ছোট ছোট ছেলেমেয়ের মোবাইলের নেশা বোধ হয় সমাজের এক বিরাট ব্যাধির রূপ নিচ্ছে। মা যদি বকেঝকে মোবাইল কেড়ে নেন, আর সেই অভিমানে যদি এক কিশোর নিজের প্রাণ নিয়ে নেয়, তা হলে তো সাঙ্ঘাতিক কথা! এখন দেখা যাচ্ছে, তিন-চার বছরের বাচ্চাও সারা দিন মোবাইল দেখছে! সেখানে যে কার্টুন শো হচ্ছে, সেগুলো না দেখে অনেক বাচ্চা খেতেই রাজি নয়। বহু বাড়িতে গিয়ে দেখেছি, বাচ্চাটি ফোনে মগ্ন, তাকে আদর করলে অবধি সে মুখ তুলে তাকাচ্ছে না। জিজ্ঞেস করে জেনেছি, এই ফোনটি শুধু তার জন্যে বরাদ্দ। মা-বাবা হাত উল্টে বলেছেন, তাঁরা দু’জনেই চাকরি করেন, বিশেষ সময় দিতে পারেন না, তাই অগত্যা বাচ্চাটির একঘেয়েমি কাটানোর উপকরণ হিসেবে মোবাইলটি দিতেই হয়েছে। এই ভাবে বড় হয়ে উঠলে তো এক জন মানুষ মোবাইল কেড়ে নিলে চোখে অন্ধকার দেখবেই।
মুশকিল হল, এই নেশা ছাড়ানোর জন্য যে বয়স্ক মানুষটি বকছেন, তাঁরও হয়তো সমান মোবাইলের নেশা। বা টিভির নেশা। সারা দিন সিরিয়াল দেখে, মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ হাজার বার চেক করে, তার পর সন্তানকে এই নেশা নিয়ে বকাবকি করার অধিকার থাকে কি? এখন মৃত্যু অবধি ডেকে আনছে এই নেশা, হয়তো একে ড্রাগের নেশার মতোই ক্ষতিকর ঘোষণা করার দিন আসছে শিগগিরই!
সুমন দত্ত কলকাতা-৩১
স্বাস্থ্য-সুবিধা
২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নজরুল মঞ্চে ঘোষণা করেন, শিক্ষক, পার্শ্ব শিক্ষক ও সমস্ত অশিক্ষক কর্মীদের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় আনছে রাজ্য সরকার। ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় আবেদনকারী দেড় লক্ষ টাকা সপরিবার বিমার সুবিধা পাবেন, অস্ত্রোপচারে মিলবে সর্বাধিক পাঁচ লক্ষ টাকা। প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে অনেকের ২০১৭ ডিসেম্বর থেকেই, বেতন থেকে চিকিৎসা ভাতা ৩০০ টাকা কাটা হতে থাকে। কিন্তু প্রায় বছর গড়াতে চলল, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশির ভাগ শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী এখনও ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড পাননি, যা দেখিয়ে নির্দেশিত চিকিৎসার সুবিধা পাবেন। এই প্রকল্পের ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া টোল ফ্রি নাম্বারে ও এসআই অফিসে খোঁজ নিলেও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ বেতন থেকে টাকা খুইয়েও সুবিধা পাচ্ছেন না অনেকে।
শ্রীমন্তকুমার দাস বামনাসাই, পশ্চিম মেদিনীপুর
হেল্পলাইন
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের হেল্থ স্কিমের আওতায় থাকা রোগী দেখলেই ‘বেড নেই’ বলে এড়িয়ে যায় বহু নামী হাসপাতাল, যাদের নগদে চিকিৎসা প্রার্থীর সংখ্যা বেশি। সরকার একটা হেল্পলাইনের ব্যবস্থা করুক, যেখানে তৎক্ষণাৎ অভিযোগ দাখিল করা যায়।
বাসুদেব দত্ত চৈতলপাড়া, শান্তিপুর
বালি
পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনের বর্ধমান মেন ও কর্ড লাইন এবং শিয়ালদহ ডিভিশনের ডানকুনি-বর্ধমান লাইনের সংযোগস্থল বালি এক গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন, যার উপর দিয়ে উত্তর, পশ্চিম ও উত্তর-পূর্ব ভারতগামী মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াত করে। হাওড়া স্টেশনের ওপর চাপ কমাতে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের যেমন শালিমার ও সাঁতরাগাছি এবং শিয়ালদহের কলকাতা টার্মিনাল চালু হয়েছে, বালিতে তেমন টার্মিনাল হলে হাওড়া স্টেশন থেকে ছাড়া ও পৌঁছনো দূরপাল্লার অনেক মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বালি থেকে যাত্রা শুরু ও শেষ করতে পারে, যাতে হাওড়া থেকে আরও বেশি সংখ্যক লোকাল এবং স্বল্পপাল্লার ট্রেন চালানো যায়।
বালিতে রেল টার্মিনাল গড়ে তুলতে জমি অধিগ্রহণের দরকার হবে না, কারণ সুবিশাল রেল কলোনি, রেল গোডাউন আর মেন ও কর্ড রেল লাইনের মধ্যবর্তী রেলের নিজস্ব জমিই এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট।
