Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

লন্ডন ডায়েরি

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

দেশভাগের ইতিহাস বেয়ে ঘরে ফেরার ডাক

ব্রিটেনের বাঙালি ডাক্তার বিনীতা কেন-এর পরিবার দেশভাগের শিকার হয়েছিল। সেই বিনীতাই বিবিসি-র অনিতা রানি ও ব্রিটেনের এশীয় সাংসদদের সঙ্গে মিলে ডাক দিয়েছেন, দেশভাগের স্মৃতিতে একটা দিন ‘পার্টিশন ডে’ হিসেবে পালন করা হোক। হাউস অব কমন্স-এ এ সপ্তাহে একটা পিটিশনও দিচ্ছেন ওঁরা। বিনীতার বাবার গল্প দেখা গিয়েছিল বিবিসির ‘মাই ফ্যামিলি, পার্টিশন অ্যান্ড মি’ তথ্যচিত্রে। দাঙ্গার সময় তিনি সপরিবার ছিলেন নোয়াখালিতে। এক মুসলমান কিশোর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওঁদের প্রাণ বাঁচিয়েছিল। তথ্যচিত্রে দেখা গিয়েছে, বিনীতা খুঁজে খুঁজে সে দিনের সেই কিশোর, এখন যিনি বৃদ্ধ, তাঁর কাছে গিয়েছেন। নোয়াখালি থেকে বাবার জন্য কিছু মাটি নিয়ে এসেছিলেন। ‘পার্টিশন ডে’-র প্রস্তাবটা দেওয়ার পর ওঁর সঙ্গে শিখ, পঞ্জাবি, পাকিস্তানি, হিন্দু, শ্বেতাঙ্গ— বহু মানুষ যোগাযোগ করেছেন। বিনীতা চান, ব্রিটেনের স্কুলেও পড়ানো হোক দেশভাগ।

প্রত্যাবর্তন: নোয়াখালিতে বিনীতা কেন

এ বার মেয়েরাও

ব্রিটিশ আর্মিতে গোর্খা রেজিমেন্টের একটা আলাদা গর্বের জায়গা আছে। দু’শো বছরেরও বেশি পুরনো এই রেজিমেন্টে সম্প্রতি ঘোষণা, আগামী বছর থেকে এখানে মেয়েরা যোগ দিতে পারবেন। খুব সহজে নয় অবশ্য। নেপালের পোখরা-য় কঠিন প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হবে তাঁদের। চড়াই-পথে মাথায় ২৫ কিলো বালির বস্তা নিয়ে তিন মাইল দৌড়তে হবে, যে রেসের নাম ‘ডোকো’। গন্তব্যে পৌঁছতে হবে ৪৮ মিনিটের মধ্যে। এতেই শেষ নয়। এক মিনিটে ৭৫ বেঞ্চ জাম্প, দু’মিনিটে ৭০ সিট-আপ দিতে হবে। প্রতি বছর এই পরীক্ষায় হাজার হাজার পুরুষ যোগ দেন, যদি ২৫০ আসনের শিকে ছেঁড়ে! মেয়েরা যাতে যোগ দিতে পারেন, তাই ব্রিটিশ আর্মি এই সংখ্যাটা বাড়াচ্ছে। সকলের পাখির চোখ সুযোগের দিকে, তাতে ব্রিটিশ পাসপোর্ট মিলবে, মোটা মাইনেও। ১৮১৫-র ইঙ্গ-নেপাল যুদ্ধে ব্রিটিশরা প্রথম সেনাবাহিনীতে গোর্খাদের নিয়োগ করে। সিপাহি বিদ্রোহে ও দুটো বিশ্বযুদ্ধে এই সেনাদের আনুগত্য ও সাফল্য ছিল প্রশ্নাতীত। ২০০৯-এ অভিনেত্রী জোয়ানা লামলি-র ব্যাপক প্রচারের ফলে গোর্খাদের ব্রিটিশ পাসপোর্ট ও ভাল পেনশন নিশ্চিত হয়।

আবার অস্টিন

নীরদ সি চৌধুরীর প্রিয় লেখক ছিলেন তিনি। স্বল্পায়ু জীবনে জেন অস্টিন ছ’টা বই লিখেছিলেন, তার সবগুলো থেকেই ছবি, টিভি ড্রামা, নাটক হয়েছে। এ বার টিভি প্রযোজনা সংস্থা আইটিভি-র নতুন পরিকল্পনা, অস্টিনের শেষ বইটি তারাই সম্পূর্ণ করবে। ৪১ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে অস্টিন তাঁর উপন্যাস ‘স্যান্ডিশন’-এর ১১টা পরিচ্ছেদ লিখেছিলেন। অসম্পূর্ণ পাণ্ডুলিপিটি প্রকাশিত হয় ১৯২৫-এ। সমালোচকদের নজর কাড়ে এই উপন্যাসে মৃত্যু ও যৌনতার ভাবনা, যা অস্টিনের আগের বইগুলিতে তেমন নেই। ব্রিটেনের প্রখ্যাত চিত্রনাট্যকার অ্যান্ড্রু ডেভিস— যিনি বিবিসি-র জন্য ‘প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’ ও ‘ওয়ার অ্যান্ড পিস’-এর চিত্রনাট্য লিখেছিলেন— এই উপন্যাসটা সম্পূর্ণ করবেন, চিত্রনাট্যও লিখবেন। প্রযোজকদের বক্তব্য, এই উপন্যাসে জাতিভেদ, উচ্চাশা, ক্ষমতার মতো বিষয়গুলি আজও প্রাসঙ্গিক।

পথ আটকে

বিমুখ: রানি ও ডোনাল্ড ট্রাম্প

ব্রিটেন সফরে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প রানির সঙ্গে চা খেতে চেয়েছিলেন। উইনসর কাস্‌ল-এ রাজপরিবারের বাকিরা— প্রিন্স চার্লস-ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম-ক্যাথরিন, প্রিন্স হ্যারি-মেগান— ছিলেন না। ট্রাম্প উইনসরে আধ ঘণ্টা ছিলেন, তার পর বেরিয়ে যান। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই, ৯৩ বছর বয়সি রানির প্রতি ট্রাম্প ও মেলানিয়া অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। তাঁরা রানিকে প্রথাগত শ্রদ্ধা দেখাননি, ইনস্পেকশন প্যারেডে তো ট্রাম্প প্রোটোকল ভেঙে রানিকে ফেলে সামনে এগিয়ে তাঁর পথই আটকে দিয়েছেন। ছবিতে দেখা গিয়েছে, রানি পিছন থেকে হেঁটে এসে ট্রাম্পকে ধরার চেষ্টা করছেন। বারাক ও মিশেল ওবামা যখন উইনসরে এসেছিলেন, তখন কিন্তু রাজপরিবারের সব সদস্যই ছিলেন। ওবামারা কেনসিংটন প্যালেসে ডিউক অ্যান্ড ডাচেস অব কেমব্রিজ-এর বিশেষ নিমন্ত্রণও পেয়েছিলেন। ছোট্ট প্রিন্স জর্জ তাঁদের ‘শুভরাত্রি’ জানাতে এসেছিল, তার সঙ্গে খানিক খেলেওছিলেন দু’জনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Partition Donald Trump Queen Elizabeth
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE