Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

চিলাপাতা জঙ্গল থেকে বেরিয়ে মথুরা চা-বাগানে সাত বাইসন

পয়লা বৈশাখের সাত সকালে তাদের দেখে তো শ্রমিকদের মাথায় হাত! আলিপুরদুয়ারের মথুরা চা-বাগানে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাতটি বাইসনের একটি দল। পায়ের দিকে তাকালে মনে হবে হাঁটুর নীচ থেকে তারা সাদা মোজা পরে রয়েছে। বাগানের ভেতরে ছোটাছুটি করছে এ দিক সে দিক। আতঙ্কে সকলেই ঘরদোর বন্ধ করে ভেতরে সেঁধিয়েছেন। কিন্তু, তাতে তাদের মোটেও ভ্রূক্ষেপ নেই। তারা আপন মনে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৫ ১৩:২৩
Share: Save:

পয়লা বৈশাখের সাত সকালে তাদের দেখে তো শ্রমিকদের মাথায় হাত! আলিপুরদুয়ারের মথুরা চা-বাগানে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাতটি বাইসনের একটি দল। পায়ের দিকে তাকালে মনে হবে হাঁটুর নীচ থেকে তারা সাদা মোজা পরে রয়েছে। বাগানের ভেতরে ছোটাছুটি করছে এ দিক সে দিক। আতঙ্কে সকলেই ঘরদোর বন্ধ করে ভেতরে সেঁধিয়েছেন। কিন্তু, তাতে তাদের মোটেও ভ্রূক্ষেপ নেই। তারা আপন মনে তখন ঘুরে বেড়াচ্ছে।

আদতে এই বাইসনেরা চিলাপাতা জঙ্গলের বাসিন্দা। চার-পাঁচ কিলোমিটার দূরের সেই জঙ্গল থেকে বুধবার মথুরা চা-বাগানে তাদের ঢুকে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন শ্রমিকেরা। সকাল তখন সাতটা। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। চিলাপাতা রেঞ্জের এসিএস রামপ্রসাদ এবং জলদাপাড়ার এ ডব্লিউ এল ডব্লিউ বিমল দেবনাথের নেতৃত্বে বনকর্মীদের বিশাল বাহিনী মথুরা চা-বাগানে পৌঁছয়। তাদের সঙ্গে পুলিশ কর্মীরাও ছিলেন।

বন ও পুলিশ কর্মীরা আসার পরে দেখা যায় সাতটি বাইসনের একটি হঠাত্ই দলছুট হয়ে পড়ে। তাকে কোনও রকমে ধাওয়া দিয়ে আধ ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ চিলাপাতা জঙ্গলমুখী করে দেন বনকর্মীরা। বাকি ছ’টি বাইসন এ দিন দুপুর পর্যন্ত ওই চা-বাগানে একটি ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে। তাদের দেখতে এলাকার প্রচুর মানুষ ভিড় জমিয়েছেন চা-বাগানে। তবে তারা কারও উপর কোনও হামলা চালায়নি।

কিন্তু, হঠাত্ জঙ্গল ছেড়ে বাইসনেরা বাইরে বেরিয়ে এল কেন?

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলে এই সময় খাবারের জোগান কম। খাবার বলতে ঘাস। শীতের সময় সেই ঘাস মরে যায়। গরম পেরিয়ে বর্ষা এলে জঙ্গলে ফের গজাতে শুরু করবে কচি ঘাস। তবে, কালবৈশাখীর বৃষ্টিতে জঙ্গলের বাইরের এলাকায় ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে সবুজ দূর্বা। আর নতুন সেই দূর্বাদলের খোঁজেই সম্ভবত জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে সাত বাইসন।

বনকর্মীরা জানিয়েছেন, বিকেল গড়িয়ে আলো মরে আসতে শুরু করলে বাকি বাইসনেরা দলবদ্ধ ভাবে জঙ্গলে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা। তত ক্ষণ তাঁরা ঘাঁটি গেড়ে থাকবেন মথুরা চা-বাগানে। তাঁদের আশঙ্কা, বাইসনদের বেশি বিরক্ত করলে তারা হয়তো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে। সেই কারণেই আপাতত তাঁরা আলো নিভে আসার অপেক্ষায় রয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE