‘অচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি কতটা কাজে এল, এ বার সেটাই দেখার পালা।
সময় হয়ে এল। এ বার হিসেব বুঝে নেওয়ার পালা। হিসেব বুঝিয়ে দেওয়ারও পালা। সে কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত সহকর্মীদের কাছ থেকে হিসেব তলব করলেন প্রধানমন্ত্রী।
কর্মসংস্থান কত হল চলতি মন্ত্রিসভার কার্যকালে? নরেন্দ্র মোদী তা জানতে চেয়েছেন বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছে।
আর দেরি করলে সত্যিই চলত না। এ হিসেব চাইতেই হত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। কারণ ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ক্ষমতা পেলে প্রতি বছরে ১ কোটি করে কর্মসংস্থান করবেন। বিপুল জনসমর্থনে সওয়ার হয়ে ক্ষমতা পেলেনও তিনি। অতএব প্রতিশ্রুতি পূরণ করার দায় বর্তাল তাঁর কাঁধে। দেখতে দেখতে কার্যকালের ৮০ শতাংশ অতিবাহিতও হয়ে গেল। এ বার তো দেশকে বুঝিয়ে দিতেই হবে হিসেবটা। কতটা পালিত হল প্রতিশ্রুতি, সে খতিয়ান তো তুলে ধরতেই হবে দেশবাসীর সামনে। অতএব প্রধানমন্ত্রী সেই লক্ষ্যেই পদক্ষেপ করলেন।
নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভার কার্যকালের মেয়াদ আর এক বছর। কাজকর্ম কী কী হল, দেশ কতটা এগিয়ে যেতে পারল, ‘অচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখা ভারতবাসী গত চার বছরে কতটা সুদিনের মুখ দেখল— সব হিসেব সামনে আনতে হবে এ বার। বিরোধীদের তরফ থেকে সমালোচনা ক্রমশ বাড়ছে, নানা অস্ত্রও প্রস্তুত রাখা হচ্ছে, নির্বাচনী যুদ্ধের কথা মাথায় রেখে অস্ত্রে শান দেওয়া হচ্ছে। মোকাবিলার প্রস্তুতি যে সরকারের তরফে থাকবে, তা নিয়ে সংশয় থাকার কথা নয়। তাই নরেন্দ্র মোদী ঘরটাকে গুছিয়ে নিচ্ছেন, বিরোধী হামলা ঠেকানোর জন্য ঢালগুলোকে প্রস্তুত করছেন, পাল্টা হামলার লক্ষ্যে অস্ত্রের সম্ভার বাড়াচ্ছেন। বিভিন্ন মন্ত্রকের কাছ থেকে কর্মসংস্থানের হিসেব চাওয়া সেই রণসজ্জা তথা ঘর গোছানোর পর্বেরই অঙ্গ।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি যা কিছুই দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদীরা, সেগুলির মধ্যে অন্যতম বৃহত্ ছিল কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি। অতএব, এই কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে সবচেয়ে বড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করাবে বিরোধী শিবির। কারণ কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি পূরণের ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার কতটুকু সফল, সে নিয়ে সংশয় রয়েছে বিস্তর। নরেন্দ্র মোদী নিজেও সম্ভবত অবহিত সে সম্পর্কে। তাই কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবটাই সর্বাগ্রে খোঁজা শুরু করলেন।
আরও পড়ুন: কত কর্মসংস্থান হল ৪ বছরে? রিপোর্ট চাইলেন মোদী
চার বছরে কতটা পূরণ করতে পেরেছেন প্রতিশ্রুতি, আগামী এক বছরেই বা কতটুকু পারবেন? হিসেবটা সম্ভবত বুঝে নিতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ হিসেবটা এ বার তাঁকে পেশ করতে হবে দেশবাসীর সামনে এবং তার উপর দাঁড়িয়ে পরবর্তী লড়াইয়ের দিকে এগোতে হবে। দেশবাসীকে হিসেব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য দেশের প্রধান প্রশাসক নিজে সরকারের কাছ থেকে হিসেব চাইছেন, এ দৃশ্য বেশ ভালই। এ দৃশ্যে দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন থাকার লক্ষণ পরিস্ফুট। কিন্তু দায়বদ্ধতা কতখানি প্রতিপালিত হল গত চার বছরে, সে হিসেব এখনও স্পষ্ট নয়। দেশও অপেক্ষায়। দেখা যাক, কী হিসেব সামনে আনেন প্রধানমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy