Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পড়শির দরজায় পড়ে সোনার দুল, বাড়িতে সাফ আলমারির লকার

‘এটা কি আপনাদের? আমার বাড়ির দরজার সামনে পড়ে ছিল!’ প্রতিবেশী ভদ্রলোকের মুখে প্রশ্নটা শুনে ও হাতে ধরা সোনার দুলটি দেখে চমকে উঠেছিলেন দম্পতি। সেটি যে তাঁদেরই! অবাক হয়ে ওই দম্পতি ভাবতে থাকেন, আলমারির লকারে থাকা ওই গয়না কী করে প্রতিবেশীর দরজার সামনে গেল? ভেবে কোনও কূলকিনারা না পেয়ে শেষে চাবি দিয়ে দু’টি আলমারির লকার খুলে বেমালুম তাজ্জব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ২০:৫৮
Share: Save:

‘এটা কি আপনাদের? আমার বাড়ির দরজার সামনে পড়ে ছিল!’

প্রতিবেশী ভদ্রলোকের মুখে প্রশ্নটা শুনে ও হাতে ধরা সোনার দুলটি দেখে চমকে উঠেছিলেন দম্পতি। সেটি যে তাঁদেরই!

অবাক হয়ে ওই দম্পতি ভাবতে থাকেন, আলমারির লকারে থাকা ওই গয়না কী করে প্রতিবেশীর দরজার সামনে গেল? ভেবে কোনও কূলকিনারা না পেয়ে শেষে চাবি দিয়ে দু’টি আলমারির লকার খুলে বেমালুম তাজ্জব। পুরো লকার ফাঁকা। পড়ে রয়েছে গয়নার খালি বাক্স, উধাও লকারে রাখা নগদ টাকাও!

দরজা-জানলার তালা না ভেঙে আলমারি অক্ষত রেখে, বাড়ির সমস্ত চাবি যথাস্থানে রেখে অভিনব এই চুরির ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার পি কে ব্যানার্জি রোডে। কী করে এমন ঘটল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশও। তবে প্রতিবেশী এক পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই দম্পতি।

পুলিশ সূত্রের খবর, পি কে ব্যানার্জি রোডের একটি চার তলা আবাসনের বাসিন্দা জগদীশ ও কুসুম চন্দাক নামে ওই দম্পতি। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের প্রতিবেশী সুরেশ চৌধুরী সোনার দুলটি নিয়ে তাঁদের কাছে আসেন। সুরেশবাবুর হাতে ওই গয়না দেখে চমকে যান চন্দাক দম্পতি। জানতে চান, তিনি কোথায় ওই দুলটি পেলেন। উত্তরে সুরেশবাবু জানান, তাঁর বাড়ির দরজার সামনে দুলটি পড়ে ছিল। আবাসনের অন্যরা সেটি নিজেদের নয় জানানোর পরে তিনি দুলটি নিয়ে জগদীশের বাড়িতে এসেছেন।

পুলিশ জানায়, এর পরেই গোপন জায়গা থেকে চাবি নিয়ে আলমারির লকার খুলে আরও চমকে যান জগদীশবাবুরা। দেখেন লকারে থাকা গয়নার বাক্সগুলি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। আর একটি ঘরের আলমারির লকার খুলে দেখা যায়, মানিব্যাগে রাখা নগদ প্রায় আট হাজার টাকা উধাও। তবে দু’টি আলমারির কোনও কিছুই লণ্ডভণ্ড হয়নি।

শুক্রবার সকালে পুলিশের কাছে গিয়ে রহস্যজনক ভাবে লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না ও নগদ টাকা উধাও হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন জগদীশবাবু। তিনি জানান, গত ২৫ নভেম্বর সকালে আত্মীয়দের সঙ্গে নিকো পার্কে বেড়াতে গিয়েছিলেন কুসুমদেবী। জগদীশবাবু গিয়েছিলেন অফিসে। সে দিনই এই চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন ওই দম্পতি। কুসুমদেবী বলেন, “ফ্ল্যাটের চাবি পাশের বাড়ির এক জনের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। বেশ কয়েক বছর ধরে ওঁর কাছেই চাবি রেখে আমরা বাইরে যাই। কোথাও কোনও কিছু ভাঙা না থাকায় কিছু বুঝতেও পারিনি।” ওই প্রতিবেশীর নামেও পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন জগদীশবাবু। তবে প্রতিবেশী ওই মহিলার দাবি, “১৬ বছর ধরে ওঁরা আমাদের কাছে চাবি রাখছেন। চাবি রেখে কয়েক দিনের জন্য দেশে বেড়াতেও যান। এত দিন কিছু হল না। কী ভাবে চুরি হল, তা জানব কী করে? পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।”

পুলিশ সূত্রের খবর, জগদীশবাবুর ফ্ল্যাটের ভিতরে একটি ছোট মন্দির রয়েছে। তার মধ্যেই আলমারির লকারের চাবি লুকোনো থাকত। তাই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের অনুমান, এই চুরির পিছনে অতি পরিচিত কেউ জড়িত এবং ঘটনার মোড় ঘোরাতেই একটি কানের দুল সুরেশবাবুর বাড়ির সামনে ফেলে রাখা হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

robbery p k banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE