অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ থাকলেও মোটামুটি শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হল বনগাঁ লোকসভা এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তেমন কোনও বড় অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। উপনির্বাচনের স্বাভাবিক প্রবণতাকে উড়িয়ে দিয়ে দুই কেন্দ্রেই বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৮০ শতাংশের উপরে ভোট পড়েছে।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গয়েশপুর থেকে। শাসক দলের বিরুদ্ধে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ভোট লুঠের অভিযোগ করেছে বিজেপি। কয়েকটি বুথে বিজেপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে গয়েশপুরে কিছু ক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে বিজেপি সমর্থকেরা। নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁদের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে শেষে।
সারদা কাণ্ডে জর্জরিত শাসকদলের কাছে এই দুই কেন্দ্রের নির্বাচন অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ ছিল। এর মধ্যে গোদের উপর বিষফোড়ার মতো রয়েছে তৃণমূলের অন্তর্কলহ। তাই এই দু’টি কেন্দ্রই নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া তৃণমূল। পাল্টা লড়াই দিতে মাঠে নামে বিজেপি, সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি। বনগাঁ উপনির্বাচনের ঠিক আগে দল ছেড়ে বিজেপি-র প্রার্থী হন তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের ছেলে সুব্রত ঠাকুর। তৃণমূল যদিও ওই কেন্দ্রের প্রাক্তন সাংসদ কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুরকে পাল্টা প্রার্থী করে। এর পর থেকে ক্রমেই বড় হয়ে ওঠে ঠাকুরবাড়ির ফাটল, প্রকাশ্যে আসে পারিবারিক কোন্দল। ভোটের সকালেও বাদ যায়নি সেই কাদা ছোড়াছুড়ি। এবং এ বারেও কোন্দল বড়মা বীণাপানিদেবীকে নিয়ে। প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর নাতি সুব্রতকে সমর্থন না করে মমতাবালাকেই ‘আশীর্বাদ’ করেন বড়মা। এ দিন তৃণমূলের বিরুদ্ধে বড়মাকে ‘গুম’ করার অভিযোগ করেছেন মঞ্জুলকৃষ্ণ এবং সুব্রত। প্রাক্তন মন্ত্রীর অভিযোগ, “ভাবতেই পারিনি মা-কে নিয়ে ওরা চলে যাবে। কারসাজি করে ৯৬ বছরের এক বৃদ্ধাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছে তৃণমূলের গুন্ডারা।” তাঁর দাবি, “মতুয়ারাই এর জবাব দেবে।” একই অভিযোগ করেছেন বিজেপি প্রার্থী তথা মঞ্জুলকৃষ্ণের ছেলে সুব্রত ঠাকুরও। তবে এই অভিযোগ একেবারে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ বীণাপানিদেবী নিজে বুথে গিয়ে ভোট দিয়েছেন বলে খবর।