Advertisement
E-Paper

সুনতালেখোলাকে ঘিরে বড় পর্যটন প্রকল্প, উত্তরবঙ্গ সফরে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

পর্যটন শিল্পকে ঢেলে সাজতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লামাহাটা, তাগদার পর এ বার দার্জিলিং জেলার সুনতালেখোলাকে ঘিরে একটি বড় পর্যটন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে তাঁর সরকার। পর্যটন, বন এবং যুবকল্যাণ দফতরের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে রেখে ওই প্রকল্প গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন তিনি।

দেবাশিস ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ১৭:০৬
সুনতালেখোলার পাহাড়ি পথে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সব্যসাচী ঘোষ।

সুনতালেখোলার পাহাড়ি পথে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: সব্যসাচী ঘোষ।

পর্যটন শিল্পকে ঢেলে সাজতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লামাহাটা, তাগদার পর এ বার দার্জিলিং জেলার সুনতালেখোলাকে ঘিরে একটি বড় পর্যটন প্রকল্প হাতে নিচ্ছে তাঁর সরকার। পর্যটন, বন এবং যুবকল্যাণ দফতরের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে সঙ্গে রেখে ওই প্রকল্প গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন মমতা। ওই দিন দুপুরে বাগডোগরা নামার পরে ঝড়বৃষ্টি মাথায় করে সন্ধ্যায় সুনতালেখোলায় বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোয় পৌঁছন তিনি। দুর্যোগের মধ্যে তিনি আর ওই সন্ধ্যায় বাইরে বেরোননি। কিন্তু, মঙ্গলবার সকালে আবহাওয়া ঠিক হতেই বেরিয়ে পড়েন। এ দিন তিনি দু’দফায় বেরোন। প্রথমে পর্যটন এবং বন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে ওই এলাকায় প্রায় সাত কিলোমিটার পায়ে হেঁটে ঘোরেন। এর পর আধ ঘণ্টা বিরতি নিয়ে ফের বেরিয়ে পড়েন নেওড়া ভ্যালি প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রায় আড়াই হাজার মিটার উঁচুর মৌচুকির উদ্দেশে। খাড়াই এবং রুক্ষ পাথুরে পথে প্রায় সাত কিলোমিটার পায়ে হেঁটে মৌচুকিতে পৌঁছন তিনি।

সুনতালেখোলায় ঘোরার সময় ওই জায়গাকে ঘিরে ছয়-সাত কিলোমিটার এলাকা জুড়ে একটি বড় পর্যটন প্রকল্পের কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটন ও বন দফতরের আধিকারিকদের এ বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মোবাইলে কথা বলেন যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গেও।

প্রকল্প গড়ে তুলতে কী নিদান দিলেন মমতা?

অপরূপ সুনতালেখোলা।

এলাকায় অনেক নতুন নতুন ভিউপয়েন্ট তৈরি করতে হবে। কটেজের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে সুইস কটেজও। ঠিক করতে হবে এলাকার রাস্তাঘাট। তবে, পরিকাঠামো ব্যবস্থার উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন তিনি। অরূপবাবুকে ওই এলাকায় একটি যুব আবাস গড়ে তোলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। যেখানে ডর্মেটরিতে কম খরচে পর্যটকেরা থাকতে পারবেন। এর আগে লামাহাটা ও তাগদায় মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই এই ধরনের পর্যটন প্রকল্প গড়ে তোলা হয়। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলনের জেরে বছরখানেকের মধ্যেই তা পুড়ে যায়। ভস্মীভূত হয়ে যায় তাগদা ক্যান্টনমেন্ট ক্লাবের বাংলো।

এমনিতে কালিম্পং মহকুমার মধ্যে পড়ে সুনতালেখোলা। কিন্তু, আলিপুরদুয়ার থেকেও খুব বেশি দূরে নয় এই পর্যটনকেন্দ্রটি। এই মুহূর্তে বন উন্নয়ন নিগমের আটটি কটেজ আছে এখানে। আছে দু’টি হনিমুন কটেজ এবং ২৮টি তাঁবু। চালসা পেরিয়ে সামসিং হয়ে সুনতালেখোলা পৌঁছতে হয়। এখানে যেমন চা-বাগান, পাহাড় রয়েছে, তেমনই মূর্তি নদী বা জঙ্গল এলাকাও খুব একটা দূরে নয়। কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই রয়েছে গরুমারা জাতীয় উদ্যান এবং চাপড়ামারি অভয়ারণ্য। সুনতালে মানে কমলালেবু এবং খোলার অর্থ নদী। সেই সুনতালে নদীর উপরের ঝুলন্ত ব্রিজ পেরিয়ে যেতে হয় বন উন্নয়ন নিগমের কটেজগুলিতে। ভুটান সীমান্তও এখান থেকে বেশ কাছে।

আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে এই প্রকল্পকে তুলে ধরার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী আঞ্চলিক পর্যটকদেরকেই বেশি গুরুত্ব দিতে চেয়েছেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে কলকাতা-সহ এ রাজ্যের নানা জায়গা থেকে পর্যটকরা ভিড় জমান পাহাড় ও ডুয়ার্সে। বাদ যান না অন্য রাজ্যের পর্যটকরাও। পর্যটন মরসুমে দেশি-বিদেশিদের চাপে এই এলাকার সব ক’টি থাকার জায়গাই প্রায় ভর্তি থাকে। অনেকে জায়গা না পেয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হন। মরসুম বাদে অন্য সময়েও প্রায় ৫০ শতাংশ জায়গা ভর্তি থাকে বলে পর্যটন কর্তাদের দাবি। মুখ্যমন্ত্রী সে জায়গা থেকেই এই প্রকল্প গড়ে তোলার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। যাতে বাণিজ্যিক ভাবে প্রকল্পটি সফল হয়। শুধু সরকারি উদ্যোগ নয়, মুখ্যমন্ত্রী ‘হোম স্টে’র সংখ্যাও বাড়াতে বলেছেন। যার ফলে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে বলে তাঁর আশা।

mamata banerjee north bengal tourism project suntalekhola Hill Dooars Darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy