নিজের জায়গায় থেকে নিজের কাজের মধ্যে দিয়ে সকলের কাছে প্রতিভাত হয়েছেন। এই মানসিকতা সত্যিই বিরল। লিখছেন
হরিমাধব মুখোপাধ্যায়
স্বদেশি আন্দোলনের প্রভাব তখন দেশ জুড়ে। মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেওয়ার ডাকে বাংলার গ্রামে গ্রামে সাড়া পড়ে গিয়েছে। দেবনাথও স্বদেশি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ হন। বিশ শতকের তিরিশের দশকে কখনও কলকাতা, কখনও বিদেশ থেকে ফিরে কীর্ণাহারের পাড়ায় পাড়ায় খদ্দরের জামা কাপড় বিক্রি করতেন দেবনাথ। লিখলেন নাসিম–এ– আলম।
অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
কে আমার পড়শি? আমিই বা পড়শি কার? কিসের ভিত্তিতে তৈরি হয় এই পড়শিয়ানা? ইতিহাস ও ভূগোল গুলে দর্শন ও সমাজচর্চার বিস্তর অধ্যায় শেষেও এই উত্তর খুঁজে পাই না আর।
সেমন্তী ঘোষ
গত কয়েক বছর ধরে বহু আলোচনা হয়েছে, কাশ্মীরিদের মন কী ভাবে ভারতের প্রতি আরও বিষিয়ে উঠছে দিন দিন। পুলওয়ামা-কাণ্ডেও আত্মঘাতী জঙ্গিটি কিন্তু পাকিস্তানে ট্রেনিং নেওয়া জঙ্গি নয়, নেহাত উপত্যকার লেঠিপোড়া গ্রামের স্কুলে পড়া কাশ্মীরি, যে কয়েক বছর আগে স্কুল থেকে ফেরার সময়ে (তার আত্মীয়দের ভাষায়, অকারণেই) বেধড়ক মার খেয়েছিল ভারতীয় সেনার হাতে।
পিয়াস মজিদ
আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংক্রান্ত উদ্বেগের কথাই ধরি। যে ভাষা-আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির লড়াইয়ে সাত দশক আগে রাঙা হয়েছিল বাংলার অশোকপলাশ, সে ভাষা-আগ্রাসন কী আমরাও করছি না বাংলায় বসবাসরত আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা-অধিকারের ক্ষেত্রে?
কিছু যুবক ডাক্তারকে হুমকি দেয়, কলকাতায় থাকা যাবে না, কাশ্মীরে চলে যেতে হবে। ওই গেরুয়া ফেট্টিরা কি কলকাতাকে ভারত আর কাশ্মীরকে অন্য দেশ মনে করেন? লিখছেন শামিম আহমেদ।
এই দিনটি বাঙালিদের নিজস্ব ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে মর্যাদা দিতে শেখায়। একুশে পদক দেওয়া হয় ভাষা শহিদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। লিখছেন শালিনী ভট্টাচার্য
অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
পরিস্থিতি অনুকূল নয় আজ, সুসময় নয়।এক চাঞ্চল্যকর সন্ধিক্ষণকে আমরা অতিক্রম করছি। চাঞ্চল্যের এক প্রান্তে রয়েছে ভারতীয় জাতীয়তাবোধ, আর অন্য প্রান্তে রয়েছে তীব্র পাকিস্তানবিরোধী আবেগ
কিছু দিন আগে, পুরনো বন্ধুদের অনুরোধে, তাদের সন্তানদের এবং অন্যদের পড়াতে শুরু করি এবং তারা পরীক্ষায় ভাল ফলও করে। অথচ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অভিভাবকদের কেউ কেউ আমার কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
অবশেষে ভারত সেই স্বর্গে জাগরিত হইল, যেখানে ‘অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান’ও রাজনৈতিক জাতীয়তাবাদের ভাষা রপ্ত করিয়া ফেলিয়াছে। স্কুল শিক্ষক ছাঁটাই করিতেছে, বিমা সংস্থা কর্মীকে বরখাস্ত করিতেছে, এমনকি সংবাদ প্রতিষ্ঠানও কর্মীকে বসাইয়া দিয়া সেই কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করিয়া দিতেছে।
জরুরি অবস্থা ঘোষণার এক ঐতিহাসিক নজির স্থাপন করিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, নিজের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করিতে। আমেরিকার দক্ষিণে মেক্সিকো সীমান্ত বরাবর একটি প্রাচীর তুলিবার ইচ্ছা তিনি প্রকাশ করিয়াছিলেন ক্ষমতায় আসার পূর্বেই।
ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায়
কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ১৪ ফেব্রুয়ারি সিআরপিএফ কনভয়ের ওপর সন্ত্রাসবাদী হানায় ৪৫ জন জওয়ানের মর্মান্তিক মৃত্যুর পর গোটা দেশই কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। এই হিংস্রতার নিন্দা করেছে।
আবাহন দত্ত
ভাষাশুমারির গোড়ায় মাতৃভাষার যে সংজ্ঞাটা লেখা থাকে, তার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘‘ছোটবেলায় কোনও ব্যক্তির প্রতি তাঁর মা যে ভাষায় কথা বলেন, তা-ই হল মাতৃভাষা। ব্যক্তির জন্মের সময় মায়ের মৃত্যু ঘটলে, ছোটবেলায় ব্যক্তির বাড়িতে যে ভাষা বলা হত, তা হবে মাতৃভাষা।’’ গৃহস্থালি তফসিলের (হাউসহোল্ড শেডিউল) ১০ নম্বর প্রশ্ন অনুসারে ব্যক্তির কাছ থেকে পাওয়া উত্তর অনুযায়ী তৈরি হয় ভাষাশুমারি।
ভাষা অত ঠুনকো নয় যে, তা ভিন্ন শব্দের অনুপ্রবেশে মরে যাবে। কিন্তু ভাষার জগাখিচুড়ি চেহারায় হারিয়ে যায় মূল সুর।
এখন বাংলা ভুলতে চাওয়াটাই বাঙালির প্রাত্যহিক বাসনা। ইংরেজি বা হিন্দিতে কথা বলতে না পারলে এ রাজ্যের অনেক জায়গায় প্রবেশাধিকার পাওয়া যায় না।
এই দেশ সেই প্রতর্কের পুণ্যভূমি যেখানে তর্ক করাটা একটা ঐতিহ্য। প্রতর্কের পরিসর ছেড়ে দৈহিক আক্রমণ করে যারা, তারাই এই দেশের শত্রু।
গভীর রাতে স্বপ্নে আসে ডলি পেনট্রিথ! চেনেন? ডলি মারা যান ১৭৭৭ সালে। সেই সঙ্গে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় কর্নিশ ভাষা জানা মানুষ। কিন্তু, এক সময়ে ইংল্যান্ডে অন্যতম প্রচলিত ভাষা ছিল প্রাচীন কর্নিশ ভাষা।
মাতৃভাষার জন্য মানভূমের বাঙালিদের আন্দোলন নিয়ে যে কোনও আলোচনা থেকে বিরত থাকেন অনেক বাঙালি। অবহেলা না আত্মবিস্মরণ? না হলে কেন জানতে ইচ্ছে করে না, কেমন ছিল মানভূমবাসীর লড়াইয়ের দশটা বছর।
আগেকার দিনের মানুষেরা এই সব বাংলা মাধ্যম স্কুলে পড়ে বাংলাটা যেমন শিখেছেন, ইংরেজি বা হিন্দিটাও শিখেছেন। কিন্তু এখন যেটা উদ্বেগের, তা হল মাতৃভাষার প্রতি এক সার্বিক অনীহা। এটাই ক্ষতিকারক।আজ ২১, আজ আমরা বাঙালি
‘সব নটেগাছই কি মুড়োল’ (৮-২) প্রবন্ধে সেমন্তী ঘোষ সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিশের অভূতপূর্ব প্রকাশ্য কুনাট্যের প্রেক্ষিতে বর্তমান ভারতের রাজনৈতিক চালচিত্রের যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে সাধারণ মানুষের বিপন্ন বোধ করার যথেষ্ট কারণ আছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হয়, এই রকম পরিস্থিতিতে বোধ হয় আমরা সন্তানদের মূল্যবোধের শিক্ষা দিতে পারব না, অবক্ষয় যে ভাবে আমাদের ঘিরে ধরেছে।
এই সময়েই প্রয়োজন অবিচলিত ও নির্বিকার সত্যের প্রতিষ্ঠা, ১৩১৫ বঙ্গাব্দে রবীন্দ্রনাথ যে কথা লিখেছিলেন।
দেশের মধ্যে তুলনায় অসাম্প্রদায়িক বলিয়া কলিকাতার, এবং পশ্চিমবঙ্গের, একটি খ্যাতি আছে। খ্যাতিটি হয়তো অনেকাংশেই বাহ্যিক, এবং আতিশয্যমণ্ডিত।
প্রথমে ছিল ইরান। গত মাসে নয়াদিল্লি আসিয়া ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভাদ জ়ারিফ সহর্ষে ঘোষণা করিয়াছিলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরান হইতে পণ্য আমদানি বন্ধ করে নাই ভারত। এক ধাপ আগাইয়া ইরানকে ‘ভারতীয় অর্থনীতির কিয়দংশ’ বলিয়াও বর্ণনা করেন মন্ত্রী
অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
যুদ্ধের জিগিরের চেয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের বার্তা সব সময়ই বেশি গ্রহণযোগ্য। তাই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণটাকে আশাপ্রদই মনে হচ্ছিল প্রথমে।কিন্তু ইমরান খান শেষ পর্যন্ত নিরাশই করলেন। ইতিবাচক বার্তা দেওয়ার নাটক করলেন তিনি। চালাকি করলেন।
অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়
ভদ্রলোককে দেখে কষ্ট হচ্ছিল। ওরা তাঁর গায়ে হাত তোলেনি, হালের বঙ্গসমাজের মাপকাঠিতে বিচার করলে খুব একটা গালিগালাজও করেনি, তুইতোকারিও নয়— আপনি করেই কথা বলছিল। কিন্তু ভদ্রলোক যখন খোলা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোবাইল টেলিফোনে ছেলেকে বলছিলেন, ‘‘তুই কী করলি বল তো!
চন্দ্রিল ভট্টাচার্য
একটা রটনা উড়ছিল: বাংলার শাসক দল এখন অনেক উদার। আসলে অম্বিকেশ, শিলাদিত্য, বেয়াড়া প্রশ্ন শুনে প্রশ্নকর্তাকে মাওবাদী আখ্যা দিয়ে মঞ্চ ছেড়ে উঠে যাওয়ার আখ্যান অনেকটা পুরনো হয়ে গিয়েছে।
‘চুলের বিচিত্র বাহার বন্ধ করুন, আবেদন শিক্ষকের’ শীর্ষক সংবাদ (৭-২) হাস্য উদ্রেক করল। এক জন শিক্ষিকা হিসাবে মনে করি, ছাত্রদের চুলের ছাঁটের সঙ্গে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বা পঠনপাঠনের কোনও বিরোধ থাকতে পারে না।
উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র জেলা দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংস্কৃতিক জগতে বরাবরই যথেষ্ট পরিচিতি আছে। এই দুই ঘটনা উল্লেখ করার মতো তারই দু’টি নমুনা মাত্র।
কেউ কেউ ‘বদলা’র বিরুদ্ধে কথা বলছেন। যুদ্ধ নয়, কথার মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যার সমাধান চাইছেন। এটাই তাঁদের ‘অপরাধ’। লিখছেন মোহিত রণদীপ
কাল ২১ ফেব্রুয়ারি। একটি ভাষা কী ভাবে একটি জাতির আশা, আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উঠতে পারে তার প্রমাণ এই দিনটি। দিনটি এখন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়
ঝালদা, পাড়া, গড়পঞ্চকোট, মহারাজনগর, রামবনি, কেশরগড় এবং সর্বশেষ কাশীপুর— এই সাতটি রাজধানী থেকে পঞ্চকোটের রাজারা শাসন করতেন। মানভূমের সভ্যতা সৃষ্টিতে এই রাজবংশ অন্যতম প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করেছে।
অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
পরিস্থিতিটা এ বার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে। অথবা তেমনই উপক্রম হচ্ছে। পুলওয়ামায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পরে যে তীব্র আক্রোশ দেশ জুড়ে অনুভূত হচ্ছে, তা অস্বাভাবিক নয়।
মূল সমস্যা কাঠামোগত। মাধ্যমিকের ন্যায় পরীক্ষার যে গুরুত্ব সমাজে রহিয়াছে, তাহা বহুলাংশেই নির্মিত ও আরোপিত। দশম শ্রেণির পরীক্ষাটি অন্যান্য শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার তুলনায় ভিন্ন বা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ কেন হইবে, শিক্ষার তত্ত্বে তাহার কোনও কারণ খুঁজিয়া পাওয়া মুশকিল।
ভিন্ন মতের অধিকারকে স্বীকার করিবার, সম্মান করিবার জোর দুর্বল শাসকের থাকে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশা জাগাইয়াছিলেন, সেই জোর সম্ভবত তাঁহার আছে। হিন্দুত্ববাদীদের দাপটে যখন মুম্বইয়ে পাকিস্তানি গায়ক গুলাম আলির অনুষ্ঠান বাতিল হইয়া গেল, তিনি শিল্পীকে সসম্মান কলিকাতায় ডাকিয়া আনিয়াছিলেন।
সন্তোষ রাণা
কাউকে যে কারণেই আটক রাখা হোক না কেন, ভারতীয় সংবিধান তাঁর চিকিৎসা পাওয়া-সহ অন্যান্য মানবিক অধিকার সুরক্ষিত করার কথা বলে। বস্তুত, এ বিষয়ে পরাধীন ভারতের আইনটিও (১৮৯৪) বন্দিদের জীবনের অধিকার সুরক্ষিত করার নির্দেশ দেয়।
সীমান্ত গুহঠাকুরতা
কেন্দ্রীয় সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী বি এড ডিগ্রি ব্যতীত কাউকেই শিক্ষক পদে নিয়োগ করা যায় না। অতএব কোনও রকম প্রশিক্ষণহীন শুধুমাত্র স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী ছেলেমেয়েদের এ ভাবে পড়ানোর কাজে নিযুক্ত করা যায় কি না, প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
চোরাশিকারিদের হাত থেকে ওদের বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। তবেই বাঁচবে পরিবেশ, বাঁচবে পশুপাখি, রক্ষা পাবে আমাদের এই বসুন্ধরা।
আমরা যেন এতগুলি তাজা প্রাণের বলিদান ভুলে না যাই। দেশের এই বিপদের সময়ে আমরা যেন নিজেদের মধ্যে প্রতিশোধ নেওয়ার ভুল খেলায় লক্ষ্যভ্রষ্ট না হই।