প্রমথনাথ মান্না। ছবি: শৌভিক দে।
এমপিএস কর্তা প্রমথনাথ মান্নাকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল আদালত। সোমবার সিবিআই-এর আর্জি মেনে এই নির্দেশ দেন বিধাননগর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) অপূর্বকুমার ঘোষ।
সারদা ও রোজভ্যালির পর এ রাজ্যে অন্য লগ্নি সংস্থাগুলি নিয়ে তদন্তে নেমেছে সিবিআই। বিধাননগর আদালতে সিবিআই আগেই জানিয়েছিল, কোনও অনুমতি ছাড়াই বাজার থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা তুলেছে অর্থলগ্নি সংস্থা এমপিএস। আমানতকারীদের চড়া সুদে টাকা ফেরতের টোপ দিয়ে ওই টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ। এই প্রতারণা-কাণ্ডে কোনও প্রভাবশালী জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখতে গত ১৭ মার্চ এমপিএস-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রমথবাবুকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সিবিআই। এর পর প্রথমে ১০ দিন এবং পরে আরও চার দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার মেয়াদ শেষে এ দিন ফের তাঁকে বিধাননগর আদালতে নিয়ে আসা হয়।
আদালতে সিবিআই আইনজীবী জানান, ১৪ দিন ধরে এমপিএস কর্তাকে জেরা করে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তাঁকে জামিন দিলে প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি করে সিবিআই। ১৪ দিন জেল হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে সিবিআই বলে, জেলেই প্রমথবাবুকে জেরা করবে তারা।
অন্য দিকে, এ দিন অন্য একটি মামলার রায়ে রাজ্য জুড়ে এমপিএস-এর সমস্ত অফিস ও রিসর্ট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই নির্দেশ কার্যকর করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সৌমিত্র পাল। রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, এ রাজ্যে এমপিএস-এর সাড়ে তিনশোর বেশি অফিস রয়েছে। এমপিএস-এ বিনিয়োগ করে টাকা ফেরত না পেয়ে ভাস্কর দাশগুপ্ত নামে এক আমানতকারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। ওই মামলার আবেদনে বলা হয়, ২০১৩ সালে সিকিওরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) বাজার থেকে টাকা তুলতে এমপিএস-এর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কলকাতা হাইকোর্ট সে বছরই এমপিএস-এর সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়। অভিযোগ, তা সত্ত্বেও বাজার থেকে টাকা তোলা বন্ধ করেনি এমপিএস। সেবি এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগও জানায়। এর মধ্যে প্রমথবাবুকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। এমপিএস-এর অন্য ১৪ জন ডিরেক্টরের বিরুদ্ধেও পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন আমানতকারীরা।
এ দিন বিচারপতি পাল নির্দেশ দিয়েছেন, সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধের পরেও এমপিএস যদি নতুন কোনও অ্যাকাউন্ট খুলে থাকে, তবে সেটি বন্ধ করে দেবে তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই এবং ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তদন্তের ক্ষেত্রে সমন্বয় বজায় রাখবে। তারা এমপিএস-এর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে পারবে। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারও তদন্ত করবে। তদন্ত চলবে হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy