Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: ব্যাগ যাক ফোন থাক

শুধু একটি ফোনেই সব কাজ হয়ে যাবে। আজকালকার ছেলেমেয়েদের তাতে অনেক বেশি আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য ঘটবে।

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

বাচ্চাদের স্কুলব্যাগের ভার লাঘব করার জন্য অনেকে অনেক পরামর্শ দিচ্ছেন। আমার মনে হয়, প্রত্যেক ছাত্রকে একটি করে স্মার্টফোন দিয়ে দেওয়া হোক। সমস্ত বইয়ের ‘ই-সংস্করণ’ করা হোক। এবং খাতার পরিবর্তে ক্লাসওয়ার্ক ও হোমওয়ার্ক ইমেল ও হোয়াটসঅ্যাপে জমা নেওয়া হোক। তা হলে স্কুলে বই, ব্যাগ, খাতা, কলম, কিছুই নিয়ে যেতে হবে না। শুধু একটি ফোনেই সব কাজ হয়ে যাবে। আজকালকার ছেলেমেয়েদের তাতে অনেক বেশি আনন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য ঘটবে।

সোমনাথ মুখোপাধ্যায়

কলকাতা-২৬

ক্যাবের দাদাগিরি

দিন দিন অ্যাপ ক্যাবের দাদাগিরি বাড়ছে। যখন-তখন আকাশছোঁয়া ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু দিন আগেই সল্টলেক থেকে বারাসত যাওয়ার জন্য অ্যাপ ক্যাব বুক করলে ভাড়া দেখানো হয় ৩৯০ টাকা। বারাসত পৌঁছে, ড্রাইভার ভাড়া চেয়ে বসেন ৭৫০ টাকা। কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে উদ্ধত ভাবে উত্তর দেন, ‘‘অ্যাপে যে ভাড়াটা এখন দেখানো হয়েছে সেটাই দিতে হবে।’’

আর আছে ক্যানসেলেশনের ঝামেলা। পিক-আপ লোকেশন ও ডেস্টিনেশন সেট করে দাঁড়িয়ে থাকতে হল প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট। অবশেষে অ্যাপ ক্যাব এল। ডেস্টিনেশন সেট করা সত্ত্বেও, ‘কোথায় যাবেন’ প্রশ্ন করায়, উত্তর দিলাম হাওড়া। চালক বললেন, ‘‘আমি হাওড়ার দিকে যাব না।’’ চলে গেলেন। বাধ্য হয়ে ক্যানসেল করতে হল রাইডটা।

অ্যাপ-বাইক’ও হয়েছে এখন। আমার এক বন্ধু সল্টলেক থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার জন্য বুক করেছিলেন, কিন্তু তিনি ‘মোটা’ বলে তাঁকে নিয়ে উল্টোডাঙা যেতে অস্বীকার করেন ড্রাইভারটি।

চৈত্রী আদক

কলকাতা-৯৭

এত ভাবনা

হাওড়ায় থাকি। সল্টলেক থেকে কাজ করে রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বেরোতে হয়। তখন অ্যাপ ক্যাব বুক করি, তাতে ডেস্টিনেশন দেওয়া থাকে, তা ছাড়া চালককে প্রথমেই ফোন করে বলে দিই, কোথায় দাঁড়িয়ে আছি ও কোথায় যাব। চালক অপেক্ষা করতে বলেন, তার পর অনেকটা এসে, যখন প্রায় পৌঁছে গিয়েছেন, রাইড ক্যানসেল করে দেন। আবার ক্যাব বুক করি, আবার একই ঘটনা। প্রতি দিন এ ভাবে চার-পাঁচ বার ক্যানসেলেশনের শিকার হয়ে, তার পর একটা রাইড পাই। যেটা বুঝতে পারি না, যখন তাঁরা হাওড়ায় যাবেন না, তা হলে প্রথমে গন্তব্য জেনেই রাইডটা ক্যানসেল করে দেন না কেন। কেন অত ক্ষণ ভাবার দরকার হয়?

সুজিত মৈত্র

হাওড়া

যাদের জন্য

গত ১৩-৫ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অ্যাপ-ক্যাবে চেপে হরিনাভিতে যাচ্ছিলাম। কামালগাজির ব্রিজের কাছে পুলিশ রাস্তা আটকে দিল। তখন ফ্লাইওভার দিয়ে গাড়ি চৌহাটির রাস্তা দিয়ে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রত্যেকটি রাস্তার মুখে পুলিশ দাঁড়িয়ে। কোনও রাস্তা দিয়ে রাজপুর, হরিনাভি যাওয়া যাচ্ছে না। কারণ রাজপুরের কাছে কোনও জনসভায় নেতামন্ত্রীরা আসছেন। এক কিলোমিটার দূরের রাস্তায় পৌঁছনোর জন্য পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হবে। যে রাস্তায় যেতে দশ মিনিট লাগে সেখানে অনেক কষ্ট করে এক ঘণ্টা পরে পৌঁছলাম। অবাক লাগে, যাদের কাছে ভোট চাইতে আসছেন নেতারা, তাদেরই অসুবিধা সৃষ্টি করছেন।

প্রিয়দর্শিনী সেনগুপ্ত

কলকাতা-১৪৮

নিষ্ফল আবেদন

২৭ এপ্রিল, ২০০৪। সে সময়েও কেন্দ্রীয় সরকার ছিল বিজেপি-পরিচালিত। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ১২ মাহার রেজিমেন্টের সিপাহি ২১ বছরের সঞ্জয় সরকার জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে যুদ্ধে কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

ওই বছরের ১৩ মে, সে কথা জানিয়ে এবং দুঃখ প্রকাশ করে শহিদের বাবাকে হিন্দিতে লেখা চিঠিতে নর্দার্ন কমান্ডের জেনারেল অফিসার কমান্ডার-ইন-চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরি প্রসাদ জানান, ‘‘...আপনাকে এই আশ্বাস দিচ্ছি যে, আপনাদের যথাসম্ভব সহায়তা দেওয়া হবে।’’

৭ অক্টোবর ২০০৮-এ, শহিদের দাদা হিমাংশু সরকারের বায়োডেটা দিয়ে তার জন্য চাকরি প্রার্থনা করে ১২ মাহার রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়। মালদহ জেলা সৈনিক বোর্ডের সচিবও ওই বিষয়ে আবার চিঠি পাঠান ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯। কোনও জবাব পাওয়া যায়নি।

ইতিমধ্যে প্রয়াত হন শহিদের বাবা। শহিদের মা ২০১৩ সালে তাঁর সন্তান হিমাংশুর চাকরির জন্য আবার আবেদন করেন। উত্তরে সৈনিক কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা মালদহ রেলওয়ে ডিভিশনাল ম্যানেজারের কাছে চাকরির দরখাস্ত পাঠিয়ে দিয়েছেন এবং পরে তাঁকে স্মরণ করিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এ সব কথা আমি জানতে পারি মালদহ জেলার বৈষ্ণবনগরের বিজেপি বিধায়ক স্বাধীন সরকারের কাছ থেকে। তাঁর কথামতো, আমি প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে ইমেল পাঠাই। পর্রীকরের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়, তিনি আমাদের আশ্বাস দেন, চাকরি হবে।

কিছু দিন পর পর্রীকর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ ত্যাগ করে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১৭-র মার্চ মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের এক সেকশন অফিসার হিমাংশুকে চিঠি দিয়ে জানান, বিষয়টি ১২ মাহার রেজিমেন্টের বলে, হিমাংশুর দরখাস্ত সেখানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে লেখা আমার চিঠির প্রতিলিপি রেলমন্ত্রীকে পাঠিয়েছিলাম। ফরওয়ার্ড করেছিলেন স্বাধীন সরকার। সেই চিঠির জবাবে ৬ মে, ২০১৭-য় রেলের রাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রেলের নির্দেশ অনুসারে এমন ক্ষেত্রে কাউকে চাকরি দেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে প্রতিরক্ষামন্ত্রকের দ্বারস্থ হতে হবে।

সংবেদনশীল এই বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকারের এক বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে শাট্লকক-এর মতো ঘুরছে দেখে আমি স্বাধীনবাবুকে অনুরোধ করি, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে। উনি মোদীজিকে চিঠি লিখলেন। এ বার আশা করা গেল, একটা কিছু হবেই।

কিন্তু ৩০ অগস্ট, ২০১৭-র চিঠিতে মাহার রেজিমেন্টের প্রধান রেকর্ড অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস বি সিংহ, হিমাংশুকে জানিয়ে দিলেন, তাঁর চাকরির দরখাস্ত গ্রাহ্য হয়নি, কারণ তাঁর ভাই শহিদ হওয়ার ১২ বছরের ব্যাবধানে তা পাঠানো হয়েছে। এও জানালেন, সৈনিকের মৃত্যুর পাঁচ বছর পরে পাঠানো চাকরির দরখাস্ত গৃহীত হয় না।

দেশরক্ষায় সৈনিকদের অবদানকে হাতিয়ার করে মোদীজি লোকসভা নির্বাচনে প্রচার করেছেন। অথচ, এক শহিদের বিধবা বৃদ্ধা মায়ের কাতর আবেদন উপেক্ষিত হয়েছে। নিজের দলের বিধায়কের চিঠিও কাজে আসেনি।

সুভাষ চন্দ্র সরকার

প্রাক্তন সহ-সভাপতি, কিষাণ মোর্চা, রাজ্য বিজেপি, পশ্চিমবঙ্গ

সেই ইতিহাস

‘কাল কী হবে, আজ বলতে পারি না’ (১৫-৫) নিবন্ধ সম্পর্কে বলি, ১৯৯২-এ ‘প্রতিবেশীকে বাঁচাতে হবে’— এ কথা ‘আজানের সুরের মতোই’ মহল্লায় মহল্লায় পৌঁছে যাচ্ছিল পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী শাসক ও তাদের মহল্লায় মহল্লায় উপস্থিত পাড়া কমিটিগুলোর জন্য। সরকার ও পার্টি থেকে যথাক্রমে প্রশাসন ও ক্যাডারদের কাছে নির্দেশ ছিল, যে কোনও মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার। তাই কাজ করেছিল আজানের সুর। তাই কাজ করেছিল বেদমন্ত্র। এ ইতিহাস প্রতিবেদনটিতে উচ্চারিত হওয়া উচিত ছিল।

স্বপন মজুমদার

কলকাতা-১২৬

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE