Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধী বিক্ষোভে অশান্ত পাকিস্তান, ফের চালু পিটিভি-র সম্প্রচার

গত তিন দিনের টানা বিক্ষোভে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ইসলামাবাদে। তার মধ্যেই সোমবার বিক্ষোভকারীরা জাতীয় টেলিভিশনের সদর দফতরে ভাঙচুর চালায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় পিটিভি-র সম্প্রচারও। সেনা এসে পরিস্থিতি সামলানোর পর ফের চালু হয় টেলিভিশন সম্প্রচার। এ দিন নতুন করে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে।

চলছে পিটিভি-র দফতরে ভাঙচুর। সোমবার এএফপি-র তোলা ছবি।

চলছে পিটিভি-র দফতরে ভাঙচুর। সোমবার এএফপি-র তোলা ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ১২:২৫
Share: Save:

গত তিন দিনের টানা বিক্ষোভে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে ইসলামাবাদে। তার মধ্যেই সোমবার বিক্ষোভকারীরা জাতীয় টেলিভিশনের সদর দফতরে ভাঙচুর চালায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় পিটিভি-র সম্প্রচারও। সেনা এসে পরিস্থিতি সামলানোর পর ফের চালু হয় সম্প্রচার। এ দিন নতুন করে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়ে। সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিক্ষোভকারীরা ফের পার্লামেন্ট ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও করা হয় বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। পাল্টা আক্রমণ করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোড়া হয়। ভাঙা হয় সচিবালয়ের গেটও। এ দিনের সংঘর্ষে পাঁচ জন জখম হয়েছেন বলে সূত্রের খবর।

এ দিন সকালে ইসলামাবাদে পিটিভি-র সদর দফতরে ঢুকে পড়েন প্রায় আটশো বিক্ষোভকারী। ক্যামেরা ভাঙচুরের পাশাপাশি তাঁরা কন্ট্রোল রুমের ভিতরেও ঢোকেন। বন্ধ করে দেওয়া হয় খবর সম্প্রচার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় খবর দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। তারা এসে বিক্ষোভকারীদের পিটিভি-র কার্যালয় থেকে বের করে দেয়। এর পর ফের চালু হয় খবর সম্প্রচার। এই ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযোগের তির পাকিস্তান-তেহরিক-ই-ইনসাফের দিকে হলেও, দলের প্রধান ইমরান খান পিটিভি-র দফতরে ভাঙচুরের দায় স্বীকার করেননি। তিনি বলেন, “পিটিভি-র দফতরে হামলার ঘটনায় আমাদের কোনও কর্মী জড়িত নয়। দলীয় ভাবে কাউকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন-সহ কোনও দফতরেই ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।”

তেহরিক-ই-ইনসাফ ও আওয়ামি তেহরিকের সমর্থকদের টানা বিক্ষোভের জেরে পাকিস্তানে রাজনৈতিক টানাপড়েন অব্যাহত। এক দিকে ইমরান ও কাদরির অনমনীয় মনোভাব, অন্য দিকে সাম্প্রতিক ঘটনায় পাক সেনার ‘নাক না গলানো’র সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সমস্যা আরও বাড়িয়েছে বলে মনে করছে সে দেশের রাজনৈতিক মহল। পাক সেনার পক্ষ থেকে এও জানানো হয়, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যেতে পারে। পরিবর্তে সরকার ও বিক্ষোভকারীদের আলোচনার পথ বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

এ দিন প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনের ডাক দিয়েছেন নওয়াজ। মনে করা হচ্ছে, সমর্থন আদায় করতেই এই অধিবেশন। গত শনিবারই নতুন করে শরিফের পদত্যাগের সময়সীমা বেধে দিয়েছিল আওয়ামি তেহরিক। কিন্তু সেই সময় পেরিয়ে গিয়েছে গত রবিবারেই। অন্য দিকে, পরবর্তী পদক্ষেপ কী করা উচিত্ তা নিয়ে সেনাপ্রধান রহিল শরিফ এ দিন তাঁর বাহিনীর কম্যান্ডোদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন বলে সূত্রের খবর।

গত শনিবার রাতে বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে বাধা পেয়ে তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের দিকে এগোনোর চেষ্টা করেন। বিক্ষোভকারীদের আটকাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রবার বুলেট ছোড়ে। গত তিন দিন ধরে চলা একটানা আন্দোলন এবং সংঘর্ষের জেরে এখনও পযর্ন্ত নিহত হয়েছেন তিন জন এবং আহতের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE