Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: ভদ্রলোকের খেলা?

খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচ সমান ভাবে দায়ী, বরং কিছুটা বেশি। ড্যারেন লেম্যান খেলোয়াড় জীবনেও কোনও দিনই ভদ্রলোক বলে পরিচিত ছিলেন না।

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০০:১৮
Share: Save:

কেপটাউন টেস্ট চলাকালীন অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক ও তার সাঙ্গোপাঙ্গরা যা কুকর্ম করেছেন তা চূড়ান্ত নিন্দনীয়। আরও নিন্দনীয় এই কারণে যে, একটি সদ্য টেস্ট খেলতে আসা দলের কনিষ্ঠ খেলোয়াড় ক্যামেরন ব্যানক্রফটকে দিয়ে এই কুকর্মটি করানো হল। এই অপরাধে আইসিসির বিধান অনুযায়ী যা শাস্তি হয়েছে তা ঠিক।

খেলোয়াড়দের সঙ্গে কোচ সমান ভাবে দায়ী, বরং কিছুটা বেশি। ড্যারেন লেম্যান খেলোয়াড় জীবনেও কোনও দিনই ভদ্রলোক বলে পরিচিত ছিলেন না। গত অ্যাসেজ সিরিজে এই লেম্যানই কোচ থাকাকালীন স্টুয়ার্ট ব্রডের বিরুদ্ধে দর্শকদের লেলিয়ে দিয়েছিলেন গালাগালি করার উদ্দেশ্যে।

শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট খেলাটা আর জেন্টলম্যান’স গেম রইল না। বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনা করার পর, আইসিসি ঠিক করতে চলেছে, মাঠে খেলোয়াড়দের অভব্য আচরণের জন্য মাঠেই তাঁদের হলুদ বা লাল কার্ড দেখাবেন আম্পায়াররা। সারা বিশ্বে যখন ফুটবল খেলায় হলুদ বা লাল কার্ড দেখানোর প্রবণতা কমতে চলেছে, ঠিক তখন ক্রিকেট খেলায় এই নিয়ম চালু হতে চলেছে। ব্যাপারটা ক্রিকেট খেলার পক্ষে মোটেও ভাল বিজ্ঞাপন নয়।

তবে ইদানীং মাঠের মধ্যে স্লেজিং যে জায়গায় পৌঁছেছে, তার একটা বিহিত করতেই হত। গত বছরের মার্চ মাসে ভারত-অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় টেস্ট চলাকালীন ইশান্ত শর্মা স্টিভ স্মিথের প্রতি যে নোংরা মুখভঙ্গি করেছিলেন এবং বিরাট কোহালির তাতে যে প্রত্যক্ষ মদত ছিল, তা আমাদের সকলেরই মনে থাকবে। আমরা যারা ক্রিকেট খেলাটাকে ভালবাসি, তারা খুবই ব্যথিত হয়েছিলাম।

এ কথা ঠিক যে অস্ট্রেলীয়রাই ক্রিকেট খেলায় এই অভব্য আচরণের স্রষ্টা, এবং বেশ গর্বের সঙ্গেই এই বিষয়ে দক্ষতার কথা তারা প্রচার করে থাকে। তাই অত্যন্ত প্রশংসনীয় যে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল ডাক দিয়েছেন: স্লেজিং বন্ধ হোক।

সোমনাথ মুখোপাধ্যায় কলকাতা-৫৭

অন্য দাবি

আমার চিঠি ‘সুদের হার’–এর (২৩-২) পরিপ্রেক্ষিতে জয়ন্ত সিংহের চিঠি ‘সুদ ও সুরক্ষা’ (১০-৩) নিয়ে বলতে চাই, ব্যাঙ্ক ব্যবসায়িক সংস্থা; ব্যবসায়ে শ্রীবৃদ্ধির জন্য সারা বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুদের হার নির্ণয় করতে হবে। ষাট বছর বয়স পর্যন্ত আমাদের দেশে লোকে নিয়মিত আয়ের দ্বারা জীবন নির্বাহ করে। তাই ব্যাঙ্কের সুদের হার কমের জন্য জীবন যাপনে তেমন অসুবিধার কথা নয়। আর আগের তুলনায় লোকের মাইনে বেড়েছে বহু গুণ। আশির দশকে শিল্পে সর্বনিম্ন মজুরি ছিল মাত্র ২২ টাকা, আজকে সম্ভবত তা ৪০০ টাকা, দাবি উঠেছে ৬০০ করার। তখন ব্যাঙ্কে সুদের হার ছিল ১৫%, আজকে তা ৬%, অর্থাৎ সুদ কমেছে ৬০%। মাইনে বেড়েছে ১৮ থেকে ১০০ গুণ। তাই ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের পরিমাণ সেই অনুপাতে বাড়াতে হবে।

পেনশনহীন বয়স্কদের জন্য আছে ভারত সরকারের বরিষ্ঠ যোজনা (এসসিএসএস)। সেই ২০০৫ সাল থেকে ১৫ লক্ষ টাকা, স্বামী-স্ত্রী মিলে ৩০ লক্ষ টাকা রাখা যেত, তখন ৯% সুদে এ থেকে বছরে আয় হত ১ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা আর আয়কর ছাড়ের সীমা ছিল বছরে ১ লক্ষ টাকা। বর্তমানে সুদ ৮.৩ %, আর জমার ঊর্ধ্বসীমা সেই ১৫ লক্ষেই আছে, অর্থাৎ এ থেকে বাৎসরিক আয় কমে মাত্র ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৫০০ টাকা যেখানে আয়কর ছাড়ের সীমা বেড়ে বছরে ৩ লক্ষ টাকা! এ ছাড়া আছে প্রধানমন্ত্রী ব্যয় বন্দনা যোজনা (পিএমভিভিওয়াই), ৮% সুদে বর্তমানে ১৫ লক্ষ টাকা জমা রাখা যায়। এই দুইয়ে মিলে ১৫+১৫=৩০ লক্ষ টাকা রাখা যায় এবং এ থেকে সুদ পাওয়া যেতে পারে বছরে ২.৪৪৫ লক্ষ টাকা, অর্থাৎ মাসে ২০,৩৭৫ টাকা। যে হেতু অধিকাংশ বয়স্কের ৩০ লক্ষ টাকা মূলধন নেই তাই তাঁদের প্রধানত বরিষ্ঠ যোজনার উপর নির্ভর করে বাঁচতে হবে। এর সুদের হার হওয়া উচিত বয়সভিত্তিক, যত বয়স বাড়বে, সুদের হারও বাড়বে। সমস্ত বয়স্কের এই নিয়ে দাবি তোলা উচিত। দুর্ভাগ্য, সবাই ব্যাঙ্কে সুদের হার বাড়ানোর দাবি করে চলেছেন।

হরলাল চক্রবর্তী কলকাতা-৪০

রাজস্ব

‘নজরে অফিসারেরা, কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর’ (২৭-৩) খবরে পড়লাম, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের বেআইনি কাজে ক্ষুব্ধ। সত্যিই এই দফতরের ওপর সাধারণ মানুষের বিশ্বাস ক্রমে তলানিতে চলে যাচ্ছে। উত্তরাধিকারী বা ক্রেতা হয়ে নিজের নাম দফতরে নথিভুক্ত করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যায়। অথচ কিছু ব্যবসায়ী ওই দফতর থেকেই অনায়াসে কাজ সিদ্ধ করে নেন। সবচেয়ে অবাক কাণ্ড, কোন জমির খাজনা কোন সময় পর্যন্ত সরকারের ঘরে জমা দেওয়া আছে, তার কোনও নথি দফতরে নেই। কোনও জমির খাজনা জমা দিতে গেলে আগের আসল (অরিজিনাল) রসিদ দেখাতে হয়, সেটা দেখেই দফতর পরের সময়ের জন্য খাজনা গ্রহণ করে। যদি আগের রসিদ দেখাতে না পারা যায়, তা হলে আবার সেই সময়ের জন্য টাকা দিতে হয়। খাজনা বাবদ অর্থ পুরসভা বা পঞ্চায়েতের করের সঙ্গে যদি যোগ করে নেওয়া যায়, তবে সাধারণ মানুষ অযথা হয়রানি থেকে মুক্তি পান, সরকারেরও আয়ের ঘাটতি হয় না।

অজিত রায় নোনাচন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

মাথা উঁচু

‘রূপার পুরস্কার প্রত্যাখ্যান’ (২৭-৩) খবরটি পড়ে ভাল লাগল। কোনও একটি ভাল কাজের জন্য বেঙ্গালুরুর এক আইপিএস অফিসার ডি রূপাকে এক বিজেপি সাংসদ তাঁর নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফ থেকে বিপুল অর্থের একটি পুরস্কার দিতে চেয়েছিলেন। প্রত্যাখ্যান করে রূপা লিখে পাঠান, ‘রাজনীতির সামান্যতম ছোঁয়াচ আছে এমন কোনও সংগঠনের সংশ্রব এড়ানো এবং সমস্ত রাজনৈতিক দলের থেকে সমদূরত্ব রাখাটাই যে কোনও সরকারি কর্মীর কাছ থেকে প্রত্যাশিত।’ খুব খুশি হতাম যদি এই খবরটা কাগজের প্রথম পাতায় স্থান পেত। কারণ রূপা যা করেছেন সেটা প্রত্যাশিত‍ এবং স্বাভাবিক। কিন্তু এই জাতীয় স্বাভাবিক কাজগুলো হয় না বলেই রূপার কাজটি ব্যতিক্রমী।

মনে পড়ে, নব্বইয়ের দশকে বিহারের বারাউনি অঞ্চলে একটা বড় প্রজেক্টের কাজে আমি বেশ কিছু দিন ছিলাম। কাজের প্রয়োজনে বেগুসরাই জেলার তৎকালীন এসপি-র সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ হয়। সৎ, নির্ভীক নবীন আইপিএস অফিসারের কাজকর্ম দেখে ও ব্যবহারে মুগ্ধ হয়েছিলাম। শুনেছিলাম তাঁর ভয়ে দুষ্কৃতীচক্র অধ্যুষিত বিস্তৃত অঞ্চলে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে এসেছিল। ওঁর অফিসের এক প্রবীণ কর্মী আমাকে বলেছিলেন, কোনও নেতা, এমএলএ, সাংসদ বিনা অনুমতিতে ওঁর অফিসে ঢুকতে পারেন না। কোনও রকম ভয় বা প্রলোভনের কাছে নতি স্বীকার করেন না। এক বার ওঁর অফিসে আমার সঙ্গে চা খেতে খেতে বলেছিলেন, ‘মশাই, মাথা উঁচু করে কাজ করি। চাকরি তো খেতে পারবে না কেউ, বড়জোর ট্রান্সফার করতে পারে। আমি বাক্স গুছিয়েই রাখি।’ অহরহ যে সমস্ত পুলিশ অফিসারদের মেরুদণ্ডহীন আচরণ ও শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের কাছে কদর্য স্তাবকতার ছবি দেখতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছি, সেই জায়গায় ডি রূপার মতো অফিসারের কথা প্রচারের আলোয় আসুক।

অনিলেশ গোস্বামী শ্রীরামপুর, হুগলি

ভ্রম সংশোধন

শুক্রবার কিছু সংস্করণে ‘রাজস্থানে কী কী মামলা’ (পৃ ৯) গ্রাফিকে সালটা ২০০৮ লেখা হয়েছে। হবে ১৯৯৮। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

কলকাতা পুলিশের সার্জেন্ট রাকেশ কুণ্ডুর দুর্ঘটনায় মৃত্যু সম্পর্কিত খবরটিতে (‘মৃত পুলিশকর্মী’, কলকাতা, ৬-৪) কারও প্রতি কোনও অশ্রদ্ধা প্রকাশের কিছুমাত্র উদ্দেশ্য আমাদের ছিল না। তবুও যদি এই প্রতিবেদনটির কিছু অংশ কোনও পাঠকের মনে আঘাত করে থাকে, সে জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE