ফেব্রুয়ারি জুড়ে অনেক ‘দিবস’ উদ্যাপন হলেও, একটি দিবস উপেক্ষিতই থেকে যায় বরাবর। ২ ফেব্রুয়ারি। ১৯৭১-এ ‘রামসার কনভেনশন’ দিনটিকে ‘জলাভূমি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। যেহেতু দিনটি নিয়ে বাজারের মাথাব্যথা নেই, তাই আমাদেরও মাথায় নেই। অথচ জলাভূমি জনপদের সঞ্জীবনী। প্রাকৃতিক ও সামাজিক সম্পদ। জীববৈচিত্রের আধার। উন্নয়নের হাঙর তার সর্বগ্রাসী ক্ষুধায় গিলে খাচ্ছে আমাদের জলাভূমি। জীবিকা হারাচ্ছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। ২০১৮ সালের ২১-২৯ অক্টোবর জলাভূমি নিয়ে আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে দুবাইয়ে। পৃথিবীর ১৬৯টি দেশের ২২৯০টি জলাভূমি চিহ্নিত করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব কলকাতার ১২৫ বর্গ কিলোমিটার জলাভূমি তার অন্তর্ভুক্ত। এখানে বছরে ২০,০০০ টন মাছ এবং দৈনিক ১৫০ টন টাটকা সবজি উৎপন্ন হয়। হাজার হাজার মানুষের জীবন এই জলাভূমির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই ‘জলাভূমি দিবস’ও পালন হোক।
কমলকুমার দাশ কলকাতা-৭৮
সামলানো শক্ত
কেন্দ্র এবং এক রাজ্যের মন্ত্রী প্রকাশ্যে মূত্রত্যাগ করে অভিযুক্ত হয়েছেন (‘মন্ত্রীর প্রস্রাব’, ১৬-২)। প্রত্যেক সচেতন নাগরিক জানেন, প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ বেআইনি, কুরুচিকর এবং স্বাস্থ্যবিধি-বিরোধী। কিন্তু বাস্তব হল, প্রাকৃতিক বেগ সব সময়ে নিয়ম মানে না। অনেক ক্ষেত্রেই বাজার বা রাস্তাঘাটে অনেককেই ব্যাকুল ভাবে শৌচাগারের খোঁজ করতে দেখা যায়। বয়স হলে স্বাভাবিক কারণেই বেগ ধারণের ক্ষমতা কমে যায়। ঘাম হয়, নানা শারীরিক অসুবিধা ঘটে। মহিলাদের আবরু রক্ষার কারণে সমস্যা আরও বেশি। অধিকাংশ দূরপাল্লার বাসে শৌচাগার থাকে না। নির্দিষ্ট স্থানে বাস বা গাড়ি দাঁড় করালেও পরিষ্কার শৌচাগার মেলা দুষ্কর। গা-গুলোনো উৎকট গন্ধের মধ্যে বাধ্য হয়েই রুমাল বা আঁচলে নাকমুখ ঢেকে শৌচকাজ সারতে হয়। জনবহুল স্থানে তবু মাঝে মাঝে ‘পে অ্যান্ড ইউজ’ টয়লেট চোখে পড়ে, কিন্তু নগদ কড়ি ফেলে সেখানেও অবস্থা প্রায় তথৈবচ। বাইরে বেরলে যাতে এমন অবস্থার সম্মুখীন না হতে হয়, সে-জন্য মহিলারা কম জল পান করেন, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর।
শহরতলির ট্রেনযাত্রায় পরিস্থিতি আতঙ্কজনক। হাওড়া থেকে বর্ধমান ট্রেন লাইনে দূরত্ব ১০৭ কিমি। লোকাল ট্রেনে যাত্রাপথের নির্ধারিত সময় ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট। শিয়ালদহ থেকে কৃষ্ণনগর সিটি ১০০ কিমি, টাইম টেবিল অনুসারে সময় আড়াই ঘণ্টা। এই দীর্ঘ সময়ে এক বারও বাথরুম যাওয়ার প্রয়োজন হবে না, এমন গ্যারান্টি দেওয়া যায় কি? বেগ সামলাতে না পারলে কোনও স্টেশনে নেমে পড়া ছাড়া গতি নেই। প্রত্যেক কামরায় শৌচাগার করা হয়তো অবাস্তব, কিন্তু অন্তত বয়স্কদের জন্য আলাদা কামরা সংরক্ষণ করে তাতে শৌচাগারের ব্যবস্থা করা যায় না?
দীর্ঘ বাসযাত্রাতেও বাধ্যতামূলক হোক শৌচাগার সংযোজন। শুধু জনবহুল শহর কেন, যে-কোনও গমনাগমনের রাস্তায় নির্দিষ্ট দূরত্বে শৌচাগার স্থাপিত হোক, আর তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিক স্থানীয় প্রশাসন। নিকটতম শৌচাগারটি কত দূরে, কোন জায়গায় অবস্থিত, সেই নির্দেশক বোর্ড লাগানো হোক— সহজে সকলের চোখে পড়ে, এমন জায়গায়। মহিলাদের ঋতুকালীন প্রয়োজন মেটানোর উপযুক্ত সামগ্রী যেন পাওয়া যায় সেখানে। আর স্ত্রী, পুরুষ এবং তৃতীয় লিঙ্গ— সবার জন্যই সম্মানজনক সংস্থানও আজ সময়ের দাবি (‘লিঙ্গবৈষম্য এড়াতে বিশেষ লোগো’, ১৭-২)।
বিশ্বনাথ পাকড়াশি শ্রীরামপুর-৩, হুগলি
ভয়াবহ
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভেলোর থেকে ফিরছি রাত ১২:৩০-য় ট্রেন। কাঠপাডি স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি। যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেসের ঘোষণা হল। কিন্তু আশ্চর্য, কোন কোচ কোথায় দাঁড়াবে, জানানোর জন্য ডিসপ্লে বোর্ডে কোনও লেখা উঠল না। অনুসন্ধান অফিস থেকে বলা হল, ডিসপ্লে বোর্ডে নম্বর না উঠলে আমাদের কিছু করার নেই। যা হোক, একটু আগে চলে যাওয়া একটি ট্রেনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমরা একটি জায়গায় দাঁড়ালাম। কিন্তু যখন আমাদের ট্রেন ঢুকল, দেখলাম, আমরা দাঁড়িয়ে আছি ট্রেনের একদম বিপরীত প্রান্তে। ভারী ভারী লাগেজ নিয়ে আমাদের কোচের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলাম! অবাক হয়ে দেখি, বেশির ভাগ কামরার দরজা বন্ধ! কোনও মতে আমাদের কোচের চেয়ে চার কোচ আগে উঠে পড়তেই ট্রেন ছেড়ে দিল। দেখি, চরম অব্যবস্থা। কমন প্যাসেজে অনেক লোক শুয়ে আছে। শুয়ে থাকা মানুষের শরীরের ডানে-বাঁয়ে সাবধানে পা ফেলে ফেলে ভারী লাগেজ নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ পর্যন্ত নিজেদের কোচে পৌঁছলাম! স্লিপার ক্লাসের কনফার্মড টিকিট কেটেও যদি এই ধরনের নারকীয় যন্ত্রণার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হতে হয়, তা হলে তো এক্সপ্রেস ট্রেনের উপর বিশ্বাসটাই চলে যাবে!
বিজন মজুমদার রামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
আধারের ফাঁদ
আমি এক জন ৭৫ বৎসরের বিধবা ফ্যামিলি পেনশন ভোক্তা। স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া থেকে পেনশন পাই। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী, আধার কার্ড এবং সেভিংস অ্যাকাউন্ট লিংক করতে হবে এ বছর মার্চ মাসের মধ্যে। সেইমত চার বার চেষ্টা করেছি আমার আধার কার্ডের নামের বানান ঠিক করার জন্য, কারণ আমার পাসবই এবং আধার কার্ডের মধ্যে নামের বানান এক নেই। কিন্ত প্রতিবার সেই চেষ্টা বৃথা হয়েছে বায়োমেট্রিক ম্যাচ না হওয়ার জন্য। এনরোলমেন্ট সেন্টার-এর এজেন্ট প্রতিবার বলছেন আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট ও আইরিস স্ক্যান, সিস্টেম গ্রহণ করছে না। আমার দুই চোখ অপারেশন করা, চোখেও ভাল দেখি না। আঙুলের ছাপ প্রায় মুছে গিয়েছে। কী করব, কোথায় যাব বুঝতে পারছি না। এই পেনশনটুকু আমার এবং আমার একটি অবিবাহিতা মেয়ের সম্বল। আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ, বারবার যাতায়াত করাও খুব কষ্টের।
শেফালী দাশগুপ্তা বারুইপুর
অমানবিক
‘ব্রিজ থেকে নামতেই চোখ বুজে এসেছিল’ (২০-২) শীর্ষক খবর পড়ে অত্যন্ত আতঙ্কিত হচ্ছি। ওই পথ-দুর্ঘটনায় আহত অ্যাপ-ক্যাব চালক সুজয় ঘরামি বলছেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত ডিউটি করতে হয়। সারা রাত ধরে ডিউটি করলে চোখ তো নিমেষের জন্য বন্ধ হতেই পারে। তাই শুধু চালককে একক ভাবে দোষ দেওয়া যায় না। দায়ী অবশ্যই রাঘব-বোয়াল সংস্থাগুলি, যারা কর্মীদের অমানবিকভাবে কাজ করতে বাধ্য করে। আর তার ফলে মেধাবী ছাত্র সায়ন্তন বিশ্বাসের মতো আরও কত যে তরুণ প্রাণ অকালে ঝরে যাবে, ভাবতেই শিহরিত হচ্ছি। এ প্রসঙ্গে এটাও মনে রাখা দরকার, অনেক বেসরকারি, বিশেষ করে বহুজাতিক সংস্থা, তাদের কর্মীদের দিনে ১০ থেকে ১৫/১৬ ঘণ্টা নামমাত্র বেতনে কাজ করতে বাধ্য করে, যা আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের পরিপন্থী।
সূর্যকান্ত দেবনাথ কলকাতা-১৪৬
‘সাল্টে’
‘নীরবে মামলা মেটালেন...’ (২৩-২) প্রতিবেদনে একটি বাক্য পড়লাম, ‘...ত্রিশূরে পৌঁছে ইয়েচুরি শোনেন, বিনয়-বিনীশ মামলা সাল্টে ফেলেছেন।’ যত দূর জানি, সাল্টে বা সালটানো জাতীয় শব্দ কথ্য বাংলাতেই ব্যবহার হয় এবং সে ব্যবহারও কিছুটা অমার্জিত হিসাবেই পরিগণিত হয়। এই জাতীয় শব্দের ব্যবহার কি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে ক্রমশ বাড়তে থাকবে? আর, ‘সাল্টে’ কি বাংলা শব্দ? এর উৎপত্তি ও বিকাশ সম্বন্ধে জানতে চাই।
সুরথ রায় ভদ্রকালী, হুগলি
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy