Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: অক্ষয় ঐতিহ্য

‘বালি হাউস’-এর ঠিক দক্ষিণে এই জায়গাটি নিয়ে বছর ১৫ আগে আপনাদের পত্রিকায় বেশ কয়েক বার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।

শেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

বর্তমান বছরের ১৫ জুলাই বাংলার নবজাগরণের অন্যতম স্থপতি অক্ষয়কুমার দত্ত মহাশয়ের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী সূচিত হবে। এই বিষয়ে পত্রিকায় লেখা নিশ্চয়ই প্রকাশিত হবে। আমি আপনাদের ও বালি পুর-কর্তৃপক্ষের বিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই তাঁর ‘শোভনোদ্যান’ বিষয়ে।

‘বালি হাউস’-এর ঠিক দক্ষিণে এই জায়গাটি নিয়ে বছর ১৫ আগে আপনাদের পত্রিকায় বেশ কয়েক বার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। অক্ষয়কুমারের ২০০ বছরের জন্মদিন উপলক্ষে একটি স্থায়ী স্মারক এবং ছোট্ট ‘উদ্ভিদবৈচিত্র প্রদর্শশালা’ গড়ে তুললে অক্ষয়কুমারের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।

উল্লেখ থাক যে, এই ‘শোভনোদ্যান’-এ তিনি উদ্ভিদবিদ্যার প্রত্যক্ষ জ্ঞান আহরণের জন্য দেশি-বিদেশি প্রায় ৮০ রকমের উদ্ভিদ-লতা-গুল্ম ইত্যাদি রোপন করিয়েছিলেন।

হাওড়া থেকে ১৮৫৪ সালে রেল-চলাচল সূচিত হওয়ার কালে তিনি জনহিতার্থে ‘বাষ্পীয় রথারোহীদিগের প্রতি উপদেশ’ নামে একটি পুস্তিকাও মুদ্রণ ও প্রচার করেছিলেন। জাতিকে কুসংস্কারমুক্ত বিজ্ঞানচেতনা দিয়ে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন অক্ষয়কুমার।

আজকের ধর্মগোঁড়ামির মেঘাচ্ছন্ন দিনে তাঁকে স্মরণ করা খুবই দরকার, দেশকে অটুট রাখার স্বার্থে।

অরূপকুমার দাস

কলকাতা-৭৮

ব্যবহার

গত ১২-১ জীবনে প্রথম বার কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ত্বকের সমস্যা নিয়ে সাতসকালে হাজির হয়ে দেখলাম, নতুন ও পুরনো রোগীদের বিশাল লাইন। যদিও সকাল ন’টায় কাউন্টার খুলে আউটডোরে টিকিট বিলি করার কথা, তবুও শুরু হতে হতে প্রায় সাড়ে ন’টা হয়ে গেল। কিছু কিছু করে লোককে ভেতরে প্রবেশ করিয়ে আর এক প্রস্থ অপেক্ষার পালা। তখনও দু’টাকার বিনিময়ে টিকিট কাটার সুযোগ হয়নি। খবর নিতে জানা গেল, সব ডাক্তারবাবুরা এসে পৌঁছননি। তখন ১০টা বাজে। তাই অল্প অল্প করে রোগী ছাড়া হচ্ছে। মোটের ওপর ব্যবস্থাপনা ভালই। এ বার আমার মতো কিছু বয়স্ক নাগরিককে এগিয়ে নিয়ে টিকিট কাটার ব্যবস্থা করা হল। বলা হল ৬ নম্বর ঘরে যেতে। সেখানে প্রবীণ ও নবীন কিছু ডাক্তার দু’টি টেবিলে বসে একের পর এক রোগী দেখছিলেন। এক জন প্রবীণ ডাক্তারবাবুকে দেখলাম বেশ যত্নসহকারে রোগীদের আনুষঙ্গিক কোনও রোগ আছে কি না, জিজ্ঞেস করে এবং রোগীদের ভাল করে পর্যবেক্ষণ করে নিদান দিচ্ছেন। বেশ প্রীত হলাম। কে বলে, সরকারি হাসপাতালে সুচিকিৎসা হয় না? কিন্তু আমার বিধি বাম। এক জন সুরক্ষাকর্মী, কে কোন ডাক্তারবাবুর কাছে যাবেন তা নির্ধারণ করছেন, কার কাছে রোগী দেখার জায়গা খালি আছে, সেই হিসাবে। আমার পালা পড়ল এক জন বোধ করি চল্লিশের আশেপাশে বয়স্ক ডাক্তারবাবুর কাছে। সেই অভিজ্ঞতার কথা বলার জন্যেই এই পত্রের অবতারণা। আমার ত্বকে একাধিক সমস্যা ছিল। একটু বলার পরেই উনি খসখস করে প্রেসক্রিপশন লিখতে শুরু করলেন। আমি আঙুলে একটা জায়গা দেখাতে যেতেই উনি ব্যঙ্গাত্মক ভঙ্গিতে বললেন, ‘‘আমি যা বলার বলে দিয়েছি। আপনি ব্যস্ত ছিলেন।’’ এর পর, পরবর্তী রোগী আসার নির্দেশ দিলেন। আমি কিছু বলারই সুযোগ পেলাম না। খুব বিখ্যাত দেবস্থানে যেমন এক মুহূর্তে দেবতা দর্শন সেরে পরবর্তী পুণ্যার্থীকে জায়গা করে দিতে হয়, এ অনেকটা সে রকমই। ফলস্বরূপ, আমার আঙুলের ব্যথা এবং সংক্রমণ বেড়ে গিয়েছে। অন্য ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছি। সে দিনের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে বুঝলাম, সবটাই পরিকাঠামোর অভাব নয়। বিভিন্ন পেশার মানুষরা যদি একটু মানবিক আর যত্নবান হন, তা হলে অনেক সমস্যার সমাধান আমাদের ব্যবহারেই সম্ভব।

তনয় রাউৎ

আগরপাড়া, উত্তর ২৪ পরগনা

অনভিজ্ঞতা

কংগ্রেস যদি পশ্চিমবঙ্গে সিপিএমের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়, তা হলে তৃণমূল–বিরোধী ভোট জোট ও বিজেপির মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে তৃণমূলকে ৪২টি আসন পেতে সহায়তা করবে। এই অনভিজ্ঞতাই কংগ্রেস ও বিজেপি–বিরোধী জোট বিজেপিকে পুনরায় দিল্লির মসনদে বসার পথ সুগম করবে।

বাংলায় সিপিএমের রাজনীতির ঝাঁজে কংগ্রেস দল রাহুলের নেতৃত্বে আবার ভূলুণ্ঠিত হতে চলেছে। কোনও প্রবীণ কংগ্রেস নেতাই রাজ্যে সিপিএমের সঙ্গে জোট চান না। রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি প্রবীণ নেতা সোমেন মিত্র সিপিএমের অতীত জানেন। সিপিএম অতীতে কংগ্রেসিদের ওপর রাজ্যের নানা জেলায় যে ভাবে অত্যাচার চালিয়েছে, সেই অতীত কংগ্রেসিরা কখনও ভুলতে পারবেন না। রাহুল গাঁধী সিপিএমের অতীত রাজনীতি সম্পর্কে অবহিত নন। সে জন্য তিনি সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিচার করছেন। অতীতের বিধানসভা ও লোকসভার ফল তিনি ভুলে গেলেন কী করে? এটাই তাঁর অনভিজ্ঞতা। এই অনভিজ্ঞতার জন্যই গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহু দুর্নীতির অভিযোগ সত্ত্বেও জিততে পারেনি। এত সিবিআই, ইডি দিয়েও তৃণমূলকে আটকানো যায়নি। অতীত থেকে শিক্ষা না নিয়ে, রাহুল আবার ভুল সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন।

সিপিএম এখন রাজ্যে ব্রাত্য। তারা একটা ক্ষয়িষ্ণু রাজনৈতিক দল। বর্তমানে এই দলে কোনও প্রথম সারির নেতা নেই। আসার সম্ভাবনাও নেই। সেই দলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট সাধারণ কংগ্রেসিরা কিছুতেই মেনে নেবেন না। সুতরাং এ রাজ্যে কংগ্রেসের বেশির ভাগ ভোট যাবে তৃণমূলের বাক্সে। সারা দেশে স্বার্থান্বেষী জোটের ‌লাভের গুড় খাবে বিজেপি।

সুগত রায়মজুমদার

কলকাতা-১২২

শব্দদূষণ

আমি বিগত ৩২ বছর বাংলার বাইরে রয়েছি। এক রকমের প্রবাসী বাঙালি বলতে পারেন। বহু দিন পর একটানা দু’সপ্তাহ আমার নিজের বাড়ি মধ্যমগ্রামে রয়েছি। একটা জিনিস খুবই ব্যথা দিচ্ছে যে, রাস্তায় বা পাড়ায় পাড়ায় সারা দিন, কোনও না কোনও কারণে মাইক বেজে চলেছে। মধ্যমগ্রামের মেন রোডে গেলেও সার সার মাইক দুই দিক থেকে লাগানো রয়েছে। যে অনুষ্ঠানের প্রচার চলছে, সেটা যে কোথায় হচ্ছে, তা জনগণের জানার উপায় নেই। কিন্তু ওখানে যা হচ্ছে তার সরাসরি সম্প্রচার চলছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় কারও সঙ্গে কথা বলার উপায় নেই। কোনও দোকানে গিয়ে কিছু কিনতে গেলে, দোকানদারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কিছুই শোনা যায় না। আর এটা আমি লক্ষ করছি প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে। আমরা কি জানি না, শব্দদূষণও একটা দূষণ? একটু মানবিকতা দেখান। ভাল ভাল প্রোগ্রাম করুন, কিন্তু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখুন।

সুমন্ত ঘোষ

মধ্যমগ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা

অনাদৃত

সম্প্রতি কলকাতা দূরদর্শন প্রচারিত বাংলা সংবাদে বৈদ্যনাথ বসাক মহাশয়ের উপর একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন দেখানো হয়। বৈদ্যনাথবাবু এককালে বিখ্যাত প্রযোজক-পরিচালক রাজ কপূরের প্রযোজনায় হিন্দি ছবি ‘বুটপালিশ’-এ ক্যামেরাম্যানের কাজ করেছেন। এ ছাড়া উত্তমকুমার অভিনীত অনেক বাংলা ছায়াছবির ক্যামেরাম্যানের কাজ করেছেন। ছবিগুলি আজও সমাদৃত।

সেই বৈদ্যনাথ বসাক মহাশয়কে ৯৪ বছর বয়সে প্রায় দু’কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে খড়দহ রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে আরও অনেক অবহেলিত মানুষের সঙ্গে প্রতি দিন নিজের থালায় ভাত খেতে হয়। তাঁর পরিবারের অবস্থাও খুবই সঙ্গিন। একমাত্র পুত্র দিনমজুরের কাজ করেন, এবং পুত্রবধূ অন্যের বাড়িতে ঠিকা ঝি-র কাজ করে কিছু উপার্জন করেন। এক শিল্পীর এমন করুণ পরিণতি খুবই বেদনাদায়ক।

স্মৃতি শেখর মিত্র

মুরগাশোল, আসানসোল

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE