Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু: সবারই হাতে ফোন

এক প্রথিতযশা চিকিৎসকের কাছে আমার স্ত্রীর দুরারোগ্য চিকিৎসার জন্য মাঝে-মাঝে যেতে হয়। সে-দিন রোগীর রক্তের পরীক্ষাপত্র (রিপোর্ট) নিয়ে অনেক চেষ্টার পর ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ পেয়ে ডাক্তারবাবুকে দেখাতে গেলাম।

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০৮
Share: Save:

সে-দিন নার্সারি শ্রেণিতে পড়া আমার ছোট্ট ভাইঝি আবদার করল, আমাকে ছাত্র সাজতে হবে, আর ও হবে স্কুলের ‘আন্টি’। এই স্কুল-স্কুল খেলায় রাজি হলাম। তখন ও আমাকে আমাকে ‘টাস্ক’ দিল, আমি ‘এবিসিডি’ লিখতে লিখতে আড় চোখে দেখি, ও ওর একটা হাতের তালুতে অপর হাতের আঙুল দিয়ে ও কী যেন করছে। জিজ্ঞেস করে জানলাম, মোবাইল দেখছে। আমি প্রশ্ন করলাম, ‘আন্টি’ কি ক্লাসে এ-রকমই করেন? উত্তরে সে সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়ল।

এক প্রথিতযশা চিকিৎসকের কাছে আমার স্ত্রীর দুরারোগ্য চিকিৎসার জন্য মাঝে-মাঝে যেতে হয়। সে-দিন রোগীর রক্তের পরীক্ষাপত্র (রিপোর্ট) নিয়ে অনেক চেষ্টার পর ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ পেয়ে ডাক্তারবাবুকে দেখাতে গেলাম। আমরা ওঁর চেম্বারে ঢুকতেই উনি মোবাইলের স্ক্রিনে মগ্ন হয়ে গেলেন। রিপোর্টে এক বার চোখ বুলিয়েই আবার চোখ সেই স্ক্রিনে, আমার উপস্থিতি গৌণ হয়ে গেল। ড্রাইভারের কানে মোবাইল বহুচর্চিত, সমাজের উঁচু স্তরের পেশাদারদের এহেন ব্যবহার নিয়ে এ-বার একটু আলোচনা হোক।

অজিত রায়, নোনাচন্দনপুকুর, ব্যারাকপুর

রাষ্ট্রীয় বিমা এবং

রাষ্ট্রীয় বিমা যোজনার সঙ্গে যে সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোম নথিভুক্ত রয়েছে, তাদের বেশির ভাগেরই ন্যূনতম পরিকাঠামোটুকুও নেই। বেশির ভাগ নার্সই অ-প্রশিক্ষিত। এমনকী অনেক নামকরা হাসপাতালেও হোমিয়োপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক দিয়ে অ্যালোপ্যাথির চিকিৎসা করা হয়। কোথাও কোথাও আবার ভুয়ো চিকিৎসকও ধরা পড়ে! আর সবচেয়ে যেটি ভয়াবহ, সেটি হল, চিকিৎসার নামে বিমা-কৃত পুরো টাকাটা কেটে নেওয়া। তা সে পাঁচ বা দশ হাজার টাকা যা-ই খরচ হোক না কেন, পুরো ত্রিশ হাজার টাকাই কেটে নেওয়ার প্রবণতা থাকে। অনেক ভুঁইফোড় নার্সিং হোম রাষ্ট্রীয় বিমা যোজনায় চিকিৎসা করিয়েই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে।

কৌশিক সরকার, রঘুনাথপুর, পুরুলিয়া

শেওড়াফুলি

ভারতীয় রেলের পূর্বাঞ্চলের প্রথম ইএমইউ কোচ হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি অবধি চালু হওয়ায় শেওড়াফুলি স্টেশনটিও ইতিহাসবিজড়িত। অথচ এর তেমন আধুনিকীকরণ অথবা সৌন্দর্যায়ন চোখে পড়ে না। স্টেশন সংলগ্ন পূর্বাঞ্চলটি মুক্ত থাকায়, বাজার চত্বরে অবাধ যাতায়াত চলে। ছয় নম্বর প্ল্যাটফর্মের দৈর্ঘ্য ছোট হওয়ায়, ডাউন ব্ল্যাক ডায়মন্ড ট্রেনটি দাঁড়ালেও বেশির ভাগ বগিই প্ল্যাটফর্মে আঁটে না। এই জংশন স্টেশনটির ছ’টি প্ল্যাটফর্মের মেলবন্ধনের একমাত্র ভরসা ওভারব্রিজ। ফলে তারকেশ্বর এবং বর্ধমান লাইনের ট্রেন বদলের ঝক্কি অনেক।

দেবব্রত সেনগুপ্ত, কোন্নগর, হুগলি

সময়ে জোগান

মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গে শিল্প স্থাপনের জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালাচ্ছেন। শিল্পপতিদের বক্তব্য, রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ নেই। কথাটা যে খুব অমূলক নয়, তার একটা উদাহরণ দিই। দিন কয়েক আগে আসানসোল থেকে একটি ট্রাক বড়জোড়া যাচ্ছিল, একটি কারখানার তৈরি পণ্য অন্য একটি কারখানায় পৌঁছে দিতে। মাঝরাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ জানালেন, গাড়ি আর যাবে না। আজ কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর মিটিং আছে। কিন্তু গাড়ি তো যাবে বড়জোড়া! না, এখান থেকেই ‘নো এন্ট্রি’ শুরু। কোথায় কলকাতায় মিটিং, তার জন্য স্থানীয় ভাবে গাড়ি যাওয়া-আসা করতে পারবে না কেন? এটা কিন্তু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিভিন্ন কারণে প্রায়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে। যখন কিনা শিল্প এখন ‘জাস্ট ইন টাইম’ ডেলিভারিতে অভ্যস্ত।

প্রবীর সরকার, বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি

দার্জিলিং মেল

সম্প্রতি দার্জিলিং মেল ও তার পরিবর্তিত গতিপথকে কেন্দ্র করে যে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই এই চিঠি। মনে রাখতে হবে, দার্জিলিং মেল কেবলমাত্র একটি ট্রেনই নয়, দার্জিলিং মেল মানে বাঙালির আবেগ, বাঙালির অনুরাগ। এহেন দার্জিলিং মেলকে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

১৮৭৯ সালে চলাচল শুরু করে দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই ট্রেনটি। দার্জিলিং মেল, নিউ জলপাইগুড়িতে এসে যুক্ত হয় ইউনেস্কো হেরিটেজ টয় ট্রেনের অন্তর্গত দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের সঙ্গে। এ-প্রান্তের গতিপথ ও প্রান্তিক সীমা বদলের যে চেষ্টা হচ্ছে, তাতে ঐতিহ্য নষ্ট হবে।

বরং ভারতীয় রেল দফতর দার্জিলিং মেলকে ঘিরে আরও কিছু সদর্থক পদক্ষেপ নিতেই পারে। পরিকাঠামো তৈরিই আছে। যেমন ভাবে হলদিবাড়ি থেকে দার্জিলিং মেলের বগি আনা হয়, ঠিক একই ভাবে নিউ কোচবিহার মাথাভাঙা রুট দিয়েও অনায়াসে আনা যেতে পারে আরও বেশ কিছু বগি, যা যুক্ত করা যেতে পারে মূল ট্রেনের সঙ্গে। একই ভাবে বানারহাট, মালবাজারসহ ডুয়ার্সের বিভিন্ন স্টেশনকে ছুঁয়ে আলিপুরদুয়ার থেকে বগি আনা যেতে পারে বিভিন্ন লোকাল ট্রেনে সংযোগ করে।

রজত মুখোপাধ্যায়, অ্যাভিনিউ রোড, শিলিগুড়ি

বাসস্ট্যান্ডে হকার

হাওড়া স্টেশনে বাসস্ট্যান্ডে দীর্ঘ দিন ধরে খাবারের দোকান ও নানা ধরনের পসরা নিয়ে হকাররা দখল করে আছে। খাবারের দোকানগুলিতে রান্না হয়, দোকানদারেরা বাসন ধোওয়ার জল ও খদ্দেরদের হাতমুখ ধোওয়া জল বাসস্ট্যান্ডে ফেলে দেয়। নিকাশি ব্যবস্থাও ভাল নয়। বাসস্ট্যান্ডে যাতায়াত করার রাস্তাটি সারা বছরই পিছল থাকে। বর্ষাকালে আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।

অভিজিৎ দাস, বালি, হাওড়া

সঙ্গিন অবস্থা

কানপুর কর্পোরেশনের মেয়র ও তাঁর সঙ্গীরা কলকাতার জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা দেখে মুগ্ধ। কিন্তু তাঁরা যদি কলকাতা সংলগ্ন রাজপুর সোনারপুর আসতেন, তবে দেখতেন সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। সর্বত্রই জঞ্জালের সমারোহ, পরিষ্কার হয় না। রাস্তায় কোনও দিন ঝাঁট পড়ে না, কম্প্যাকটর কী জিনিস তা এই পুরসভা জানে না। রাস্তার ধারে ধারে জঞ্জাল ফেলা। কাঁচা নর্দমায় পর্যন্ত পাঁকের সঙ্গে জঞ্জালের সহাবস্থান। পুরনো একতলা বাড়ির ছাদে বৃষ্টি হলে জল জমে হয় মশার আড়ত। ভাঙা লরি তিন বছর যাবৎ পরিত্যক্ত অবস্থায় রাস্তার ধারে। পানীয় পরিস্রুত জল পুরসভার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বঞ্চিত। কয়েকটা নলকূপই ভরসা, তবে আর্সেনিক অধ্যুষিত এই জল কি পেয়? অধিকাংশ অধিবাসী জার-এর জল কিনে খান। হালে ডেঙ্গির তাণ্ডবে ও পুরসভা ছিল নীরব দর্শক। নর্দমায় তেল অথবা ব্লিচিং দেওয়া ইত্যাদি তো দূরস্থান।

শঙ্কর এস চট্টরাজ, কলকাতা-৮৪

আমরা-ওরা

আমরা যখন বিদেশে বেড়াতে যাই, সেই দেশের কোনও দ্রষ্টব্যস্থান দেখতে হলে কোনও বিশেষ প্রবেশমূল্য দিই না। সবাই যা দেয়, আমরাও তা-ই দিই। অথচ আমাদের দেশে কোনও বিদেশি এলে, তাঁরা আমাদের থেকে বহু টাকা বেশি দিয়ে, তবে কোনও দ্রষ্টব্যস্থানে ঢুকতে পারেন। আমরা কি এতই গরিব যে এই বৈষম্যটা জারি রাখতে হবে? জায়গাটা দেখতে এসে ওঁরা তো আমাদের এই ব্যবহারটাও দেখেন।

সুজয় বাগচী, কলকাতা-১০৬

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Moblie phone professionals Duty Hours
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE