কাল ভাব, আজ আড়ি
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের বিরুদ্ধে কলকাতায় বামপন্থীদের মিছিল থেকে বারাক ওবামাকে ‘অবাঞ্ছিত অতিথি’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং প্রকাশ কারাট দিল্লিতে সদর্প ঘোষণা করেছেন, ওবামার সঙ্গে অন্নগ্রহণও করবেন না তাঁরা (‘সে বার তাঁর নৈশভোজে, এ বার পোড়ালেন...’, ২৫-১) সীতারাম ইয়েচুরি আবার কলকাতায় মন্তব্য করেছেন, “ভারত সরকার নিজেদের মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের অধস্তন সহযোগী হিসাবে দেখাতে চাইছে...।” পশ্চিমবঙ্গ থেকে বামপন্থীদের পায়ের তলার মাটি যখন ক্রমশ সরে যাচ্ছে তখন ওবামার সফরের প্রতিবাদ দেখানোটা কি লোকদেখানো! সাম্রাজ্যবাদের মতো আপাত-‘অপ্রাসঙ্গিক’ বিষয় নিয়ে বাজার গরম করলে কি বামেদের সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গবাসীর ধারণার আদৌ কোনও বদল ঘটবে?
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী জন মেজরকে জ্যোতিবাবুরা লাল শালু পেতে কলকাতার বুকে অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন। ব্রিটেন কি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ছিল না! ১৯৯৫ সালে জ্যোতিবাবু পুঁজির সন্ধানে আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সে দিন কি আমেরিকা সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ছিল না? প্রাক্তন বামফ্রন্ট সরকারের শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন তো বেশ কয়েক বার শিল্পের সন্ধানে মার্কিন সফর করেছিলেন! তা হলে?
রতন চক্রবর্তী। উত্তর হাবড়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা
মরিচঝাঁপি ‘ভ্যানিশ’
সম্প্রতি সুন্দরবন ভ্রমণে যাই। মরিচঝাঁপি দ্বীপে বসতি স্থাপনকে কেন্দ্র করে বাঙালি উদ্বাস্তুরা যে নৃশংস অত্যাচারের সম্মুখীন হয়েছিলেন সে বিষয়ে অতীতে পড়াশোনা করেছিলাম। বামফ্রন্ট সরকারের নির্দেশে ১৯৭৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত উদ্বাস্তুদের উপর সংগঠিত সেই বর্বরোচিত আক্রমণকে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সমগোত্রীয়ই বলা যায়। তাই গভীর আগ্রহে চাক্ষুষ করতে চেয়েছিলাম সেই কুখ্যাত দ্বীপটিকে।
আমাদের লঞ্চের চালক দূর থেকে দেখিয়ে দেন জনবসতিহীন সেই দ্বীপটি, যার অবস্থান কুমিরমারি দ্বীপের বিপরীতে, নদীর অপর পারে। কিন্তু ভীষণ অবাক হলাম যখন দেখলাম যে, ফিল্ড ডিরেক্টর সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ কর্তৃক প্রকাশিত পর্যটন মানচিত্রে মরিচঝাঁপি দ্বীপটির উল্লেখই নেই। সরকারি গাইডকে কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বললেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে আসা বা পাঠানো এক দল লোক অবৈধ ভাবে যে দ্বীপ দখল করতে চেয়েছিল সেটির নাম সরকারি মানচিত্রে না থাকাই ভাল। জনগণকে দ্বীপটির নাম জানানোই উচিত নয়।
অর্থাৎ জনমানস থেকে সরকারি কলঙ্ক-কাহিনির চিহ্নটি মুছে ফেলতে হবে। বিকৃত করতে হবে ইতিহাসকে। যে অপচেষ্টা যুগ যুগ ধরে চালিয়ে এসেছেন নিপীড়ক শাসকরা।
গোবিন্দ বিশ্বাস। বারাসত, উত্তর চব্বিশ পরগনা
‘সাবধানতা স্বাগত’
বিশ্ব ক্যানসার দিবসে (৪-২) প্রকাশিত ‘ক্যানসার রুখতে নজর দিন পরীক্ষায়’ প্রতিবেদনে নানা তথ্য সুন্দর ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ক্যানসার প্রতিরোধ করা অনেক বেশি দরকার এবং প্রথমেই বিপদসঙ্কেতগুলি জানা অপরিহার্য। এই সঙ্কেতগুলি বাংলায় অতি সহজে মনে রাখার জন্য আমাদের তৈরি ‘সাবধানতা স্বাগত’ স্লোগানটির কথা সকলকে জানাতে চাই, যা আটটি বাক্যাংশের প্রথম অক্ষর নিয়ে গঠিত। সেগুলি হল: ১) সারতে না-চাওয়া ঘা। ২) বক্ষে (স্তনে) বা শরীরের কোথাও দলা বা স্ফীতি দেখা দেওয়া। ৩) ধারাবাহিক অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ বা স্রাব। ৪) নজরকাড়া পরিবর্তন তিলে বা আঁচিলে। ৫) তাড়াতাড়ি ওজন কমতে থাকা বা অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘস্থায়ী জ্বর। ৬) স্বাভাবিক মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাসের পরিবর্তন। ৭) গলার স্বর বসে যেতে থাকা বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি। ৮) তখনই খাবার গেলার অসুবিধা বা লাগাতার বদহজম।
যে কোনও এক বা একাধিক লক্ষণ তিন সপ্তাহের বেশি থাকলে ও সাধারণ চিকিৎসায় না সারলে কাছের ক্যানসার নির্ণয় কেন্দ্রে দেখান বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অযথা ভয় পাবেন না, কিন্তু অবহেলাও করবেন না।
উৎপল সান্যাল। কলকাতা-৩০
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy