সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের দুই মেয়ে শিবানী খট (বয়স ১৯) ও তার বোন এষা (১৪)-র ‘ব্লু সিগনাল’-এর ভাবনা সত্যিই প্রশংসনীয়। ভারতের ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণ কমাতে যা এক কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। কী এই ‘ব্লু সিগনাল’? দুই বোনের ভাবনা অনুযায়ী, প্রতিটি রাস্তার মোড়ে লাল-হলুদ-সবুজ সিগনালের পাশাপাশি নীল রঙের সিগনালও থাকবে। গাড়ি থামানোর জন্য লাল বাতি জ্বলে ওঠার ৫ সেকেন্ড পর এই নীল বাতি জ্বলে উঠবে। যার অর্থ, মোড়ে দাঁড়ানো সমস্ত গাড়ির স্টার্ট বন্ধ করে দিতে হবে। আবার সবুজ বাতি জ্বলে ওঠার ৫ সেকেন্ড আগে, নীল বাতি নিভে যাবে। এর ফলে বায়ুদূষণ অনেকাংশে কমে যাবে। ওই দুই বোনের ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই এবং আমাদের রাজ্যেও এই ভাবনাটি কার্যকর করা গেলে ভাল হয় বলে মনে করি।
শুভ্রদীপ বিশ্বাস বারাসত
শহিদ গায়িকা
সুজিষ্ণু মাহাতোর ‘কণ্ঠ ছাড়ো জোরে’ (রবিবাসরীয়, ১১-২) রচনাটি পড়ে, কিছু সংযোজন করতে এই চিঠি। তালিবানদের অমানবিক হুমকি, অত্যাচারের বিরুদ্ধে কয়েক জন মহিলা যে-সাহসিকতার সঙ্গে সংগ্রাম করছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সোরৌরি এবং ‘জোহরা’ব্যান্ড-এর কণ্ঠ যে-ভাবে তালিবানদের হুমকি ও অত্যাচারকে অগ্রাহ্য করে এগিয়ে যাচ্ছে, সে-রকমই এগিয়েযেতে চেয়েছিলেন আর এক মুসলিম মহিলা সংগীতশিল্পী। তাঁর নাম গাজালা জাভেদ।
‘পশতু’ ভাষায় ‘চিনি’ গান করতেন তিনি। বিয়ে হয় পেশোয়ারে। দুর্ভাগ্যের বিষয়, শিল্পীর শ্বশুরমশাই ছিলেন তালিবানপন্থী। গানকে ভালবেসে স্বামী-শ্বশুর ত্যাগ করে গাজালা ভাসিয়ে দেন শ্রোতা-সমুদ্রে তাঁর কণ্ঠ। অসাধারণ গান করতেন। জনসমর্থনও ছিল প্রচুর। ২০১২ সালের অগস্ট মাসের এক দিন, প্রকাশ্য দিবালোকে, ব্যস্ত-ভিড় রাস্তায় সুন্দরী ও প্রতিভাবান শিল্পী গাজালা ও তাঁর বাবাকে গুলি করে পালিয়ে যায় তালিবানরা। এই লেখাটিতে গাজালার প্রসঙ্গ থাকলে, ভাল হত।
বাঁধন চক্রবর্তী আগরতলা, ত্রিপুরা
বালি চুরি
যে হারে পুকুর এবং জলাজমি বুজিয়ে আবাসন নির্মাণের রমরমা ব্যবসা চলছে, তাতে নদীর সাদা বালির চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। মূলত গঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরে, অর্থাৎ হাওড়ার সন্নিহিত অঞ্চলে সাদা বালির ব্যবসা সর্বাধিক। এক দিকে সঠিক নজরদারির অভাবে বালি ব্যবসায়ীরা অপরিকল্পিত ভাবে কেবল নিজেদের সুবিধা মতো যত্রতত্র বালি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে, কোথাও নদী বুজে যাচ্ছে, কোথাও অধিক গভীরতার ফলে পাড় ধসে যাচ্ছে, আর নদী তীরবর্তী মানুষদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অন্য দিকে, কেটে নেওয়া বালি রাস্তার মাঝে ফেলেই চলছে রমরমা ব্যবসা। টাকার জোরে প্রশাসন, স্থানীয় সংগঠনকে মুঠোয় রেখে। প্রশাসন সতর্ক না হলে, এক দিন হয়তো মানুষের ক্ষোভের আগুন ভয়ানক আকার ধারণ করতে পারে, যা কোনও বালি দিয়েই নেভানো যাবে না।
স্বপনকুমার ঘোষ মধ্য ঝোড়হাট, হাওড়া
ডব্লিউবিসিএস
কয়েক দিন আগে আনন্দবাজার পত্রিকায় দেখলাম, একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আটকে গিয়েছে। আশা করা যায় শীঘ্রই মামলার নিষ্পত্তি হবে, এবং দীর্ঘ পড়াশোনা শেষে যোগ্যতম ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চয়ই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রশাসনে আমলা হিসাবে যোগ দেবেন। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জায়গায় ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞাসা করেছেন, পড়াশোনার শেষে কে কী হতে চায়— যার উত্তরে কেউ বলেছেন ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ডাক্তার, কেউ বা বিজ্ঞানী। শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তোমরা কেউ আইএএস বা ডব্লিউবিসিএস অফিসার হতে চাও না? অর্থাৎ ছাত্রছাত্রীদের তিনি সরকারি আমলার পেশায় আসার জন্য উৎসাহিত করছেন।
তা ছাড়া, পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন নতুন নতুন জেলা, নতুন মহকুমা ইত্যাদি হওয়ার জন্য আইএএস বা ডব্লিউবিসিএস অফিসারের প্রয়োজন এখন অনেক বেশি। আইএএস পরীক্ষা নেয় ইউপিএসসি, ডব্লিউবিসিএস নেয় পিএসসি। ইউপিএসসি-র কথা আমি জানি না, কিন্তু পিএসসি (পশ্চিমবঙ্গ)-র স্থবিরত্ব আমাকে অবাক করে।
ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষাটি তিন ধাপে হয়— প্রিলি, মেন্স, ইন্টারভিউ। প্রিলির রেজাল্ট মাস চারেকের মধ্যে বেরোলেও, মেন্স-এর রেজাল্ট পরীক্ষা দেওয়ার এক থেকে দেড় বছর পরে আশা করা যায়। এ বার, মেন্স যাঁরা উত্তীর্ণ হলেন, তাঁদের ইন্টারভিউ চলবে আরও এক বছর ধরে। এই শেষ ধাপে উত্তীর্ণরা অ্যাপয়েনমেন্ট লেটার পাওয়ার বছর দেড়-দুই বাদে ট্রেনিংয়ে যাবেন, অর্থাৎ এই বার তাঁদের বেতন চালু হল। প্রিলি থেকে চাকরি পাওয়ার পথটি ৩-৪ বছরে শেষ হবে।
যেখানে কিনা আইবিপিএস ব্যাংকের চাকরির ক্ষেত্রে একই রকম তিনটি ধাপ শেষ করে ৪ থেকে ৫ মাসে, যেখানে তাদের পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রটিও অনেক বড়— সর্বভারতীয়।
আমাদের রাজ্যের মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা, যাঁরা দিনরাত এক করে, সমস্ত রকম আনন্দ-উৎসব থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়ে, দিনে ষোলো-আঠারো ঘণ্টা পড়ছেন মাসের পর মাস, ভাল সরকারি আমলা হওয়ার আশায়, তাঁরা হতাশার শিকার হতে হতে তলিয়ে যাচ্ছেন দুঃস্বপ্নের অন্ধকারে।
আর সরকার হারাচ্ছে যোগ্য মেধাবী তরুণ আমলাদের।
ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার পুরো প্রক্রিয়াটি যাতে অন্তত এক বছরের মধ্যে শেষ হয়, তার ব্যবস্থা হোক।
মৌসুমী রায় আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান
অ্যাপ ক্যাব
কমলিকা চক্রবর্তীর অ্যাপ ক্যাব বিষয়ক চিঠিটি খুবই সময়োপযোগী (১৮-২)। এই শহরে হলুদ ট্যাক্সির প্রত্যাখ্যানে অতিষ্ঠ হয়ে আমরা অ্যাপ ক্যাবকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। এমনকী ক্রাইসিসের সময় তাদের বাড়তি ভাড়া চাওয়ার রীতি, যা আমার মতে অন্যায্য, তা সত্ত্বেও। প্রত্যাশা ছিল একটাই, উন্নত পরিষেবা। কিন্তু এখন কিছু ঘটনা ঘটছে, প্রত্যাশার বিপরীত। তাই রাজ্যের পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। প্রথমত ক্রাইসিসের সময় অধিক মূল্য চাওয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হোক। দ্বিতীয়ত রিফিউজালের ক্ষেত্রে যাত্রীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান দেওয়া হোক। তৃতীয়ত, যে থানা এলাকা দিয়ে ট্যাক্সিটি যাচ্ছে, সেই থানায় যাতে প্রয়োজনে যাত্রী এসওএস পাঠাতে পারেন, অ্যাপ ক্যাবের অ্যাপেই তার ব্যবস্থা থাক।
বিশ্বদেব পণ্ডিত কলকাতা-১০২
উচ্ছেদ
সম্প্রতি বিরাটি ফ্লাইওভারের নীচ থেকে কয়েকশো দোকানদারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। কারণ অজানা। কেউ বলছেন সৌন্দর্যায়ন হবে, কেউ বলছেন আদালতের নির্দেশ। কারণ যা-ই হোক, এই উচ্ছেদের ফলে কয়েকশো পরিবার আজ সংকটের মুখে। শুধু যে এঁরা অসুবিধায় পড়েছেন তা-ই নয়, আমরা যারা ক্রেতা, তারাও অসুবিধায় পড়েছি। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত নীতি হল, বিকল্প ব্যবস্থা না করে কোনও উচ্ছেদ করা যাবে না। তাই জানতে চাইছি, বিকল্প ব্যবস্থাটা কী হয়েছে? কোনও সন্দেহই নেই, সৌন্দর্যায়নের চেষ্টার ফলে আমাদের শহরটা অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর হোক, কিন্তু বেশ কিছু মানুষের রুজি বন্ধ করে শহর সুন্দর করা যায় কি?
সমীরবরণ সাহা কলকাতা-৮১
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy