চলবে না, অন্য তথ্যও দিতে হবে৷ পুরো খবরটা পড়ে জানা গেল, ব্যাপারটা ঠিক উলটো। তথ্য জানতে চাইলে আধার লাগবে না। অনেক ব্যস্ত মানুষ শুধু হেডিংয়েই চোখ বুলিয়ে থাকেন। তাই এ রকম বিভ্রান্তিকর হেডিং কাম্য নয়৷ ‘ছাড়াও’-এর বদলে ‘ছাড়াই’ লিখলে, বিভ্রান্তি হত না।

চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা-১৫০

পাসপোর্ট কেন্দ্র

রুবি হাসপাতাল সংলগ্ন পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রে যেতে হয়েছিল। রুবির পিছনটায় গিয়ে বাইরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রায় ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করতে হল। খুব ভিড়, উৎকট মনুষ্য-বিষ্ঠার গন্ধময় পরিবেশ। একটি আন্তর্জাতিক ছাড়পত্রের অফিসের সামনের এই চেহারা দেখলে বিদেশিরা কী ভাববে?

বিপ্লব বিশ্বাস কলকাতা-৫৯

চা খাওয়া

‘চা খাব কিসে’ চিঠিতে (২৭-১২) লেখক ফিরে যেতে চেয়েছেন কাচের/মাটির/চিনা মাটির পাত্রে। কিন্তু তাতেও কি স্বস্তি আছে? স্বচক্ষে দেখেছি কাচের পাত্রগুলিকে একসঙ্গে দুটি জল রাখা পাত্রে পর পর চুবিয়ে নিতে। ওতেই ধোওয়া হয়ে গেল! আর মাটির ভাঁড় ফেলতে অনেক জায়গায় একটা বড় পাত্র দেওয়া হয়। সেগুলোই আবার ফেরত আসে কি না, কে বলতে পারে!

সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায় আসানসোল-৫

এমনিতে অন্য

ঝাড়গ্রাম জেলার জনৈক সিপিএম কর্মীর স্বীকারোক্তি, ‘এমনিতে আমি সিপিএম–ই, কিন্তু এখন বিজেপি করছি৷ শুধু তৃণমূল হঠানোর জন্য’ (‘সবুজের অভিযান রুখতে...’, ৩১-১২)। বাস্তবে এটি শুধু জঙ্গলমহলের নয়, সারা রাজ্যেরই চিত্র। রাজ্যে বিজেপির যতটুকু প্রসার দেখা যাচ্ছে, তার একটা ভাল অংশই সিপিএমের কর্মী–সমর্থক–আঞ্চলিক নেতা।

চৌত্রিশ বছর সরকারে থাকার সুবাদে সিপিএম নেতা–কর্মীরা ক্ষমতায় এমন অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়াটা কিছুতেই মানতে পারেননি। ফলে সংগঠনে মারাত্মক ধস নামল। নেতারা তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের রাস্তায় না গিয়ে, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করলেন। ম্রিয়মাণ কর্মীদের খানিকটা চাঙ্গা করতে বোঝালেন, এই পথেই তাঁরা সরকারে ফিরবেন। প্রচারে সংবাদমাধ্যমের একাংশও গলা মেলাল। কিন্তু দল গো–হারান হারল। কর্মীদের মনোবল আরও তলানিতে চলে গেল। কিন্তু তাঁদের মধ্যে তৃণমূল-বিরোধী মনোভাব থেকেই গেল। সেই মনোভাব থেকেই তাঁরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপির দিকে ঝুঁকলেন। একটি বামপন্থী দলের কর্মী হয়েও, একটি চরম দক্ষিণপন্থী দলের দিকে ঝুঁকতে তাঁদের এতটুকুও আটকাল না! কারণ নামে বামপন্থী হলেও, এঁরা সকলেই সরকারে থাকা একটি ক্ষমতাভোগী দলের কর্মী–সমর্থক ছিলেন মাত্র।

শিলাই মণ্ডল গড়বেতা, পশ্চিম মেদিনীপুর

ইকো পার্ক

নিউ টাউনের ইকো পার্ক বিনোদনের এক আকর্ষণীয় জায়গা, কিন্তু মুশকিল হল, পার্কের ভিতরে অনেকেই সাইকেল চালাচ্ছে। ছোট ছেলেমেয়েরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে দুরন্ত বেগে সাইকেল চালাতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছে। সম্প্রতি আমার আট বছরের নাতনি পরিবারের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিল, এমন সময় আর একটু বেশি বয়সের একটি ছেলে সাইকেল চালিয়ে তাকে ধাক্কা মেরে চলে যায়। নাতনির কানের উপরে চোট লাগে, সেই সঙ্গে রক্তপাত। পার্কের ভিতরে সাইকেল চালানো বন্ধ হওয়া উচিত, কচিকাঁচাদের ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের স্বার্থে। আর, লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোয়ের শেষে, ওখান থেকে ফেরার জন্য বাস পাওয়া এক দুষ্কর ব্যাপার। যেগুলো পাওয়া যায়, প্রচণ্ড ভিড়। অ্যাপ-ক্যাব পাওয়াও কঠিন, কারণ ট্যাক্সি দাঁড়ানোর কোনও নির্দিষ্ট জায়গা নেই, ফলে চালকরা দিশা পায় না, কোথায় যাত্রী অপেক্ষা করছেন।

কল্যাণ চক্রবর্তী কলকাতা-৯১

হরিণকে চিপস

কিছু দিন আগে ইকো পার্কের ধারে ডিয়ার পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলাম। হরিণের খাঁচার পাশে এক পরিবার খাওয়াদাওয়া করছিল। হঠাৎ সেই পরিবারের ছোট্ট ছেলেটি খাঁচার ভিতর হাত ঢুকিয়ে তার ঝাল চিপসের প্যাকেট থেকে একটি পটেটো চিপ হরিণকে খাইয়ে দিল। আমি তাকে বারণ করতে তার মা খুবই রেগে গেলেন। এবং তাকে উৎসাহ দিতে লাগলেন, আরও দু’একটা দিতে। আমার ভেবে খুব খারাপ লাগল, কিছু মানুষের বদ-খেয়ালের ঠেলায় একটা নিরীহ প্রাণী কতটা কষ্ট পাবে।

সৌরদীপ দাস কলকাতা-৩৩

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE