খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত সাজিদ ও আব্দুল হাকিমকে নিয়ে বেলডাঙায় এনআইএ-এর দল।
খাগড়াগড় বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত সাজিদ ও আব্দুল হাকিমকে নিয়ে আইজি সঞ্জীব সিংহের নেতৃত্বে এনআইএ-এর দশ জনের একটি দল সোমবার মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় যায়। অন্য দিকে, এই বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ঢাকা থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করল বাংলাদেশ পুলিশ। ধৃতেরা জামাতের সদস্য বলে সে দেশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন।
এ দিন সকালে এনআইএ-র ওই দলের কয়েক জন তদন্তকারী অফিসার ধৃতদের নিয়ে বেলডাঙার ছাপাখানার মোড়ে একটি হার্ডওয়্যারের দোকানে যান। সেখান থেকে বিস্ফোরণের জন্য ব্যবহৃত পিভিসি পাইপ কেনা হয়েছিল কি না তা নিয়ে দোকানের মালিক সাবেক মোল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অফিসাররা। তার পরে সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁরা সেখান থেকে আট কিলোমিটার দূরে হাটপাড়ায় পৌঁছন। ওই জায়গায় এই মামলার আর এক অভিযুক্ত হাতকাটা নাসিরুল্লা ভাড়া থাকত। কাজেই সেই বাড়িতে গোয়েন্দারা যেতে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়। যদিও তদন্তকারী অফিসাররা ওই বাড়িতে ঢোকেননি। হাটপাড়া থেকে সাজিদ ও হাকিমকে নিয়ে তাঁরা সোজা চলে যান বেলডাঙা থানায়। সেখানে ওই দু’জনকে জেরা করা হয়। এনআইএ সূত্রে খবর, ওই জেরায় উঠে আসে, খাগড়াগড়ের আগে বেলডাঙাই ছিল জঙ্গিদের প্রথম ঘাঁটি। এর পরে, তদন্তকারী অফিসারদের কয়েক জন বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখান থেকে আর কোনও তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হয়।
গত ২ অক্টোবর বর্ধমানের ওই বিস্ফোরণের কয়েক দিন পরে ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব নেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তে নামার পর থেকেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে তাদের হাতে। জানা যায়, জঙ্গিদের এই নেটওয়ার্ক ভারত-সহ বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে। এ দেশের পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি, বাংলাদেশ এবং মায়ানমারেও তাদের জাল আছে।
গত ১৮ নভেম্বর হায়দরাবাদ থেকে খালিদ মহম্মদ নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে এনআইএ তাকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার পর জানা যায়, ওই ব্যক্তি আদতে মায়ানমারের বাসিন্দা। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে সে হায়দরাবাদে থাকত। অন্য দিকে, কলকাতা বিমানবন্দরের কাছ থেকে গ্রেফতার করা হয় বর্ধমান কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর নেতা সাজিদ ওরফে শেখ রহমতুল্লা। ওই বিস্ফোরণ কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে গত এক মাসে বেশ কয়েক জন জামাত সদস্যকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ। ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে থাকার কারণে গত ২৭ নভেম্বর ভারতে এসে পৌঁছয় বাংলাদেশের একটি তদন্তকারী দল। সে দিনই ধৃত হাকিম, সাজিদ এবং খালিদকে একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করে এনআইএ এবং বাংলাদেশের তদন্তকারী দল। এনআইএ-র সঙ্গে তথ্য আদানপ্রদানের পর রবিবারই ওই দলটি বাংলাদেশে ফিরে যায়।
ভারতে এসে বাংলাদেশের তদন্তকারী দলটি এনআইএ-র হাতে ৫১ জন সন্দেহভাজনের নাম তুলে দেয়। এনআইএ-ও তাদের হাতে ১১ জন সন্দেহভাজনের নামের তালিকা দেয়। ভারত-বাংলাদেশের যৌথ অভিযানে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলি থেক ইতিমধ্যে প্রায় ১০০ জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার পাঁচ জামাত সদস্যের গ্রেফতার তদন্তে আরও গতি আনবে বলে গোয়েন্দাদের আশা।
সোমবার গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy