স্বাধীনতা দিবস এ বার পালিত হোক সামাজিক বিষ থেকে মুক্তি পাওয়ার শপথে।
অগ্রগতির কোনও অন্ত হয় না। অগ্রগতি বহাল রাখতে চাইলেই বহাল রাখা যায়। বহাল রাখাটা জরুরিও। দেশের অগ্রগতি বা নাগরিকের অগ্রগতি বলতে সাধারণ ভাবে যা বোঝানো হয়, শুধু সেই বস্তুগত অগ্রগতি হলেই কিন্তু চলে না। মূল্যবোধ, চিন্তাধারারও অগ্রগতি জরুরি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে। সেই সূত্র ধরেই তাই বলতে হয় যে, আমাদের স্বাধীনতারও অগ্রগতি জরুরি।
আজ ভারতের ৭২ তম স্বাধীনতা দিবস। অর্থাত্ ব্রিটিশদের ভারতে ছে়ড়ে যাওয়ার ৭১ বছর পূর্তি। ব্রিটিশের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার গরিমাই এই দিনটার মূল তাত্পর্য। তবে সে তাত্পর্যেই আমরা আটকে থাকব, না কি শৃঙ্খল মুক্তির আলোকে পরবর্তী কোনও তাত্পর্য নিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালিত হবে, তা ভাবার সময় এসেছে।
এক সময় শুধুমাত্র ব্রিটিশের শাসন থেকে মুক্তি পাওয়াই ছিল ভারতীয় সংগ্রামের মূল লক্ষ্য। আজ কিন্তু অন্য অনেক কিছু থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রয়োজন অনুভূত হয়। অসহিষ্ণুতা, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মের নামে হিংসা, নারী নির্যাতন, ধর্ষণ— এই রকম একের পর এক সামাজিক বিষ আজ আমাদের গিলে খেতে চাইছে। স্বাধীনতা দিবস এ বার পালিত হোক সেই সব সামাজিক বিষ থেকে মুক্তি পাওয়ার শপথে।
সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন
এককালের অপরাজেয় ব্রিটিশ রাজশক্তিকে পরাজিত করেছিল ভারতীয়রা। করেছিল বলেই প্রতি বছর ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালনের সুযোগ পাই আমরা। তবে সে পালন শুধু স্মৃতি-নির্ভর, শপথ-নির্ভর নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রকৃত সম্মান জানিয়ে প্রতি বছর ১৫ অগস্ট যদি আমরা শপথ নিতে পারি আজকের সামাজিক বিষগুলোর বিরুদ্ধে সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার, তা হলেই দিনটাকে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হয়। আর সংগ্রামে জিততে পারলে আমাদের প্রত্যেকের স্বাধীনতার অগ্রগতি হয়।
বর্তমান প্রজন্ম ব্রিটিশের বিরুদ্ধে লড়াই দেখেনি। শুধু শুনেছে বা পড়েছে। তাতে মহান স্বাধীনতা দিবস বর্তমান প্রজন্মের কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে, এমন নয়। কিন্তু দিনটা আরও বেশি প্রাসঙ্গিক থাকতে পারে, যদি প্রত্যেক ভারতীয় নাগরিককে এই দিনে নতুন কোনও লড়াইয়ের দিশা দেখানো যায়।
আরও পড়ুন: তারুণ্যের দীপ্তিতে উদ্দীপ্ত হোক স্বাধীনতা
লালকেল্লার প্রাকার থেকে আজ দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। তাঁর বার্তায় সামাজিক বিষগুলোর বিরুদ্ধে সংগ্রামের আহ্বান থাকা জরুরি। স্বাধীনতাকে অগ্রগতির পথ দেখাবে, এমন এক বার্তা জরুরি। স্বাধীনতার পরবর্তী প্রজন্মগুলোর কাছে স্বাধীনতা দিবসের প্রাসঙ্গিকতা আরও বাড়িয়ে তোলা কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে অনেক সহজ। কারণ ঘটনাচক্রে নরেন্দ্র মোদী হলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যাঁর জন্ম স্বাধীন ভারতে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা, তুমি একটা সুদীর্ঘ মিছিলের স্বপ্ন
৭২তম স্বাধীনতা দিবস গৌরবে কাটুক। শুভেচ্ছা প্রত্যেক পাঠককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy