Advertisement
৩০ মার্চ ২০২৩
HS

উচ্চমাধ্যমিকের সাইকোলজিতে কী ভাবে ভাল নম্বর উঠবে? জানাচ্ছেন অভিজ্ঞ শিক্ষিকা

মনে রাখতে হবে, কোনও প্রশ্ন ছাড়া যাবে না। সমস্ত প্রশ্নের কিছু না কিছু উত্তর লিখতে পারলেই নম্বর পাবে পরীক্ষার্থীরা।

উচ্চমাধ্যমিকের সাইকোলজি পরীক্ষার জন্য টিপস।

উচ্চমাধ্যমিকের সাইকোলজি পরীক্ষার জন্য টিপস। সংগৃহীত ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ ১৭:৪২
Share: Save:

উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়াদের সাইকোলজি বা মনোবিদ্যার সঙ্গে প্রথম পরিচয় ঘটে। সোমবার রয়েছে এই বছরের উচ্চমাধ্যমিকের সাইকোলজি পরীক্ষা। সকলের কাছেই যে বিষয়টি খুব সহজবোধ্য, তা নয়। এর পাশাপাশি রয়েছে স্কুল জীবনের শেষ বড় পরীক্ষার উদ্বেগও। এই বছরের পরীক্ষার জন্য কোন টপিক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, শেষ মুহূর্তে বিষয়টির কোন কোন দিকে নজর দিতে হবে অথবা কী ভাবে উত্তর দিলে পরীক্ষার ফলভাল হবে, এই সমস্ত বিষয়ে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানিয়েছেন অভিজ্ঞ শিক্ষিকা।

Advertisement

প্রশ্নের ধরন: প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা যে হেতু আগেই হয়ে গিয়েছে, সোমবার রয়েছে এই বিষয়ের থিওরি পরীক্ষা। পরীক্ষায় মোট ৭০ নম্বর থাকবে। পরীক্ষার উত্তর দিতে হবে আলাদা উত্তরপত্রে। প্রশ্নপত্র হবে আলাদা। প্রথম ভাগে থাকবে ২১টি এমসিকিউ প্রশ্ন। এর পর থাকবে ১৪টি এসএকিউ-এর প্রশ্ন। এসএকিউ-এর উত্তরের ক্ষেত্রে যে হেতু বিকল্প দেওয়া হয়, সে হেতু উত্তর লেখার সময় কোন প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষার্থীরা দিচ্ছেন তা সঠিক ভাবে উল্লেখ করতে হবে। এসএকিউ-এর উত্তর লিখতে হবে ২-৩ লাইনে। তবে যদি উত্তর বড় হয়, তা হলে * চিহ্ন দিয়ে পরে কোথাও বাকি উত্তর লেখা যেতে পারে। এর পর এলএকিউ-এ লিখতে হবে ৫টি প্রশ্নের উত্তর। এর মধ্যে ৪টি প্রশ্নের ক্ষেত্রেই বিকল্প দেওয়া হলেও যে কোনও ১টি প্রশ্নে কোনও বিকল্প থাকবে না। প্রশ্নের ধরনের ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই মানসিক প্রস্তুতি নিতে হবে পড়ুয়াদের।

সময় নির্ধারণ: পরীক্ষা শুরুর প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে এমসিকিউ-এর উত্তর লিখতে ফেলতে পারলে ভাল। পরের ৪৫ মিনিটের মধ্যে লিখে ফেলতে হবে এসএকিউয়ের উত্তর। এর পর প্রতিটি এলএকিউ বা বড় প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে ২০ বা ২৫ মিনিট ধরে। সবশেষে যে ১০ মিনিট থাকবে, সেই সময়টি রাখতে হবে রিভিশনের জন্য। পরীক্ষার তাড়াহুড়ো বা টেনশনের চোটে অনেক প্রশ্নের উত্তরই সঠিক সময়ে মাথায় আসে না। সেই উত্তরগুলিই শেষের এই ১০ মিনিটে মনে পড়তেও পারে পরীক্ষার্থীদের। এই সময়ের মধ্যে দেখে নিতে হবে সমস্ত প্রশ্নের নাম্বরিং ঠিক ভাবে করা হয়েছে কি না বা কোথাও কোনও পয়েন্ট যোগ করতে হবে কিনা। মনে রাখতে হবে, কোনও প্রশ্ন ছাড়া যাবে না। সমস্ত প্রশ্নের কিছু না কিছু উত্তর লিখতে পারলেই নম্বর পাবেন পরীক্ষার্থীরা। শেষের ১০ মিনিটে এই বিষয়টিও তাই খেয়াল করতে হবে যে, সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে কি না।

উত্তর কী ভাবে লিখতে হবে: প্রশ্নের 'টু দ্য পয়েন্ট' উত্তর সমস্ত পরীক্ষকই পছন্দ করেন। তাই যা জানতে চাওয়া হয়েছে তা যদি পয়েন্ট করে উত্তর দেওয়া যায়, তা হলে তা নিঃসন্দেহে পরীক্ষকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। যদি শর্ট নোট লিখতে বলা হয়, সে ক্ষেত্রে অনুচ্ছেদ বা প্যারাগ্রাফের মাধ্যমে উত্তর না লিখে উত্তর দিতে হবে পয়েন্ট করে। এর ফলে পরীক্ষার্থীরা কী বোঝাতে চান, তা-ও স্পষ্ট ভাবে বোঝা যাবে। বই পড়তে হবে খুঁটিয়ে, কারণ তা হলেই পরীক্ষার্থীরা সমস্ত এমসিকিউ বা এসএকিউ-এর উত্তর 'কমন' পাবেন। এই এমসিকিউ এবং এসএকিউ-এর উত্তর করেই প্রচুর নম্বর তুলতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। বই থেকে শুধু পড়া মুখস্থ করলে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর করা সম্ভব নয়। কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ঘুরিয়েও আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে বই খুঁটিয়ে পড়া থাকলে বিষয় সংক্রান্ত ধারণা স্পষ্ট হবে পরীক্ষার্থীদের কাছে এবং ওই সব জটিল প্রশ্নের উত্তর সহজেই দেওয়া যাবে।

Advertisement

নিজের ভাষায় ছোট করে পরিষ্কার ভাবে সমস্ত উত্তর লেখা হলেও ভাল নম্বর উঠতে পারে। উত্তর করার সময় 'ইন্ট্রোডাকশন', 'বডি' এবং 'কনক্লিউশন'-- এই ৩টি ভাগে উত্তর দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বা বিভিন্ন টার্মকে 'আন্ডারলাইন' বা 'হাইলাইট' করে দিলেও ভাল। এই সমস্ত বিষয়ই পরীক্ষকদের বিশেষ ভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। বিভিন্ন বিষয়ের পার্থক্য নিয়ে যদি উত্তর লিখতে হয়, তা হলে সে ক্ষেত্রে পয়েন্ট করে উত্তর না দিয়ে ছক কেটে উত্তর দিতে হবে।

গুরুত্বপূর্ণ টপিক: এই বছর 'ইন্টেলিজেন্স' চ্যাপ্টার থেকে গুরুত্বপূর্ণ 'স্পিয়ারম্যানের টু ফ্যাক্টর থিওরি', 'থার্স্টোনের প্রাইমারি মেন্টাল এবিলিটি-র থিওরি' এবং 'গিফটেড এবং ব্যাকওয়ার্ড চিলড্রেন'। 'গিফটেড এবং ব্যাকওয়ার্ড চিলড্রেন' থেকে আইডেন্টিফিকেশন, কারণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি পড়ে যেতে হবে। এই বিষয়গুলি থেকে বড় প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা রয়েছে এই বছর। 'স্ট্যাটিস্টিক্স'-এর অঙ্ক দেখে যেতে হবে। এ ছাড়া এর থেকে 'নরমাল প্রোব্যাবিলিটি কার্ভ (এনপিসি)' এবং 'রোল অব স্ট্যাটিস্টিক্স ইন সাইকোলজি'-- এই দু’টি টপিক খুব গুরুত্বপূর্ণ এই বছর। 'ডিজঅর্ডার'-এর অধ্যায়টিও গুরুত্বপূর্ণ। একটি প্রশ্ন এখান থেকে আসবেই। ডিজঅর্ডারটি কী, তার কারণ, সিম্পটমস এবং ট্রিটমেন্ট ভাল ভাবে পড়ে যেতে হবে পড়ুয়াদের। এর মধ্যে আবার 'স্কিৎজোফ্রেনিয়া' থেকে 'হেবিফ্রেনিক' এবং 'ক্যাটাটনিক' বিষয়ে প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি। 'সাইকোসিস' এবং 'নিউরোসিস'-এর পার্থক্যও দেখে যেতে হবে বড় প্রশ্নের জন্য। 'সোশ্যাল বিহেভিয়র এবং গ্রুপ' অধ্যায় থেকে লিডারের কাজ , বৈশিষ্ট্য, বিভিন্ন ধরনের লিডারশিপ এসএকিউ-এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাকি বিষয়গুলি বড় প্রশ্নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 'অ্যাটিটিউড' অধ্যায়টিও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। 'কগনিটিভ ডিজোনেন্স' এলে 'স্মোকিং কজেস ক্যানসার'- বিষয়টি খাতায় উল্লেখ করতে হবে। আঁকতে হবে ছবিও। চার্ট বা ছক কেটে বোঝাতে হবে বিষয়টি। 'পার্সোন্যালিটি' অধ্যায় থেকে টাইপ থিওরি, ট্রেট থিওরি, পার্সোন্যালিটি টাইপস এবং 'ফ্যাক্টরস অফ হেরিডিটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ইন দ্য ডেভেলপমেন্ট অব পার্সোন্যালিটি' গুরুত্বপূর্ণ। অ্যাডজাস্টমেন্ট থেকে বড় এবং ছোট প্রশ্ন আসতে পারে। এ ছাড়া, 'স্ট্রেস' এবং শেষ অধ্যায় থেকে 'এরিকসনের থিওরি' ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

(পরামর্শ দিয়েছেন কলকাতার পাঠভবন স্কুলের সাইকোলজির শিক্ষিকা প্রিয়াঙ্কা দাস। )

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.