এ সকল সুবিধা ছাড়াও বালি স্টেশনের পাশেই রয়েছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে (এনএইচ-২), বম্বে রোড (এনএইচ-৬), দিল্লি রোড, আর কাছেই জিটি রোড। নিকটবর্তী গঙ্গার ওপর পাশাপাশি বালি ব্রিজ (বিবেকানন্দ সেতু) ও নবনির্মিত নিবেদিতা সেতু হয়ে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বিটি রোড, যশোর রোড, বিমানবন্দর, ভিআইপি রোড, বাইপাস হয়ে মহানগরীর যে কোনও প্রান্তে সহজেই পৌঁছনো যাবে। অতএব, যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনায় বালিতে এক সর্বাধুনিক বহুতল টার্মিনাল বিল্ডিং নির্মাণ করা হোক, যার নিম্ন তলে রেলওয়ে প্ল্যাটফর্ম, টিকিট কাউন্টার, যাত্রী প্রতীক্ষালয়-সহ রেলের অফিস এবং পরবর্তী বিভিন্ন তলায় বিশ্রামাগার, রেস্তরাঁ, কাফেটেরিয়া, প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র, ওষুধপত্র, পত্রপত্রিকা ও বইয়ের দোকান, গাড়ি পার্কিং, আধুনিক শপিং মল ইত্যাদির ব্যবস্থা থাকবে।
এই ভাবে সমগ্র অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে বালি মেন ও কর্ড স্টেশনের সঙ্গে বালি হল্ট স্টেশনের সংযুক্তি আর টার্মিনাল থেকে সরাসরি জিটি রোড, দিল্লি রোড ও এক্সপ্রেসওয়ে যাওয়ার উড়াল পথে সংযোগ থাকবে।
সর্বোপরি, দমদম-দক্ষিণেশ্বর মেট্রো রেলকে মাত্র দুই কিলোমিটার সম্প্রসারণ করলে (যা পরবর্তী কালে ডানকুনি পর্যন্ত বাড়ানো যায়) বালি হয়ে উঠবে পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ যাত্রী টার্মিনাল, যা অবস্থানগত নানা সুবিধার কারণে ভবিষ্যতে সড়ক, রেল ও জলপথে হাওড়া বা শিয়ালদহের তুলনায় কলকাতা মহানগরীর তথা পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার রূপে স্বীকৃতি পাবে।
সৌমিত্র খাসনবিশ উত্তরপাড়া, হুগলি
আগে এসে
আমরা কেন্দ্রীয় সরকারি কাজে অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা, সপ্তম বেতন কমিশনের রিভাইজ়ড পিপিও-র যে ০.১১% বৃদ্ধি হয়েছে, তার কোনও স্বাদ পেলাম না। বিশেষ করে রেল, প্রতিরক্ষা ও ডাক-তার বিভাগের বৃদ্ধবৃদ্ধারা। অথচ যাঁরা সদ্য অবসর নিয়েছেন, তাঁরা এর সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। এখন আমাদের বয়স ৮০-৮৮ বৎসরের ঘরে। আমরা বৃদ্ধির স্বাদ উপভোগ করতে পারছি না। অথচ ৬২-৬৭ বৎসর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা উপভোগ করছেন। আমরা আগে চাকরিতে যোগ দিয়েছি বলে আমরা পরে পাব, যাঁরা পরে ঢুকেছেন তাঁরা আগে পাবেন— অবিচার নয়?
সন্তোষ ঘটক সোদপুর
ময়নাগড়
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গর্বের ঐতিহাসিক স্থান ময়নাগড়। ইতিহাসের পাতায় যা কর্ণসেন গড় বা লাউসেন রাজার গড় নামেও পরিচিত। সহস্র বছরের গৌরবময় ঐতিহ্য নিয়ে প্রশাসনিক উদাসীনতায় ময়নাগড় আজ মুখ ঢাকে লজ্জায়! নষ্ট হতে বসেছে বহু দুর্মূল্য প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান। সংরক্ষণের নেই কোনও ব্যবস্থা। অথচ ২০০৬ সালে ‘পশ্চিমবঙ্গ হেরিটেজ কমিশন’ স্থানটিকে ‘সংরক্ষিত এবং ঐতিহ্যসম্পন্ন পুরাকীর্তি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। তার পর গড়িয়েছে দীর্ঘ বারোটা বছর। কমিশনের পক্ষ থেকে না হয়েছে কোনও পরিদর্শন, না পর্যবেক্ষণ, না কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ, না অর্থ বরাদ্দ, না করা হয়েছে কোনও উদ্যোগ। হয়েছে কেবল নোটিস জারি।
আকাশনীল মাইতি খারুই, পূর্ব মেদিনীপুর
ভ্রম সংশোধন
‘মরিবার হল তাঁর সাধ’ লেখাটিতে (পৃ. ৪, ২৮-৬) একটি তথ্যের ভুল রয়ে গিয়েছে। আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপে আইসল্যান্ডের কাছে হারেনি, ড্র করেছিল। ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে তারা তিন গোলে হেরে যায়। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy