Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: রেল কামরা থেকে

শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরায় যাঁরা ভ্রমণ করছেন, তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি ভাল বলেই তো মনে হয়। ঘরে একটা তোয়ালে বা বালিশ নেই, তাও বিশ্বাসযোগ্য নয়।

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৫৫
Share: Save:

১.৯৫ লক্ষ তোয়ালে, ৮১,৭৩৬টি বেডশিট, ৫৫,৫৭৩টি বালিশের কভার। গত অর্থবর্ষে এই জিনিসগুলি, এবং এই সংখ্যায়, চুরি গিয়েছে দেশ জুড়ে দূরপাল্লার ট্রেন থেকে। তালিকায় বালিশ আর কম্বলও আছে, সংখ্যায় একটু কম, যথাক্রমে ৫,০৩৮ আর ৭,০৪৩টি। আকারে বড়, ওজনে ভারী বলেই বেশি খোয়া যায়নি। নিয়েছে কারা? ট্রেনে মূলত এসি-টু আর থ্রি-টিয়ারেই ‘বেড রোল’ দেওয়া হয়, সবার জানা। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কামরায় যাঁরা ভ্রমণ করছেন, তাঁদের আর্থিক সঙ্গতি ভাল বলেই তো মনে হয়। ঘরে একটা তোয়ালে বা বালিশ নেই, তাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার পরেও এই চুরির খবর প্রমাণ করে, কী বিচিত্র এই মনুষ্যচরিত্র! খবরে এও পড়লাম, ট্রেনের বাথরুম থেকে লোহার কল, মগও খুলে নিয়ে গিয়েছে। এক বিদেশি বন্ধুর কথা মনে পড়ল, ট্রেনের বাথরুমে চেন দিয়ে বাঁধা মগ দেখে সে তাজ্জব বনে গিয়েছিল। কে জানে, এ বার থেকে হয়তো বালিশ-কম্বল বেডশিটও চেন-আঁটা থাকবে! বা, বেড রোলই থাকবে না, কামরাও সাফসুতরো!

দীপঙ্কর সেন
মধ্যমগ্রাম

হাঁসকাটা সময়

উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘জোটের নির্দিষ্ট কর্মসূচি চাই’ (১৮-৯) শীর্ষক নিবন্ধের উপশিরোনামে বলা হয়েছে “রাজনীতিকে ব্যক্তি থেকে নীতির প্রশ্নে নিয়ে যাওয়া জরুরি”। দলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দলের মনোনীত ব্যক্তি জনপ্রতিনিধিত্বের জন্য ভোটের লড়াই লড়েন। অর্থাৎ সাধারণ নির্বাচনের আগে এক প্রস্ত ‘অসাধারণ’ নির্বাচনে জিতে আসেন তাঁরা। স্বাভাবিক ভাবেই এই অসাধারণ নির্বাচনে জনগণের মতামতের জায়গা থাকে না। কাজেই এই অসাধারণ নির্বাচনগুলিতে বিভিন্ন দলের মুষ্টিমেয় অসাধারণ নির্বাচক বা সুপার সিলেক্টর (যথা পলিটবুরো, হাইকমান্ড ইত্যাদি), তাঁদের নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করবে— এমন কয়েক জনকে তুলে ধরেন ভোটারদের সামনে। এই সুপার সিলেক্টররা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গৌরবে বহুবচন। প্রকাশ কারাট, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সনিয়া গাঁধী, অমিত শাহ, লালুপ্রসাদ, মায়াবতী... এঁরা শুধু একনায়কত্বের উদাহরণ নন, বরং ঐতিহ্য। এই ব্যবস্থায় কি নীতির জায়গা আছে সামান্যতম? তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া যায় আছে, ভাবা দরকার সে কেমন নীতি? কার কল্যাণের ‍জন্য নীতি? কিসের নীতি?

ক্ষমতায় আসার কয়েক মাসে যাঁদের সম্পদে ৩০০০ শতাংশ সুইং দেখা যায়, সর্বহারাদের জন্য জীবনপণ করা যাঁদের ছুটি সুইৎজ়ারল্যান্ডে যাপিত হয়, যাঁদের হাত দিয়ে কোটি কোটি টাকা গলে যায় উৎসব মোচ্ছবের মোড়কে, কিংবা হিন্দু সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিজ়মের বিরোধিতায় যে সব তরুণ তুর্কি আজ এই মন্দির কাল ওই সরোবরে মাথা ঠোকেন, তাঁদের নীতি আর যা-ই হোক বৃহত্তর জনগণের কল্যাণকামী হবে না। বড়জোর থোড় বড়ি খাড়া শিল্পপতিদের বদলে, খাড়া বড়ি থোড়দের পেশি ফোলে সে নীতিতে।‌

ব্যক্তি থেকে নীতির প্রশ্নে পৌঁছতে গেলে এই সুপার সিলেক্টরদের নাগপাশ থেকে ছাড়া পেতে হবে। দলগুলোকে নীতি তালিকা তৈরি করতে এবং ভোটের পর সেই তালিকা মেনে চলতে সাংবিধানিক ভাবে দায়বদ্ধ করতে হবে। ভোটে কোনও ব্যক্তি নয়, ওই তালিকাভুক্ত নীতির পক্ষে ও বিপক্ষে মতবিনিময়ের ব্যবস্থা করতে হবে। স্বভাবতই ভোট আর উৎসব থাকবে না, রীতিমতো কাজ হয়ে উঠবে।

কখনও ধর্মীয় উগ্রতা, কখনও বাহিনী দিয়ে জমি দখল, কখনও অর্থনৈতিক সংস্কারের কড়া দাওয়াই, কখনও যুদ্ধ, কখনও দাঙ্গা, কখনও জরুরি অবস্থার চোখরাঙানি, কখনও সন্ত্রাস, কখনও সন্ত্রাসবাদের জুজু দেখিয়ে ক্ষমতাবানরা হাত-বদলাবদলি করে নিজেদের প্রতিপত্তি বজায় রেখে যান। কেউ কেউ এ হেন সোনার ডিম দেওয়া হাঁসটিকে কেটে ফেলে সবটা নিজের ৫৬ ইঞ্চি ছাতিতে পুরে ফেলার চেষ্টা করলে বাকিদের ঠাটবাট টাল খেয়ে যায়, তখনই নীতি, জনকল্যাণ, শ্রমিকের রক্ত কৃষকের ঘামের ডাক পড়ে। এটা তেমনই একটা হাঁসকাটা সময় মাত্র।

অরিজিৎ কুমার

ইমেল মারফত

খেলনা পাসপোর্ট

আমি এক জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। আমার পাসপোর্ট রিনিউ করার জন্য অনলাইনে ফর্ম ফিল-আপ করে ২১-৩-২০১৮ তারিখে কৃষ্ণনগর পাসপোর্ট অফিসে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাই। আমার পুরনো পাসপোর্ট, সে জন্য আধার কার্ডের জ়েরক্স ছাড়া অফিসে আর কিছু জমা নেয়নি। দীর্ঘ দিন পাসপোর্ট পাইনি। চাকদহ থানা কৃষ্ণনগর অফিসে কোনও হদিস না পেয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ২-৭-২০১৮ তারিখে রিজিয়োনাল পাসপোর্ট অফিসে যাই। সারা দিনের পর, মাঝে কয়েক বার অফিসের ভিতরে যেতে হয়েছিল, আমাকে বলা হল চলে যেতে। কী কারণে দেরি, কী সমস্যা কিছুই বুঝিনি।

৭-৭-২০১৮ তারিখে আমি পাসপোর্ট হাতে পাই। ১১-৭-২০১৮ আমাকে ফোনে জানানো হল, পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। এক ভদ্রলোক এসে আমাকে বললেন বাড়ির দলিল, স্কুল সার্টিফিকেট, বাবা, মা ও আমার ভোটার কার্ড, রেশন কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি ন’টি নথিপত্র নিয়ে পর দিন থানায় দেখা করতে। আমি জানালাম, আমি পাসপোর্ট পেয়ে গিয়েছি, উনি বললেন তা-ও যেতে হবে। একশো টাকা তেল খরচ বাবদ আমার থেকে নিলেন।

