দিল্লির নির্ভয়ার সঙ্গে কী হয়েছিল তা মানুষকে জানাতে ভারত সরকার আপত্তি তুলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞায় দিন কযেক আগে তাই ইউটিউব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল লেসলি উডউইনের ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’। তথ্যচিত্রটি সম্প্রচারের জন্য বিবিসি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে মোদী সরকার। এরই মধ্যে নিউ ইয়র্কে প্রিমিয়ার শো হল ‘ইন্ডিয়াজ ডটার’-এর।
সোমবারের ওই প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী মেরিল স্ট্রিপ এবং ফ্রিডা পিন্টো। ভারতীয় অভিনেতা-পরিচালক ফারহান আখতারও হাজির ছিলেন সেখানে। ফারহানের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিল, তথ্যচিত্রটির উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞায় মোটেও সায় নেই তাঁর। তিনি কিছু না বললেও, পরোক্ষে ভারত সরকারের সমালোচনায় সরব হন মেরিল। বারুচ কলেজ অব সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক-এর ওই প্রিমিয়ারে তিনি বলেন, “নারীর উপর পাশবিক অত্যাচারের থেকেও আরও খারাপ হল বিষয়টিকে সহ্য করে নির্বিকার থাকা।” অনুষ্ঠানে মেরিল, ফ্রিডা পিন্টো আর উডউইনের মুখে বার বার শোনা গিয়েছে নির্ভয়ার প্রকৃত নাম। ভারত সরকার গোপনীয়তা বজায় রাখতে চাইলেও বিশ্ব-দরবারে নির্ভয়াকে তুলে ধরলেন তাঁরা।
এ দিন অনুষ্ঠানস্থলে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অসংখ্য মানুষ নীরবে, দীর্ঘশ্বাসে ঘণ্টাখানেক ধরে ভাগ করে নিলেন নির্ভয়ার যন্ত্রণা। ধর্ষকের আত্মসমর্থন, ভবিষ্যতে উত্সাহ জোগাতে পারে— সরকারের এমন চিন্তাকে অমূলক প্রমাণ করে ক্ষোভের গুঞ্জনে ভরে ওঠে প্রেক্ষাগৃহ। ভারত সরকারের এই ঔদাসীন্যের প্রতিবাদে নির্ভয়ার জন্য স্নেহের সুর ধরা দেয় স্ট্রিপের বয়ানে: “মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছিল অনেকগুলো সপ্তাহ, তাও আমরা নির্ভয়ার আসল নাম জানতে পারিনি। শুধু জেনেছিলাম, সে ভারতের মেয়ে। তবে আজ থেকে নির্ভয়া শুধু ভারতের নয়, সে আমাদেরও মেয়ে।”
মেয়ের জন্য কোনও মা অন্ধকার কামনা করেন না। তাই সেই স্নেহ-প্রতিবাদের সঙ্গে মিশে গেল মোমের আলো। স্ট্রিপের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্ভয়ার জন্য আলোর সরণি গড়লেন প্রিমিয়ারে উপস্থিত সকলেই।
আর উডউইন? সরকারের তরফে লাঞ্ছনা পেলেও এ দিন পরিচালকের প্রাপ্য ছিল শুধুই সমর্থন আর সাবাশি! স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা যে তাঁকে ভারতবিমুখ করেনি সে কথাও জানিয়েছেন ওই পরিচালক। তাঁর কথায়, “আমি জানি, ভারতে এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা নির্ভয়ার জন্য সুবিচার চান। পরিবর্তন চান সমাজ ব্যবস্থার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy