চাতরা, হুগলি
অব্যবস্থা
প্রতি বছরের মতো এ বারও বসন্ত উৎসব দেখার প্রত্যাশায় শান্তিনিকেতন গিয়েছিলাম। চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখলাম। যাত্রাপথে শ্রীনিকেতন রোডে আমাদের গাড়ি যানজটে প্রায় তিন ঘণ্টা আটকে গেল, সঙ্গে আমাদের মতো হাজার হাজার যাত্রী। যানজট ছাড়াবার বিন্দুমাত্র উদ্যোগ দেখা যায়নি। নিরুপায় আমরা পায়ে হেঁটে (প্রায় তিন কিলোমিটার) গিয়ে, প্রায় চার গুণ টাকা দিয়ে টোটো ধরলাম। টোটো পাড়ার অলিগলি অতিক্রম করে আমাদের যখন মেলা প্রাঙ্গণের কাছে পৌঁছে দিল, তার পর আরও প্রায় আধ ঘণ্টা হেঁটে মেলা প্রাঙ্গণে পৌঁছলাম। না ছিল শৌচাগার, পানীয় জল, না কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা। বসন্ত উৎসবে শান্তিনিকেতন গিয়ে এক কলি রবীন্দ্রসঙ্গীতও শোনার সৌভাগ্য হল না। যুদ্ধ করতে করতে যাওয়া, আবার একই ভাবে গলদঘর্ম হয়ে, দ্বিগুণ টোটোভাড়া দিয়ে কিছুটা এগিয়ে আসা। পুণ্যভূমি থেকে প্রাণ নিয়ে পলায়ন।
অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়
বিধাননগর, দুর্গাপুর
বাস থেমে গেল
বলা নেই কওয়া নেই, হঠাৎ পুলিশ এসে বাস খালি করে দিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সবাইকে বাস থেকে নেমে যেতে হল। বাস আর এগোবে না, কারণ সামনেই শাসক দলের মিটিং আছে। ত্রিশ হাজার লোকের পরিকাঠামোয় দু’লক্ষ লোকের সমাগম। দূর-দূরান্ত থেকে বাস, মোটরভ্যান, ট্র্যাকটর, টোটো, মোটরবাইক, ম্যাটাডোর, সমস্ত গাড়ি যেন রণসজ্জার মতো সারি সারি চলেছে রাস্তা কাঁপিয়ে, সঙ্গে স্লোগান, উল্লাস, শক্তিপ্রদর্শনের হর্ষধ্বনি। চোখের সামনেই চুলোয় যাচ্ছে পুলিশ তথা রাজ্য সরকারের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ বাণী। বিনা হেলমেটে একটা বাইকে একাধিক সওয়ারি। পুলিশ যেন অসহায়, গোবেচারা! রাস্তায় থেমে থাকা বেসরকারি বাসের সারি। নিরুপায় হয়ে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে বাস থেকে নেমে যাওয়া শিশুটি বাস গুনতে থাকে। সে শিখছে, জনগণের কাছে ভোট চাইতে এলে জনগণের কথাটা ভাবার দরকার নেই। কে বলতে পারে, হয়তো এক দিন আসবে, যখন মিটিং-মিছিলের নামে ভোগান্তি ঠেকাতে নয়া প্রকল্প ঘোষণা হবে: যাত্রিশ্রী!
মহঃ নুরুল হাসান
সালার, মুর্শিদাবাদ
বিপত্তি
আমার বাবা এক জন অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগী কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী। লাইফ সার্টিফিকেট জমা না দেওয়ার জন্য (ব্যাঙ্কের ভুলও হতে পারে) বাবার পেনশন বন্ধ হয়ে যায়। এর পর ‘ভেরিফিকেশন কমিটি’র সামনে এক প্রস্ত পরীক্ষা দেওয়ার পর স্থির হয়, আমার বাবা ‘বেঁচে আছেন’। সেই সময় বাবার আধার কার্ডের সঙ্গে অফিসের রেকর্ডের গরমিল ধরা পড়ে এবং কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দেন, আধার কার্ড পরিমার্জনা করে আনতে হবে। বাবার ভোটার কার্ডেও বয়স ভুল দেওয়া ছিল। আধার বানানোর জন্য প্রমাণপত্র হিসেবে স্কুল লিভিং সার্টিফিকেট (৮ম শ্রেণি পর্যন্ত), ফার্স্ট ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেট সার্টিফিকেট, অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রার হাইকোর্ট-এর চিঠি, স্থানীয় এমএলএ-র চিঠি, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানের চিঠি— কোনও কিছুই গ্রাহ্য হল না। পাঁচ বার আধার কর্তৃপক্ষের একই জবাব, ‘ডেটা প্রসেসিং এরর’। এর অর্থ জানার জন্য ১৯৪৭-এ ফোন করার পর জানা গেল, এক জন গেজ়েটেড অফিসারের প্যাডে লেখা চিঠি আনতে হবে। এই অফিসার কারা? এসপি, ডিএসপি, ডিএম, এডিএম ইত্যাদি। এঁরা আমাদের মতো অতি সাধারণ লোককে চিনবেন কেন? অনেকের দরজায় ধর্না দেওয়ার পর, এক পিয়ন গোছের ভদ্রলোক বললেন, ‘‘ভেতর থেকে অাসতে হবে, তবে কাজ হবে।’’ এ দিকে এক বছর পেনশন না আসার জন্য বাবার অবস্থা শোচনীয় (বুকে পেসমেকার, ছানি অপারেশন বাকি, মাসে ওষুধের খরচ ৩ হাজার, এবং নানাবিধ খরচ)। আমরাও আধার বানানোর জন্যে নাজেহাল। ভোটার কার্ড সংশোধন করতে দেওয়া হয়েছে, তা কবে হাতে পাওয়া যাবে তার ঠিক নেই। এই অবস্থায় আমাদের করণীয় কী?
সুব্রত চক্রবর্তী
হাওড়া
খাটাল
কলকাতা পৌরসভার ১২৭ নং ওয়ার্ডে দীর্ঘ দিন ধরে একটি অবৈধ খাটাল পরিচালিত হয়ে আসছে। তার যাবতীয় গোবর ও গোমূত্র নিউ শকুন্তলা হাউজ়িং এস্টেটের সন্নিহিত এলাকার মুক্ত সবুজ মাঠটি ভরে ফেলেছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, মশামাছি বাড়ছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলে কোনও লাভ হয়নি।
শুভেন্দু কুমার সরকার
কলকাতা-৬১
গর্ব হবে না?
মহাকাশে ‘শক্তি-শেল’-এর সাফল্য নিয়ে কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গাঁধীর টুইট ‘‘শাবাশ ডিআরডিও। আপনাদের জন্য গর্বিত। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে জানাই বিশ্ব নাট্য দিবসের শুভেচ্ছা।’’ এটি রাহুলের অপরিণত মানসিকতাকেই তুলে ধরে। তিনি মোদীকে ব্যঙ্গ করে টুইট করেছেন বটে, কিন্তু ভুলে যাচ্ছেন, এই সাফল্যের পিছনে ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা থাকলেও, প্রধানমন্ত্রীর অপ্রত্যক্ষ ভূমিকাও জড়িয়ে আছে। প্রধানমন্ত্রী যদি প্রয়োজন বুঝে এই গবেষণা ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির অনুমোদন না দিতেন, তা হলে কি এই সফলতা আসত? যেমন ২০১২ সালে ইউপিএ সরকারের আমলে ডিআরডিও এই প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা চালাতে চেয়ে প্রস্তাব দিলেও, সরকার প্রয়োজন মনে না করায়, তার সাফল্য এত দিন পাওয়া যায়নি। পৃথিবীর যে কোনও দেশের যে কোনও গুরুত্বপুর্ণ সাফল্যের পিছনে প্রত্যক্ষ ভাবে
যুক্ত ব্যক্তিদের তুলনায় দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের নাম সর্বাগ্রে স্থান পায়। এটাই নিয়ম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যুদ্ধে পাকিস্তানকে দু’ভাগ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কি আজও ইন্দিরা গাঁধীর সফলতা দেখি না? তিনি কি বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন? ঠিক তেমনই মোদীর নেতৃত্বে মহাকাশে ‘শক্তি-শেল’-এর সফলতা এসেছে।
কংগ্রেস ও মোদী বিরোধীদের সমস্যা হচ্ছে, মোদী জমানায় যা কিছু খারাপ হচ্ছে তা গলার শিরা ফুলিয়ে বলব, কিন্তু যা কিছু ভাল হচ্ছে, দেশের স্বার্থে হচ্ছে, তা কিছুতেই স্বীকার করব না। সমগ্র ভারতবাসী যখন দেশের এই সাফল্যে গর্বিত, তখন কেন দেশের বিরোধী দলগুলি অসূয়া প্রকাশ করে চলেছে?
মিহির কানুনগো
কলকাতা-৮১
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।