পর দিন চাকদহ থানায় গিয়ে বহু ক্ষণ অপেক্ষার পর ডাক পড়ল অফিসারের ঘরে। তিনি কাগজপত্র দেখছিলেন। আগের দিনের ভদ্রলোক অফিসারকে জানালেন, আমি পাসপোর্ট পেয়ে গিয়েছি। অফিসার বললেন, ওই পাসপোর্টের কোনও মূল্য নেই। পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া আমার পাসপোর্টটা নাকি ‘খেলনা পাসপোর্ট’। আমি কোনও যুক্তিতর্কে যাইনি। আগের দিনের ভদ্রলোক অফিসারের সামনেই মিষ্টি খাওয়ার জন্য দু’শো টাকা দাবি করেন। আমার জিজ্ঞাস্য, ওই খেলনা পাসপোর্ট ভারত সরকার কেন পাঠাল। আর আমি সত্যিকারের পাসপোর্ট কবে পাব, যেটা আমি ব্যবহার করতে পারি।

সুপ্রীতি সেন

মদনপুর, নদিয়া

হেমেন্দ্রমোহন

রূম্পা দাসের লেখা ‘অমলিন সুবাসের রূপকার’ (পত্রিকা, ২৫-৮) নিবন্ধে হেমেন্দ্রমোহন বসুর স্মৃতিচারণা পড়ে খুব ভাল লাগল। হেমেন্দ্রমোহন সম্পর্কে আমার আপন ঠাকুরদা। মুগ্ধতার পাশাপাশি, একটি তথ্যভ্রান্তি ধরিয়ে দেওয়ার জন্য এই চিঠি। লেখা হয়েছে, ‘‘১৯২০ সাল নাগাদ মটর গাড়ির ব্যবসা বন্ধ করে দিলেন হেমেন্দ্রমোহন।’’ কিন্তু হেমেন্দ্রমোহন পরলোকগমন করেন ১৯১৬ সালে। অতএব ১৯২০ সালে তাঁর এই ভূমিকা অসম্ভব।

আসলে তাঁর তিরোধান কাল পর্যন্ত সব ব্যবসাই পুরোদমে এগিয়ে চলেছিল। শুধু গ্রামোফোন বাজারে এসে যাওয়ায়, সেটির কারিগরি-গত উন্নত মানের আভাস তিনি পেয়েছিলেন। তাই তিনি একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হতে চলেছিলেন। শর্ত ছিল, হেমেন্দ্রমোহন প্যাথেফোন-এর ব্যবসা পুরোপুরি গুটিয়ে নেবেন, আর পরিবর্তে গ্রামোফোন কোম্পানির লভ্যাংশের চার আনার অংশীদার হবেন। কিন্তু তাঁর অকালমৃত্যুতে ওই চুক্তি আর বাস্তবায়িত হয়নি।

সুগতমোহন বসু

কলকাতা-৯

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

ভ্রম সংশোধন

• ‘বেতারের প্রাণপুরুষ...’ (পত্রিকা, ৬-১০) নিবন্ধের সঙ্গে প্রকাশিত বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের তিনটি ছবি (যুবা বয়সের, আকাশবাণীতে ও বেতারের আর একটি নাটকে) পরিমল গোস্বামীর তোলা। কিন্তু চিত্রগ্রাহকের নাম দেওয়া হয়নি।
• সুভাষ সরকারের চিঠির (সম্পাদক সমীপেষু, ১-১০) শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘শেড নেই’। কিন্তু চিঠির বিষয়বস্তু ছিল, দক্ষিণেশ্বর রেলস্টেশনে শেড আছে, পাখা নেই।

অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Railway Train Passengers Stealing
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE