বীরভূমের বিজেপি নেতা সদাই শেখকে মহম্মদবাজারের ভাঁরকাটা এলাকা থেকে রবিবার সকালে গ্রেফতার করল পুলিশ। চৌমণ্ডলপুরে পুলিশকে আক্রমণ, মাখড়ায় তৃণমূল কর্মী খুন এবং এলাকায় নানা অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এ দিন তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এ দিন দুপুরে তাঁকে সিউড়ি আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ ১৪ দিনের হেফাজত চাইলেও বিচারক সদাই শেখের ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
কে এই সদাই শেখ?
এক সময় অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ এবং এলাকার সক্রিয় তৃণমূল নেতা ছিলেন তিনি। দলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’-এর জেরে যে সব তৃণমূল নেতা-কর্মী দল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন তাঁদের অন্যতম সদাই শেখ। সম্প্রতি বিজেপি যোগ দিয়েছিলেন তিনি। গত ২৪ অক্টোবর চৌমণ্ডলপুরে বোমা এবং অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে গ্রামবাসীদের আক্রমণের মুখে পড়ে আহত হন পাড়ুই থানার ওসি প্রসেনজিত্ দত্ত। সে দিন পুলিশকে আক্রমণে সদাই শেখের নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ করে তৃণমূল। পুলিশ সদাই শেখ-সহ ৪৩ জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে।
এই ঘটনার দু’দিন পরেই অর্থাত্ ২৭ অক্টোবর গ্রাম দখলের লড়াইকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাড়ুই থানার অন্তর্গত মাখড়া গ্রাম। উভয় পক্ষের বোমাবাজি ও গুলির লড়াইয়ে নিহত হন তিন জন। তাঁদের মধ্যে দু’জন তৃণমূলকর্মী এবং একজন বিজেপিকর্মী ছিলেন। গোটা ঘটনার জন্য সেই সদাই শেখের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলে শাসক দল।
গত দু’মাস ধরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তপ্ত বীরভূম জেলা। শুরু হয়েছিল চৌমণ্ডলপুরের ঘটনা দিয়ে। তার পর একে একে মাখড়া, যাদবপুর, সিরশিট্টা— পাড়ুই থানার অন্তর্গত এই গ্রামগুলিতে রাজনৈতিক হিংসা ছড়ায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই সব গ্রামগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বীরভূম জেলা বিজেপি নেতৃত্ব অভিযোগ তোলেন, পুলিশ বেছে বেছে বিজেপির সমর্থকদের গ্রেফতার করছে। তল্লাশির নামে তাদের সমর্থকদের বাড়িতে অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।
অন্য দিকে চৌমণ্ডলপুর থেকে মাখড়া— সব ক্ষেত্রেই জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে মোস্তাক হোসেন, শেখ মোস্তাফা এবং নুরুল ইসলাম নামে তিন তৃণমূলকর্মীরও। পুলিশের খাতায় এই তিন জনের নাম থাকলেও শাসক দলের চাপে পুলিশ ওই তিন অভিযুক্তকে ধরতে সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবার সদাই শেখকে গ্রেফতারের পর সেই বিতর্ক আরও উস্কে দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy