Advertisement
E-Paper

লন্ডন ডায়েরি

বাংলার গভর্নর ক্লাইভ আস্ত একটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার উপহার পাঠিয়েছিলেন ডিউক অব মার্লবরোকে। সেটা ১৭৬২, কলকাতা থেকে আসা সেই ‘উপহার’ নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে।

শ্রাবণী বসু

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:২৭

কলকাতা থেকে পাঠানো ক্লাইভের উপহার

বাংলার গভর্নর ক্লাইভ আস্ত একটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার উপহার পাঠিয়েছিলেন ডিউক অব মার্লবরোকে। সেটা ১৭৬২, কলকাতা থেকে আসা সেই ‘উপহার’ নিয়ে সাড়া পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। বাঘ নয়, বাঘিনি। তার পর থেকে সে থাকত অক্সফোর্ডশায়ারের ব্লেনিম প্যালেসে, ডিউকের ২০০০ একর আয়তনের এস্টেটে। সেই রয়্যাল বেঙ্গলই হয়ে ওঠে অষ্টাদশ শতকে আভিজাত্যের সর্বোচ্চ পরিচায়ক। আজকের ভাষায় সে ছিল ‘সেলেব’। ব্রিটিশ শিল্পী জর্জ স্টাবস তার ছবি এঁকেছিলেন, একটা ছবি প্যালেসে টাঙানো আছে আজও, আর একটা ১৯৯৫ সালে নিলামে বিক্রি হয়, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় আশি লক্ষ টাকায়! ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে থাকা প্যালেসের হিসেব-বই জানাচ্ছে, বাঘিনির খাই-খরচ ছিল বিস্তর। প্রতি দু’দিনে সে খেত প্রায় এগারো কিলো মাংস। মেনুতে থাকত ঘোড়ার মাথাও! ২৪ পাউন্ড গোমাংস আর ৫টা ঘোড়ার মাথা প্যালেসে ডেলিভারি হয়েছিল ২৮ বার। সেখানে এপ্রিল-জুন তিন মাসে কাছের উডস্টক শহরে ছ’টা হতদরিদ্র পরিবার ডিউকের বদান্যতায় পেয়েছিল সাড়ে তেইশ কিলো মাংস, এক ডজন পাউরুটি। ব্লেনিম প্যালেস আজও ডিউক অব মার্লবরোর ঠিকানা। প্যালেসে আছে ১৮৭টা ঘর, বিরাট বাগান, মিনি-রেলগাড়ি। বছরভর খোলা থাকে দর্শনার্থীদের জন্য।

রাজকীয়: শিল্পী জর্জ স্টাবস-এর আঁকা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার

লন্ডনে রুচি

৫৭ বছর পরে লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশন পেতে চলেছে এক মহিলা হাই কমিশনার— রুচি ঘনশ্যাম। এর আগে বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতকে হাই কমিশনার নিযুক্ত করেছিলেন জওহরলাল নেহরু। বিজয়লক্ষ্মী ছিলেন লন্ডনে সব চেয়ে বেশি সময় নিযুক্ত হাই কমিশনার, ১৯৫৫-৬১ পর্যন্ত। লন্ডনের পুরনো বাসিন্দাদের এখনও মনে আছে ফ্রেন্ডস মিটিং হাউস-এ তাঁর প্রথম ভাষণ। নেহরু লন্ডনে এসে ইন্ডিয়া হাউসে সাংবাদিক সম্মেলন করার সময় বিজয়লক্ষ্মী তাঁর পাশে বসে ছিলেন। অক্টোবর থেকে ইন্ডিয়া হাউস-এর দায়িত্ব নেবেন রুচি ঘনশ্যাম। গত এপ্রিলে রুচি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে লন্ডনে এসেছিলেন, কমনওয়েলথ হেডস অব গভর্নমেন্ট-এর সভায়। ২৯ মার্চ ২০১৯ ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন। রুচির সামনে তখন অনেক দায়িত্ব, বিশেষ করে ভারত-ইংল্যান্ড দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার কাজ।

রান্নায়, হাতে হাত

এ বছর জানুয়ারিতে, প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে বাগদানের ক’মাস পরে, মেগান মার্কল চুপিচুপি গিয়েছিলেন গ্রেনফেল অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে। আল-মানার মসজিদে বসেছিল কমিউনিটি কিচেন, কেনসিংটন প্যালেস থেকে জায়গাটা খুব দূরে নয়। যে মেয়েরা ওখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁরা কিচেনে এক সঙ্গে রান্না করতেন, সবাই মিলে ভাগ করে খেতেন। আগুনে অনেকেরই ঘর পুড়ে গিয়েছিল, এখানে এক ছাদের নীচে একটা ঘর-ঘর অনুভব হত। মেগান গিয়েই একটা অ্যাপ্রন জড়িয়ে নিয়ে ওঁদের সঙ্গে রান্নায় হাত লাগান। সেই ঘটনার আট মাস পর সেই মেয়েদের একটা রান্নার বই প্রকাশের ক্ষেত্রে ডাচেস অব সাসেক্স মেগান প্রত্যক্ষ সহায়তা করেছেন। নিজে লিখে দিয়েছেন বইয়ের মুখবন্ধ। ‘টুগেদার: আওয়ার কমিউনিটি কুকবুক’ নামের সদ্য-প্রকাশিত বইটিতে আছে ৫০টি রেসিপি।

গাছের কোটরে

বিশ্রামস্থল: রানির প্রিয় ওক গাছ

রানির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘ জীবনের কারণ হয়তো সে-ই। সাফোক-এর হেলমিংহাম পার্কে শিকার ও ঘোড়ায় চড়া শেষে একটা ওক গাছের বিরাট কোটরে বিশ্রাম নেওয়া, কখনও প্রিয় পানীয়তে চুমুক দেওয়া পছন্দ রানির। অনেকগুলো ছবি-সংবলিত এক প্রদর্শনীতে রানির শিকারের শখ তুলে ধরেছেন আলোকচিত্রী অ্যাড্রিয়ান হিউস্টন। অ্যাড্রিয়ান কথা বলেছেন খ্যাত-অখ্যাত বহু মানুষের সঙ্গে, তাঁদের প্রিয় কোনও গাছের কথা আর তার পিছনের গল্পও শুনতে চেয়েছেন। পরে সেই গাছের ছবি তুলেছেন। রানির ওক গাছটির গল্প বলেছেন হেলমিংহাম হল-এর মালিক লর্ড টোলমাক। হেলমিংহামের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে রানি শীতকালে শিকারে যান। এখানেই আছে বিরাট সব ওক গাছ। মরে যাওয়ার পর ওক গাছের বিশাল গুঁড়ির মাঝখানটা পচে গিয়ে ফাঁপা হয়ে যায়। সে রকমই একটা মৃত ওক গাছের ফাঁপা কোটর রানির প্রিয়। লন্ডনে চলছে প্রদর্শনী ‘আ পোর্ট্রেট অব আ ট্রি’, সেখানেই দেখা যাবে ‘দ্য কুইন’স ওক’কে।

London Diaries London Diaries লন্ডন ডায়েরি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy