—ফাইল চিত্র।
অবশেষে কয়লার দাগ লাগল মনমোহন সিংহের গায়ে।
কয়লা-কাণ্ডে এর আগে নাম জড়ালেও সরাসরি অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি তাঁকে। কিন্তু, এ বার ওই মামলায় অভিযুক্ত হিসেবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে ডেকে পাঠাল দিল্লির বিশেষ সিবিআই আদালত। আগামী ৮ এপ্রিলের মধ্যে মনমোহন-সহ ছয় অভিযুক্তকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ভরত পরাশর। মনমোহন যদিও জানিয়েছেন, নির্দেশনামা এখনও হাতে পাননি। সেটা পাওয়ার পর আইনজীবীদের পরামর্শ মতো পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন।
মনমোহনের সঙ্গে হিন্ডালকো ইন্ডাস্ট্রিজ, ওই সংস্থার চেয়ারম্যান তথা শিল্পপতি কুমারমঙ্গলম বিড়লা, সংস্থার দুই পদাধিকারিক শুভেন্দু অমিতাভ এবং ডি ভট্টাচার্য, প্রাক্তন কয়লাসচিব পি সি পরেখের নামেও সমন জারি করেছে আদালত। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
সংসদে অধিবেশন চললে তিনি নিয়ম করেই হাজিরা দেন রাজ্যসভায়। এ দিনও এসেছিলেন। আদালতের নির্দেশ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “নির্দেশনামা হাতে পাইনি। তবে সত্য উদ্ঘাটিত হবেই। তদন্তে সাহায্য করতে আমি প্রস্তুত। মর্মাহত, তবে এটাও তো জীবনের অংশ।”
২০০৫-এ ওড়িশার তালাবিরাতে বিড়লার সংস্থা হিন্ডালকোকে কয়লাখনি বণ্টন করে ইউপিএ সরকার। সেই সময় কয়লা মন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর হাতে ছিল। কিন্তু, ওই খনি বণ্টনকে ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১৩-র অক্টোবরে সিবিআই হিন্ডালকো প্রধান কুমারমঙ্গলম এবং তৎকালীন কয়লাসচিব পরেখের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। সেখানে বলা হয়, স্ক্রিনিং কমিটির সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে হিন্ডালকোকে বরাত পাইয়ে দেন সচিব। পরেখ যদিও প্রধানমন্ত্রীর কোর্টে বল ঠেলে জানিয়ে দেন, কয়লা মন্ত্রক মনমোহনের দায়িত্বে থাকায় এই ঘটনায় তিনি দায়ী।
পরে সিবিআই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের কর্তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও মনমোহনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। আদালত এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে। ২০১৪-র ২৫ নভেম্বর বিচারক পরাশর সিবিআইকে প্রশ্ন করেন, “আপনাদের কি মনে হয়নি, এ বিষয়ে কয়লামন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি?” এর পরে গত ১৬ ডিসেম্বরে তিনি সিবিআইকে মামলার পুনর্তদন্তের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি তিনি সিবিআইকে বলেন, “আশা করি এ বার অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে কয়লামন্ত্রীর বয়ানও রেকর্ড করা হবে।” গত ২৮ জানুয়ারি কয়লা কেলেঙ্কারিতে মনমোহনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্য আদালতে জমা দেয় সিবিআই।
চিরকাল তাঁকে ‘দুর্নীতিমুক্ত প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে তুলে ধরা কংগ্রেস বুধবারের এই নির্দেশে যথেষ্ট অস্বস্তিতে। আদালতের এ দিনের নির্দেশ জানার পর কংগ্রেসের মুখপাত্র সঞ্জয় ঝা বলেন, “আদালত সমন জারি করে কাউকে ডেকে পাঠালেই তিনি দোষী প্রমাণিত হন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy