Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: বন্ধ হোক এই হত্যা

মায়ের নামে ছাগশিশুর ন্যায় অত্যন্ত নিরীহ প্রাণীকে বলি দিয়ে হত্যা করা হয়। এবং এই সব ছাগশিশুর নামকরণ করা হয় ‘চক্ষুদানের’ পাঁঠা, ‘কৌলিকের পাঁঠা’, ইত্যাদি।

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

‘কালীপুজো ও বলিদান’ শীর্ষক চিঠিটি (৪-১১) অতিশয় সময়োচিত এবং অনুধাবনযোগ্য। মায়ের নামে ছাগশিশুর ন্যায় অত্যন্ত নিরীহ প্রাণীকে বলি দিয়ে হত্যা করা হয়। এবং এই সব ছাগশিশুর নামকরণ করা হয় ‘চক্ষুদানের’ পাঁঠা, ‘কৌলিকের পাঁঠা’, ইত্যাদি।

এ ছাড়া কেউ বা মায়ের কাছে সন্তান কামনা করে মানত করেন বলিদানের। তা ছাড়া মানুষের বলিদানের জন্য কিছু না কিছু বাহানা বছরভর লালিত হয় এবং কালীপুজোর দিন তা পালিত হয়। কোনও কোনও পরিবারে এই দিন ঢাক ঢোল বাদ্যি সহকারে পাঁঠাগুলিকে বলিদান করা হয়। তার পর আত্মীয়স্বজন সহকারে কালীপুজোর ভূরিভোজ হয়। বলির আগে পাঁঠাগুলিকে ঠান্ডা জলে স্নান করানো হয়। অসহায় ছাগশিশুগুলির ঠান্ডায় এবং হয়তো-বা ভয়ে ঠক ঠক করে কাঁপার দৃশ্য এবং কিছু মানুষের চরম উত্তেজনা ও উল্লাস এক অপরিসীম বেদনার পরিবেশ সৃষ্টি করে। তাই মনে হয়, এই বলিদান প্রথা এ বার সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।

স্মৃতি শেখর মিত্র

আসানসোল

অসহায়

শব্দবাজির নানা শারীরিক ও মানসিক কুফল ও আসন্ন কালীপুজোয় ‘ডিজে- দাপট’ রুখতে কলকাতা পুলিশের উদ্যোগ সম্পর্কে দু’টি প্রতিবেদন (কলকাতা, ২-১১) প্রকাশ করার জন্য ধন্যবাদ জানাই। এই দু’টি অমানুষিক শব্দতাণ্ডবের যাঁরা পৃষ্ঠপোষক ও অংশগ্রহণকারী, তাঁদের যদি কিঞ্চিৎ বোধোদয় হয় (প্রাকৃত ভাষায়— কানে জল ঢোকে), তবে সবার মঙ্গল, এমনকি তাঁদের নিজেদেরও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, শব্দবাজি যাঁরা ফাটান তাঁরা নিজেরাই সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ডিজে-র ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই একই কথা প্রযোজ্য।

কিন্তু শব্দবাজি ও ডিজে-উৎপাত কি শুধুমাত্র কালী-দুর্গা পুজোর সময় এবং কলকাতা শহরেই হয়? আমার এক ডাক্তার-বন্ধুপত্নী সুদূর মুর্শিদাবাদের একটি শহর থেকে আতঙ্কের সুরে জানালেন, শুধু কালী আর দুর্গা নয়, গণেশ, জগদ্ধাত্রী, দেড়ফুটি মা সরস্বতী থেকে মনসা, ঘেঁটু, বজরংবলী, জন্মাষ্টমী, যে কোনও বিসর্জন বা শোভাযাত্রা এক ‘ছোট হাতি’ (ছোট লরি) ভর্তি ডিজের শব্দভারে আকাশ প্রকম্পিত না করে কখনও হতেই পারে না! ফল হয় এই, অতিব্যস্ত ডাক্তারবাবু কানের স্টেথো খুলে এক আউন্স পরিমাণ তুলো গুঁজে বসেন আর তস্য পত্নী তিনতলার ঠাকুর ঘরে গৃহদেবতা ‘রাধাকৃষ্ণ’র ঝুলন (বিপুল শব্দতরঙ্গে) দেখতে থাকেন!

তিনি যা বললেন তা এক বিন্দুও বাড়ানো নয়। শুধু পুজো নয়, সংসদ থেকে প্রাইমারি ইস্কুল কমিটির নির্বাচনের ‘বিজয় মিছিল’, বিয়েশাদির শোভাযাত্রা বা আসর, বিজয়া, ইদ, দেওয়ালি সম্মেলন— কোনও উৎসবই, কোচবিহার থেকে গঙ্গাসাগর, কোথাও ডিজে এবং শব্দবাজি ছাড়া হতেই পারে না। আর এই ডিজের শব্দ ডেসিবেল নয়, বোধ হয় রিখটার স্কেলেই মাপা সম্ভব!

আপনাদের পত্রিকার পাতায় দুই প্রতিবেদক উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় শব্দবাজি প্রাপ্তি নিয়ে ‘আবার যখের ধন’ স্টাইলে সচিত্র তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছেন! সাধু প্রচেষ্টা। আর একটু দূরে যান (জানি না পত্রিকার অন্য সংস্করণে হয়তো করেছেন), সারা বছর ধরেই একটু আধটু লিখুন। পুজো-উৎসবের কান্ডারিদের (সবাই তো দলনির্বিশেষে নেতা মন্ত্রী কাউন্সিলর গ্রামপ্রধান) কানে একটু ঢুকুক।

কলকাতা পুলিশের ডিজে-দাপট-বিরোধী উদ্যোগ স্বাগত। প্রতিবেদনে উল্লিখিত বাঁশদ্রোণী থানা ‘আমার কুটির’ থেকে এক কিলোমিটার, আশায় আছি, এখন থেকে আমরা একটু শান্তিতে থাকতে পারব। এই পৃষ্ঠপোষকদের বাবা বাছা বলে পিঠে হাত বুলিয়ে কিছু হবে না। একটা কাজ পুলিশ করতে পারে— তাঁদের একটি ঘরে বন্ধ রেখে সেখানে অষ্টপ্রহর ডিজে চালানো।

স্বরাজ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা-৯৬

দলাই লামা

‘জিন্না প্রধানমন্ত্রী হলে ভারত ভাঙত না, বললেন দলাই লামা’ (৮-৮) শীর্ষক সংবাদে শিহরিত হলাম। প্রতিবেশী চিন রাষ্ট্রের অন্তর্গত তিব্বতের ধর্মগুরু দলাই লামা ভারতের আশ্রিত এক জন সম্মাননীয় ব্যক্তিত্ব। কিন্তু ভারতের মতো একটা দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিতর্কিত বিষয়ে না জড়ানোটাই তাঁর পক্ষে অধিকতর বাঞ্ছিত হত। তিনি বলছেন, “যদি জওহরলাল নেহরুর বদলে প্রধানমন্ত্রী হতেন মহম্মদ আলি জিন্না, তবে ভারত ভূখণ্ড ভেঙে দু’টুকরো হত না” এবং “নেহরু ছিলেন খুবই আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতার মানুষ। উনি চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হতে।” আশ্রয়দাতা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এ হেন অশোভন উক্তি কি ব্যক্তিগত বিদ্বেষপ্রসূত?

তিনি আরও বলেছেন, ‘‘যদি মহাত্মা গাঁধীর ইচ্ছা পূর্ণ হত, তা হলে হয়তো ভারত ভূখণ্ড ভেঙে দু’টুকরো হয়ে ভারত ও পাকিস্তান, দু’টি রাষ্ট্রের জন্ম হত না।’’ হয়তো তা হত না। কিন্তু স্বাধীনতার আগের দিনগুলিতে ভারতের সর্বত্র যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছিল তার পরিণতিতে সমগ্র ভারতবর্ষ অবশ্যই অখণ্ড পাকিস্তানে পরিণত হত। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরই তার প্রমাণ। জিন্নাসাহেব জানতেন নেহরু সমাজতন্ত্র-প্রিয় গণতান্ত্রিক মানুষ ছিলেন। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমে গেলে তাঁরও তামাম ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি সে পথ ছেড়ে দিয়ে ধর্মীয় মৌলবাদীদের সাজানো সাম্প্রদায়িকতার পথেই যাত্রা শুরু করলেন। তাঁর সৃষ্ট পাকিস্তানে গণতন্ত্র কত সুদৃঢ়, সে বিষয়ে দলাই লামা ভালই অবগত। তবুও তিনি, হয়তো কাউকে তুষ্ট করার জন্য, ভিন্ন কথা বলে চলেছেন।

তিব্বতি ধর্মগুরু বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, সামন্ততন্ত্র থেকে গণতন্ত্র অনেক ভাল”। তিনি নিশ্চয়ই জানেন রিলিজিয়ন অতীতের সামন্ততন্ত্রেরই ফসল। তবু তিনি তাকে আশ্রয় করেই গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের লাগাতার বিরোধিতা করে চলেছেন। গাঁধীর সঙ্গে নেহরুর বিরোধের কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। গাঁধী এবং জওহরলাল পরস্পরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। কিন্তু জওহরলাল ছিলেন মনেপ্রাণে সামন্ততন্ত্র-বিরোধী।

কৃষ্ণ দাস

চাকদহ, নদিয়া

আংশিক ভুল

‘ডেঙ্গিতে বৃদ্ধার মৃত্যু চুঁচুড়ায়’ (হাওড়া-হুগলি সংস্করণ, ২৮-৯) শীর্ষক খবরে চুঁচুড়ার ধরমপুরের বাসিন্দা সন্ধ্যা চক্রবর্তীর মৃত্যুর খবরে লেখা হয়েছে, সন্ধ্যাদেবী ভর্তি হয়েছিলেন ১৪ সেপ্টেম্বর। আসলে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন ৬ সেপ্টেম্বর এবং তাঁকে রেফার করা হয় ৮ সেপ্টেম্বর। তিনি ডায়াবিটিসে (মেলিটিয়াস টাইপ-২ উইথ ইউরোসেপসিস) ভুগছিলেন।

সুপারিনটেন্ডেন্ট

জেলা সদর হাসপাতাল, চুঁচুড়া

প্রতিবেদকের উত্তর: ওই বৃদ্ধা কী রোগে ভুগছিলেন, সে কথা প্রতিবেদনে কোথাও লেখা হয়নি। সন্ধ্যাদেবীর পরিবারের লোকজন জানিয়েছিলেন, পেটের রোগ এবং জ্বর হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এটা ঠিক যে ৮ সেপ্টেম্বর তিনি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন। প্রতিবেদনে দিনটি ১৪ সেপ্টেম্বর লেখা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।

অতিরিক্ত

নীল কেরোসিনের ভর্তুকি সমেত দাম লিটার প্রতি ২৫ পয়সা বাড়ানো হয়েছে বলে দেখলাম। অথচ রেশন দোকানে লিটারে ১ টাকা বেশি নেওয়া হয়। সরকারের ২৫ পয়সা দাম বৃদ্ধি পেলে সাধারণকে ৭৫ পয়সা অতিরিক্ত দিতে হয়!

জয়দেব দত্ত

কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja Ritual Animal Immolation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE