Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: মহা গন্ডগোল

অষ্টমী ও নবমী ছাড়া অন্যান্য তিথি ‘মহা’ পদবাচ্য নয়। যে হেতু অষ্টমী ও নবমী তিথিতে দেবীর মহাপূজা সংঘটিত হয়; তাই এই দুই তিথির পূর্বে ‘মহা’ পদ যোগ করা যায়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০৩
Share: Save:

‘মহা’ নিয়ে মহাজ্বালাতনে পড়া গিয়েছে! যে যার ইচ্ছে মতো প্রতিপদ থেকে সব তিথির আগে ‘মহা’ যোগ করে যাচ্ছে। আপনাদের সংবাদপত্রেও অনুরূপ ভুল। অষ্টমী ও নবমী ছাড়া অন্যান্য তিথি ‘মহা’ পদবাচ্য নয়। যে হেতু অষ্টমী ও নবমী তিথিতে দেবীর মহাপূজা সংঘটিত হয়; তাই এই দুই তিথির পূর্বে ‘মহা’ পদ যোগ করা যায়। ষষ্ঠী দিবসে কল্পারম্ভ, সন্ধ্যায় বোধন, আমন্ত্রণ, অধিবাস এবং সপ্তমী দিবসে প্রতিমাস্থ দেবদেবীদের প্রাণপ্রতিষ্ঠা ও কেবলমাত্র তাঁদেরই পুজো হয়। দেবীর আভরণ দেবতাদের (উগ্রচণ্ডাদি অষ্টশক্তি, অসিতাঙ্গাদি ভৈরব, যোগিনীগণ, নবদুর্গা প্রমুখ) পুজো হয় না।

অনিরুদ্ধ সরকার

পতিরাম, দক্ষিণ দিনাজপুর

প্রয়াগরাজ

‘বদলে প্রয়াগরাজ’ (১৪-১০) পড়ে এই পত্র। সংবাদে প্রকাশ, উত্তরপ্রদেশ সরকার এ বার ইলাহাবাদ শহরের নাম বদলে প্রয়াগরাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেখানে কিছু দিন আগে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের নামে মুঘলসরাই স্টেশনের নাম পরিবর্তিত হয়েছে। দীনদয়াল উপাধ্যায় নিঃসন্দেহে এক জন যুগপুরুষ। তবে তাঁকে সম্মানিত করতে, স্মরণীয় করে রাখতে নতুন কিছু মহৎ নির্মাণ তাঁর নামে অঙ্কিত হতে পারত। মুঘলসরাই স্বাভাবিক ভাবে, কালের প্রবাহে সৃষ্ট একটি নাম। কোনও ব্যক্তি তাঁর কীর্তি, নাম বা অন্য কিছু অক্ষয় করে রাখতে এই স্থানের এই নামকরণ করেননি। ইতিহাস তাকে এই নাম দিয়েছে। একই ভাবে প্রয়াগও একটি কালজয়ী নাম। ভারতীয় সভ্যতার সমবয়স্ক প্রয়াগ হর্ষবর্ধনের সময় ছিল একটি আলোকোজ্জ্বল নগরী। প্রয়াগের মেলা ছিল তাঁর বাৎসরিক দানক্ষেত্র। এখনও ভারতের বহু মানুষ ব্যাপক ভাবে একে তার পুরনো নামেই চেনেন। আরোপিত ইলাহাবাদ নাম একে মুছে দিতে পারেনি। তিন হাজার বছর বয়সি ‘কাশী’কে (বারাণসী) যেমন মুছে দিতে পারেনি তার আকবরাবাদ নাম। ঐতিহ্য ও সময়ের কাছে হার মেনেছে ব্যক্তি। সময়ের গতি কলকাতাকে কলকাতা নাম দিয়েছে, দিল্লিকে দিল্লি। চেষ্টা করেও কলকাতাকে আলিনগর করা যায়নি। দিল্লিকে করা যায়নি শাহজাহানাবাদ। এলাহাবাদ নামটি আল্লাহবাদ (Allahabad) কথাটি থেকে এসেছে। ভারতের মুসলমান যুগে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু এ নাম উচ্চারণে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন না। দু’প্রান্ত বজায় রাখতে একে ডাকতেন ইলাহাবাদ বলে। রাজা পাল্টে গেলে বা সরকার পাল্টে গেলে জায়গার নামও পাল্টে যাবে, এ কোনও কাজের কথা নয়। প্রয়াগের ক্ষেত্রে অবশ্য বিষয়টি আলাদা।
সনাতন পাঠক
ইমেল মারফত

অর্বাচীন নয়

‘রাজা তোর কাপড় কোথায়’ (২৪-১০) নিবন্ধে ‘ব্যাঙের রাজা’ গল্প শুনিয়ে জয়ন্ত ঘোষাল পাঠকদের এক রকম অর্বাচীন ভেবে নিয়েছেন। পাঠকরা কিন্তু কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা, তা বোঝেন। জয়ন্তবাবু লিখেছেন, ‘‘সাড়ে চার বছর অতিবাহিত। নির্বাচন আবার দরজায় কড়া নাড়ছে। ...গোটা দেশ জুড়ে অর্থনীতির কান্না। বিদেশি বিনিয়োগ বাজারে আশা তো দূরের কথা, ভারতীয় বাজার থেকে কোটি কোটি টাকার লগ্নি প্রত্যাহৃত হচ্ছে। পেট্রলের দাম ডিজ়েলের দাম আকাশ ছুঁয়েছে...। নোট বাতিল, জিএসটি— প্রতিটি উদ্যোগে দেশের ধনী-দরিদ্র মধ্যবিত্ত সব গোষ্ঠীই তিতিবিরক্ত। চাকরিবাকরি নেই। বেকারদের হাহাকার, আবার অন্য দিকে কৃষকদের আত্মহত্যার সংখ্যাও বাড়ছে বই কমছে না।’’ তা-ই কি? তা হলে এত চিন্তা কিসের? মোদীর পতন তো তবে অবশ্যম্ভাবী!
দেশ স্বাধীন হয়েছে সত্তর বছরেরও বেশি। মোদী ক্ষমতায় এসেছেন সাড়ে চার বছর আগে। প্রশ্ন হচ্ছে, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার আগে যে সরকারগুলি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসীন ছিল তাদের আমলে কি ভারতের অর্থব্যবস্থা থেকে শুরু করে, শিল্প, বাণিজ্য, বিদেশি বিনিয়োগ, স্বাস্থ্য, পরিবহণ, চাকরিবাকরি, কৃষকদের অবস্থা আজকের চেয়ে খুব ভাল ছিল? তখন কি কৃষক-আত্মহত্যা, বেকারি, পেট্রল ডিজ়েল-সহ বিভিন্ন নিত্যব্যবহার্য পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইত্যাদি ঘটেনি? আর যদি সেই সরকারগুলির আমল থেকে ভারতের সব কিছুর সত্যিকারের প্রভূত উন্নতি ঘটে তবে মোদী কেন, তাঁর চোদ্দো পুরুষের ক্ষমতা নেই সাড়ে চার বছরের অপশাসন দিয়ে সেই অগ্রগতিকে পিছিয়ে দেওয়ার, যার ফলে ‘গেল গেল রব’ তুলে মোদী-বিরোধিতার পালে হাওয়া জোগানো যায়।
সব দলই ক্ষমতার আসার আগে প্রতিশ্রুতি দেয়। তার সবগুলিই যে সমান ভাবে বাস্তবায়িত হয় বা হয়েছে এমন নয়। ইন্দিরা গাঁধীর ‘গরিবি হটাও’ কিংবা রাজীব গাঁধীর ‘মেরা দেশ মহান’— আক্ষরিক অর্থে এই সব কিছুর প্রতিফলন দেশে ঘটেছে কি? মোদীর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হবে, এটা ভাবা অস্বাভাবিক। বিগত ষাট বছর ধরে এতগুলি কেন্দ্রীয় সরকার দেশের মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারেনি, মোদী সাড়ে চার বছরে সেই পরিবর্তন এনে দেবেন— এমন ভাবাটা চিন্তাভাবনার দেউলিয়াপনারই পরিচায়ক। সরকারের বিরোধিতা করা ভারতীয় রাজনীতির এক সাংস্কৃতিক দস্তুর দাঁড়িয়েছে।
মিহির কানুনগো
কলকাতা-৮১

তুলনাটা ঠিক নয়

জয়ন্তবাবুর লেখাটিতে ‘ব্যাঙের রাজা’ গল্পটির সঙ্গে এখনকার দেশের ব্যবস্থার তুলনাটা ঠিক মনে হল না। আমি মোদীর অন্ধ ভক্ত নই, অবকাশপ্রাপ্ত সাধারণ বয়স্ক নাগরিক। তবে কংগ্রেসের বশংবদতার বিরোধী। বর্তমান সরকারের অনেক ত্রুটি, তাই সমালোচনা নিশ্চয়ই জরুরি। কিন্তু ষাট বছরের ওপর একটি বংশের দ্বারা রাজত্ব করা দল, যে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে দলিত এবং সংখ্যালঘু তাস খেলে গেল, এদের কতটা উন্নতি হয়েছে? এখনকার শাসক দলটি একটু হিন্দু-ঘেঁষা, তাতে দোষ কোথায়?
গ্যাস, রেশন, একশো দিনের কাজে প্রত্যক্ষ ভর্তুকি, ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা— এগুলো দুর্নীতি বন্ধ করার একটি ধাপ। বিদেশে ভারতের একটি ভাল ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। উন্নয়নের প্রচেষ্টা চলছে। যতটা ‘অচ্ছে দিন’ বলেছিলেন ততটা নিশ্চয়ই হয়নি। তবে বিজেপি এখন যা-ই করুক ‘ইনক্লুসিভনেস’-এর কথা ভাবছে। এই দলের কিছু লোক অযথা বাজে কাজ করে গিয়েছে আর শীর্ষ কর্মকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটে বসেছিলেন। এটা সমর্থন করা যায় না। জিএসটি/নোট বাতিল দেশের পক্ষে ভাল, কিন্তু রূপায়ণটা ঠিকঠাক হয়নি। তবে প্রশাসন যথার্থ ভাবে চালাবার চেষ্টা আছে।
চন্দন গুহ
কলকাতা-৫১

পদবি বৈচিত্র

মুর্শিদাবাদ জেলার রঘুনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত একটি গ্রাম মির্জাপুর। এই গ্রামের জনসংখ্যা চার হাজারের বেশি নয়। কিন্তু এখানকার বাসিন্দাদের পদবি বৈচিত্র সমাজবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয় হতে পারে। একই স্থানে এত অদ্ভুত পদবির সমাহার সাধারণ ভাবে দেখা যায় না। যেমন: আলিপাত্র, আশ, বাঘ, বাঘিড়া, বৈদপুর, বান্ধ্যা, বাঁশোর, বড়াল, বরগরিয়া, বিজয়পুর, বৈলদ্যা, চিত্রকর, চুল্যা, ডাহিনা, ধাইড়, ধড়িয়া, গাম্ভিরা, গঙ্গাপুত্র, গোঁচি, কাদিয়া, কাহালগাঁও, কালিদহ, কালু, কাপুড়ি, কেঠে, কৈল্ঠ্যা, কুনাই, লেদ, মনিগ্রাম, মনিয়া, পঞ্চহর, পেরাত, পিলসিমা, পলিশা, পোষ্টি, সাহানা, শোশা।
নন্দ কুমার সরকার
কলকাতা-৬১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapuja মহা তিথি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE