বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির গেটের বাইরে ধর্নায় বিজেপি সমর্থকেরা। ছবি: পিটিআই।
জনসভার অনুমতি ঘিরে মোদী-কমিশন সংঘাতের আবহে বৃহস্পতিবার দিনভর নানা ঘটনার সাক্ষী থাকল বারাণসী থেকে দিল্লি।
বারাণসীর বেনিয়াবাগে জনসভার অনুমতি নাকচ করে দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এ দিন কার্যত সরাসরি যুদ্ধে নামে বিজেপি। কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগ এনে এ দিন বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির সামনে ধর্নায় বসেন অরুণ জেটলি, অমিত শাহ, আনন্ত কুমার-সহ বিজেপি-র একাধিক শীর্ষ নেতা। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে সভার অনুমতি না দেওয়ায় রিটার্নিং অফিসার প্রাঞ্জল যাদবের দ্রুত অপসারণ দাবি করেন তাঁরা। অন্য দিকে, দিল্লিতেও এ দিন ছিল একই চিত্র। দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপি সমর্থকেরা। দিনভর এই নাটকের মধ্যেই বারাণসী থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে রোহানিয়ায় রোড শো করলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। প্রচণ্ড চাপের মুখেই এই অনুমতি নাকচ হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে বিঁধলেন মোদী। সভায় এ দিন তিনি বলেন, “কেন্দ্রে মাতা-পুত্রের সরকার কি এক জনকেও নিরাপত্তা দিতে অক্ষম?”
বারাণসীর বেনিয়াবাগ এলাকায় এ দিন জনসভা ও গঙ্গাপুজো করতে চেয়ে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি চান নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এই কারণ দেখিয়ে অনুমতি নাকচ করে দেয় নির্বাচন কমিশন। রিটার্নিং অফিসার প্রাঞ্জল যাদব সংবাদমাধ্যমকে জানান, বেনিয়াবাগ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় জনসভার অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিন্তু সন্ধ্যের পরে বারাণসীর যে কোনও একটি ঘাটে ‘গঙ্গা আরতি’র অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, কমিশনের এই দাবিকে কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। বিজেপি সূত্রে এ দিন জানানো হয়েছে, অনেক দেরি করে অনুমতি আসায় সভা কার্যত প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। কমিশনের তীব্র নিন্দা করে এ দিন টুইটারে মোদী বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। সে জন্যই আমাদের কার্যকর্তারা সত্যাগ্রহের ডাক দিয়েছেন।”
বারাণসীতে নির্বাচনী প্রচারে মোদী। ছবি: পিটিআই।
অন্য দিকে, কমিশনের কর্তাব্যক্তিদের আরও সাহসী হওয়া প্রয়োজন বলে এ দিন মন্তব্য করেন অরুণ জেটলি। তাঁর দাবি, নিরাপত্তাকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছে কমিশন। তিনি বলেন, “ক্ষমতার শীর্ষে যখন দুর্বল ব্যক্তিরা থাকেন, গণতন্ত্র এই ভাবেই সঙ্কটের মুখে পড়ে।” ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মুখতার আব্বাস নাকভি জানান, মোদীকে আটকাতেই এই চড়াই-উতরাই তৈরি করা হয়েছে। অনুমতি নাকচের পিছনে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র’ কাজ করছে। স্নায়ুযুদ্ধের এই আবহেই বিজেপি-র অভিযোগের তীব্র বিরোধিতা করে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ভি এস সম্পত জানান, কমিশন কাউকে ভয় পায় না। সাহসের সঙ্গেই নিরপেক্ষ ভাবে কমিশনের কর্মকর্তারা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন।
অন্য দিকে, এই নাটকে নতুন রং চড়ান আপ নেতা অরবিন্দ কেজরীবাল। দিল্লি থেকে বারাণসী, এই বিক্ষোভকে কটাক্ষ করে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জানান, গঙ্গা আরতি করতে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি লাগে না। তাঁর দাবি, এর পিছনে মোদীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই কাজ করছে। এই প্রসঙ্গে মোদীকে তাঁর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy