শোভনলাল বকসীর ‘পটৌডি, আসিফ’ (৬-৬) শীর্ষক চিঠিতে লেখা হয়েছে, ১৯৭৭ সালে ইডেনে অনুষ্ঠিত ভারত-পাকিস্তান টেস্টে পঞ্চম দিনে ব্যাট করছিলেন আসিফ ইকবাল (ছবিতে) ও আবদুল কাদির। জয়ের জন্য পাকিস্তানের কয়েকটি রান বাকি ছিল। আসিফ অসাধারণ খেললেও অল্পের জন্য পাকিস্তান হেরে যায়।
এ প্রসঙ্গে জানাই, ইডেনের ওই টেস্টটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৮০ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি (১ ফেব্রুয়ারি বিশ্রামের দিন ছিল)। পঞ্চম দিনে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্চম উইকেটে আসিফ জুটি বেঁধেছিলেন জাভেদ মিঁয়াদাদের সঙ্গে। আবদুল কাদির এই টেস্টে খেলেনইনি।
নির্ধারিত ২৮০ মিনিটে ২৬৫ রান করলে জিতবে, এই লক্ষ্য রেখে খেলতে নেমে আসিফ ও মিঁয়াদাদের উইকেট দ্রুত হারিয়ে পাকিস্তান ১৬২-৬ হয়ে গেলে, ইমরানের ব্যাটিং দক্ষতায় শেষমেশ ১৭৯-৬ করে নিশ্চিত হার থেকে রক্ষা পায়। জয় থেকে তারা অনেক দূরেই ছিল। আর আসিফ দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৫ রান করে রান আউট হয়ে যান।
ইডেনের ওই টেস্টটিতে একটি বিতর্কিত ঘটনা ঘটে, কারও কারও মতে যার মাধ্যমে ভারতের মাটিতে ক্রিকেট জুয়ার সূচনা হয়। টসের মুদ্রাটি মাটিতে পড়ার আগেই, পাকিস্তানের অধিনায়ক আসিফ, ওই টেস্টে প্রথম বার ভারতীয় দলের অধিনায়ক হওয়া বিশ্বনাথকে বলেন, তুমিই টসে জিতেছ। ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে ‘ভিশি’ প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।
সজলকান্তি ঘোষ শ্রীনিকেতন, বারুইপুর
প্র না বি
‘প্রমথনাথ, চিত্র-চরিত্র’ (পত্রিকা, ২-৬) পড়ে মনে পড়ে গেল পুরনো দিনের স্মৃতি। নববর্ষের দিন। সকালে বাবার (সাহিত্যিক শচীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে গিয়েছি কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায়, অটোগ্রাফের খাতা নিয়ে। সাহিত্যিকদের সইয়ে মুহূর্তে ভরে গেল সেই খাতা— ‘মিত্র ও ঘোষ’-এর দফতরে। প্রমথনাথ বিশী যা লিখলেন, সত্যিই তার তুলনা নেই— ‘ভুল করিতে শেখো।’
শুভেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা-২৭
রসবোধ
প্রমথনাথ বিশীর অসাধারণ রসবোধ ছিল। তিনি তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এক দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক ওঁকে বললেন, ‘‘আপনি তো দীর্ঘ কাল শান্তিনিকেতনে ছিলেন, অথচ রবীন্দ্রসঙ্গীত শেখেননি?’’ প্রমথবাবু বললেন, ‘‘আপনি থাকেন কোথায়?’’ অধ্যাপক বললেন, ‘‘কেন, দমদম।’’ প্রমথবাবু একটু হেসে বললেন, ‘‘দমদমে থাকেন, অথচ এরোপ্লেন চালানো শেখেননি!’’
শোভনলাল বকসী কলকাতা-৪৫
খাতাও দিন
এখন সরকার পোষিত সেকেন্ডারি স্কুলগুলিতে বার্ষিক পুস্তক প্রদানের সঙ্গে রুলটানা এবং সাদা খাতাও দেওয়া হয়। এগুলি পেয়ে বেশ কিছু দিন ছাত্রছাত্রীরা তাদের হোমওয়ার্ক কিংবা স্কুলের টাস্কগুলি করতে পারে। কিন্তু ওই স্কুল-পড়ুয়াদের ভাইবোনেরা— যারা এখন দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠরত, অধিকাংশই খাতার অভাবে স্কুলের কাজ করতে পারে না। অনেকে খাতার অভাবে স্কুল কামাই করা শুরু করে। দেখা গিয়েছে, যে সব শিশুর খাতার অভাব তীব্র, তাদের অধিকাংশের মায়েরা একশো দিনের কাজে ব্যস্ত। বাবা ভ্যান চালিয়ে বা সব্জি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন। এঁরা বাচ্চার স্কুলে খাতার অভাবকে খুব তলিয়ে দেখেন না। ফলে, তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির শিশুরা বই দেখেও দু’চার লাইন বাংলা লিখতে শিখছে না। যদি আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ‘বুক ডে’র দিনে নতুন বইয়ের সঙ্গে এরা গুটিকয়েক খাতাও পায়, লেখার অভ্যাস সড়গড় হয়।
সঞ্জয় কুমার সাউ কালীপুর, হুগলি
স্বাস্থ্যসাথী
‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প আছে অথচ নির্বিঘ্নে ভাল নার্সিংহোমে গিয়ে কেউ ট্রিটমেন্ট করিয়ে এল, এ রকম উদাহরণ বিরল। বেশির ভাগ জটিল অপারেশন, যা ব্যয়সাপেক্ষ, তা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে কোনও নার্সিং হোমই করাতে আগ্রহী নয়। প্রধান কারণ, যা খরচ হয় তা পেতে তাদের কালঘাম ছুটে যায়, উপরন্তু পুরো টাকা পায় না। ফলে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। এমনকি যে সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারী হেল্থ স্কিমের আওতায় রয়েছেন, তাঁরা নিজেদের পয়সায় কোথাও ট্রিটমেন্ট করিয়ে আনলেও, সেই অর্থ তাঁদের নিজেদের ডিপার্টমেন্টেই রি-ইম্বার্সমেন্ট পেতে নানান অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। পুরো টাকা তো পানই না, তার উপর ক্লার্ককে প্রাপ্ত অর্থের কমিশন দিতে হয়!
অন্যান্য বেসরকারি কোম্পানি যেমন বিমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্মীদের মেডিক্লেম করিয়ে দেয়, সরকারেরও উচিত ছিল কোনও সরকারি বা বেসরকারি বিমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্মচারীদের স্বাস্থ্যের পলিসি করিয়ে দেওয়া। এতে যেমন অনেক কম প্রিমিয়ামে বেশি টাকার বিমা কভারেজ পাওয়া যেত, তেমন ক্লেমও পাওয়া যেত নির্ঝঞ্ঝাটে। এবং আমরাও নিজেদের পছন্দমতো স্থানে, এমনকি রাজ্যের বাইরেও ট্রিটমেন্ট করাতে পারতাম।
কৌশিক সরকার রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া
পাশ-ফেল
‘পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরছে আগামী বছরেই’ (৩-৬) শীর্ষক সংবাদ পড়লাম। পাশ-ফেল না থাকায় ছাত্ররা কিছুই শিখছে না— সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে। তাই দেশের শিক্ষাবিদ ও শিক্ষানুরাগী জনসাধারণ প্রথম শ্রেণি থেকেই পাশ-ফেল ফেরানোর দাবি করেছেন এবং এ নিয়ে দেশব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফিরছে। এ কথা অনস্বীকার্য, প্রাথমিক স্তরই শিক্ষার ভিত্তি গড়ে তোলে। তাই প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল না ফিরিয়ে না আনাটা দুর্ভাগ্যজনক। এতে শিক্ষার মানের কাঙ্ক্ষিত উন্নতি হবে না।
এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল কংগ্রেস পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনা ও বৃত্তি পরীক্ষা চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সে সব দূরে থাক, কেন্দ্রীয় শিশু শিক্ষা অধিকার আইনের দোহাই দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ-ফেল তুলে দিয়েছিল। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, অবিলম্বে প্রথম শ্রেণি থেকে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনা হোক।
প্রদীপ কুমার দত্ত কলকাতা-৭৩
প্রমথ চৌধুরী
কলকাতার কড়চায় (১৮-৬) ‘সার্ধশতবর্ষ’ শিরোনামে প্রমথ চৌধুরী সম্পর্কে প্রতিবেদনে যে লেখা হয়েছে, তাঁর দেড়শো বছর উপলক্ষে বাংলার সারস্বত সমাজ এক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় ছিল, তা ঠিক নয়। গত বছর পুজোর সময় (মহালয়া, ২০১৭) কলেজ স্ট্রিটের সুপ্রিম পাবলিশার্স প্রমথ চৌধুরীর ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ প্রকাশ করেছে এবং এই কাজ যে তাঁর জন্মসার্ধশতবর্ষের শ্রদ্ধার্ঘ্য তাও ওই সঙ্কলনের প্রকাশ-সালের নীচে উল্লেখ করা আছে। এই বইয়ের পরিপূরক ‘নির্বাচিত গল্প ও কবিতা’ও সুপ্রিম থেকে শীঘ্রই প্রকাশিত হবে।
ঋতম্ মুখোপাধ্যায় কলকাতা-৭৩
ভ্রম সংশোধন
‘স্কুল হল অ্যাকাডেমি, গানের স্যরই গ্রুমার’ শীর্ষক সংবাদ প্রতিবেদনে (২১-৬, পৃ. ১৪) ব্যবহৃত ছবিটি বাণীচক্রের। প্রতিবেদনে এই প্রতিষ্ঠানের নামটি বাদ পড়ে গিয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy