Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: রামকিঙ্কর ও পাহাড়

রবীন্দ্রনাথ স্টেলা ক্রামরিশকে শান্তিনিকেতনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ১৯২০ সালের ১৯ অথবা ২০ জুন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ অক্সফোর্ডে ছিলেন।

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৬
Share: Save:

‘দেখিলাম ফিরে’ (পত্রিকা, ২৪-৩) শীর্ষক রামকিঙ্কর সম্পর্কিত রচনাটি পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। কয়েকটি সংশয় দেখা দিয়েছে বলে এই চিঠি।

‘পাহাড় কাটা’ উপশিরোনামের তলায় লেখা হয়েছে, ‘‘স্টেলা ক্রামরিশ তাঁকে (রামকিঙ্করকে) মাঝে মাঝেই বলতেন, ‘কিঙ্কর, একটা পাহাড় ধরো’।’’ এই কথা ক্রামরিশ রামকিঙ্করকে কবে ও কোথায় বলেছেন সে সম্পর্কে কোনও উৎস-নির্দেশ এই আলোচনায় নেই।

রবীন্দ্রনাথ স্টেলা ক্রামরিশকে শান্তিনিকেতনে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ১৯২০ সালের ১৯ অথবা ২০ জুন। সেই সময় রবীন্দ্রনাথ অক্সফোর্ডে ছিলেন। ক্রামরিশ তখন সেখানে ভারতীয় শিল্প সম্পর্কে তিনটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। প্রথম বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘হিন্দু টেম্পল’। বক্তৃতা শেষে রবীন্দ্রনাথ তাঁর সঙ্গে আলাপ করেন। তখনই তাঁকে শান্তিনিকেতনে আসার জন্য আমন্ত্রণও জানান।

ক্রামরিশ শান্তিনিকেতনে পৌঁছেছিলেন ১৯২১ সালের ২১ ডিসেম্বর। ১৯২২ সালের ২৮ মার্চ তিনি ভারতের শিল্পকলা নিয়ে স্লাইড সহযোগে বক্তৃতা দেন। তার পর ধারাবাহিক কয়েকটি বক্তৃতায় তিনি বলেন পাশ্চাত্যের গথিক শিল্প থেকে কিউবিজম পর্যন্ত বিষয়ে। রবীন্দ্রনাথের নির্দেশে এ-সব বক্তৃতায় শিক্ষক ও ছাত্র সকলের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক ছিল।

রামকিঙ্কর শান্তিনিকেতনে এসে কলাভবনে ভর্তি হন ১৯ বছর বয়সে ১৯২৫ সালে। তিনি পুরোপুরি ভাস্কর্যে নিমগ্ন হন ১৯২৮ সালের পরে। ক্রামরিশ বেশি দিন শান্তিনিকেতনে থাকেননি। ওখানকার প্রচণ্ড গরম তাঁর সহ্য হচ্ছিল না। ১৯২২-এর মে মাসের পরে তিনি শান্তিনিকেতন ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার ভাইস চ্যান্সেলর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ডিয়ান আর্টের লেকচারার পদে যোগ দেন। এর পর তাঁর সঙ্গে শান্তিনিকেতনের যোগাযোগ ক্ষীণ হয়ে যায়।

তা হলে কি স্টেলা ক্রামরিশের সঙ্গে রামকিঙ্করের পরে কোথাও দেখা হয়েছিল? এবং তখন তিনি তাঁকে ওই পাহাড় কাটা-র কথা বলেছিলেন? এ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য ও উৎস জানতে আমরা আগ্রহী।

এর পরেই লেখক লিখেছেন, ‘পাহাড়ও তিনি ধরলেন। দিল্লিতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে আজও আছে ২১ ফুটের সেই যক্ষ-যক্ষীর মূর্তি।’ কিন্তু যক্ষ-যক্ষী মূর্তি তো পাহাড় কেটে তৈরি হয়নি। পাহাড় থেকে তিনি পাথর কেটে এনেছিলেন মাত্র। এখানেও একটা ভুল বোঝার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে।

মৃণাল ঘোষ কলকাতা-১১০

প্রতিবেদকের উত্তর: আপনার দ্বিতীয় সংশয়ের উত্তরে বলি, অবশ্যই বৈজনাথের পাহাড় থেকে রামকিঙ্কর পাথর কেটে এনেছিলেন। ভাকরা-নাঙ্গাল বাঁধের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ব্লাস্ট করিয়ে কীভাবে পাথর কাটা হল, ন্যারো গেজ ওয়াগনের মাপ বদলে কেমনভাবে তা পাঠানকোট এবং সেখান থেকে ব্রডগেজ লাইনে দিল্লিতে আনা হল, তা নিবন্ধে আছে। প্রথম সংশয়ের উত্তরে জানাই, এই উক্তিটি রামকিঙ্করের প্রতিবেশী ও বয়োকনিষ্ঠ বন্ধু সোমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ‘শিল্পী রামকিঙ্কর আলাপচারি’ বই থেকে নেওয়া।

ডেডলাইন

কোনও সংবাদ লেখার শুরুতে লেখাটির উৎসস্থল ও তারিখ উল্লেখ করা বিধেয়। এটিকেই সাংবাদিকতার পরিভাষায় ‘ডেটলাইন’ বলা হয়। কিন্তু ‘দেখিলাম ফিরে’ নিবন্ধে লেখক একাধিক বার ‘ডেটলাইন’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ‘সময়সীমা’ অর্থে। ঠিক শব্দটি হবে ‘ডেডলাইন’।

প্রশান্ত সমাজদার ই-মেল মারফত

কুলেখাড়া

কুলেখাড়া রক্তাল্পতার (অ্যানিমিয়া) সহজ ওষুধ হতে পারে না। অ্যানিমিয়ার কারণ অনুসন্ধান করে ওষুধ খাওয়া উচিত। আমাদের দেশে বেশির ভাগ অ্যানিমিয়াই ‘নিউট্রিশনাল অ্যানিমিয়া’, অর্থাৎ অপুষ্টিজনিত এবং ঠিক খাবার না খাওয়ার জন্য। তা ছাড়া জলবাহিত কিছু কারণ আছে, যেমন আমাশয়, আছে কৃমির প্রকোপ।

কুলেখাড়ায় প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ থাকলেও, রান্না করলে এই ভিটামিন নষ্ট হয়ে যায়। এই পাতার রস খেলে রোগীর কতটা উপকার বা অপকার হবে, জানা যায়নি। কারণ খুব বেশি শাক-পাতা খেলে (কাঁচা বা রান্না করা), হজম করা কষ্টসাধ্য।

অ্যানিমিয়া দূর করতে হলে সুষম আহার পেট ভরে খেতে হবে। খাদ্য তালিকায় প্রোটিন (মাছ, মাংস, ডিম), ফল, বিভিন্ন শাক-সবজি, দুধ থাকা বাঞ্ছনীয়। হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে শুধু আয়রন নয়, প্রথম শ্রেণির প্রোটিন চাই। আয়রনের পরিবর্ত কোনও ভেষজ বা আনাজপাতি হতে পারে না।

অর্চনা ভট্টাচার্য চুঁচুড়া, হুগলি

ইন্দিরা ও যুদ্ধ

বাকিটা ইতিহাস (২৫-৩) প্রসঙ্গে জানাই, অশোক পার্থসারথির স্মৃতি হয়তো ঠিক সহযোগিতা করেনি। ৩ জানুয়ারি, ১৯৭১ ইন্দিরা গাঁধী কলকাতায় এসেছিলেন, গুয়াহাটিতে নয়। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে বিশাল জনসভায় ইন্দিরা বক্তৃতা দিয়েছিলেন, সেখান থেকে গিয়েছিলেন রাজভবন। সেখানে কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে একটা বৈঠক চলাকালীন দিল্লি থেকে সংবাদ আসে, পাকিস্তান পশ্চিম সীমান্তে বিমান হানা করেছে। সিদ্ধার্থশংকর রায় সংবাদটি ইন্দিরাকে দেন। ইন্দিরা মিটিং শেষ করে দিল্লি উড়ে যান। তাঁর বিমানকে এসকর্ট করে নিয়ে যায় এয়ারফোর্সের একাধিক বিমান। রাত বারোটার পরে আকাশবাণী থেকে ইন্দিরার ভাষণ প্রচারিত হয়। ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।

সে-দিন চার দেওয়ালের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছিল তা আমাদের জানার কথা নয়, তবে পাকিস্তান আক্রমণ করবে জেনে ইন্দিরা দিল্লি ছেড়ে অন্যত্র গিয়েছিলেন শুধু ভারত আক্রমণকারী নয় প্রমাণ করার জন্যে— এটা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। ইন্দিরা দিল্লিতে থাকলেও প্রথম আক্রমণের দায় পাকিস্তানকেই নিতে হত।

ত্রিদিবেশ বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীরামপুর, হুগলি

দেখিনু সে দিন

সে দিন দুপুরের তীব্র রোদের মধ্যে, এক অল্পবয়সি আখের রস বিক্রেতা ছেলের আখগুলো এক সার্জেন্ট টেনে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিল। ছেলেটা কুড়োনোর আগেই চলন্ত বাস, ট্যাক্সি আখের ওপর দিয়ে পিষে চলে গেল। ছেলেটা নাকি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে যানবাহনের গতি শ্লথ করছিল। গরিবের ওপর এই মাতব্বরি ক’দিন চলবে!

প্রদ্যোৎ চট্টোপাধ্যায় ই-মেল মারফত

‘তুমি’

টিভিতে জেলার প্রশাসনিক সভার সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছিল। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী ছোট-বড় নির্বিশেষে প্রায় সব আধিকারিককেই ‘তুমি’ সম্বোধন করছিলেন। আমার ছোট্ট নাতির প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী কি সবার থেকে বড়? বললাম, উনি সকলের থেকে সম্মানে অনেক বড়। সম্মানে বড় হলেই কাউকে ‘তুমি’ বলার অধিকার জন্মায় না, তা আর বলিনি।

ধীরেন্দ্র মোহন সাহা কলকাতা-১০৭

ভ্রম সংশোধন

‘মহাযজ্ঞ শুরু ৭ এপ্রিল, কোন দল কেমন হল? আইপিএল গাইড...’ (৪-৪, পৃ ১৫) প্রতিবেদনে জয়দেব উনাদকাট-কে কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটার লেখা হয়েছে। ঠিক তথ্যটি হল, উনাদকাট ২০১৮ আইপিএল-এ খেলছেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ramkinkar Mountain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE