ভোটের গণনা শেষ হয়েছে ২ মে। অথচ তৃণমূলের বিরোধিতার জেরে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের ইভিএম-গুলি কিছুতেই হলদিয়ার গণনাকেন্দ্র থেকে প্রশাসনিক ফেরত আনা যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তায় নন্দীগ্রামের ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালটগুলি পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার মহকুমা শাসকের হেফাজতে পাঠানো হল। আপাতত সেগুলির ঠাঁই হয়েছে মহকুমা শাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রশাসনিক গুদামে। তৃণমূলের অভিযোগ, বুধবার রাতে লাঠি চালিয়ে জোর করে ইভিএম তুলতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
রবিবার নন্দীগ্রামে ভোট গণনার শেষে নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে ১,৯৫৬ ভোটে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। তার পর থেকেই তৃণমূল অভিযোগ করে আসছে, গণনায় কারচুপি হয়েছে। স্বয়ং মমতা নিজে ফলপ্রকাশের পর দিন অর্থাৎ সোমবার কালীঘাটের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘বন্দুকের নলের মুখে কাজ করতে হচ্ছে রিটার্নিং অফিসারকে।’’ নন্দীগ্রামের ভোট পুনর্গণনার দাবিতে রবিবার রাত থেকেই হলদিয়া গভর্নমেন্ট স্পনসর্ড হাইস্কুলের গণনাকেন্দ্রের অদূরে মঞ্জুশ্রী মোড়ের কাছে টানা অবস্থান চালাচ্ছিলেন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।
যদিও নির্বাচন কমিশনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে পুনর্গণনা হবে না। কিন্তু অনড় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ইভিএমগুলিকে বার করতে দেয়নি। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে প্রশাসনের তরফে ইভিএম বের করতে গেলে অবস্থানরত তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে কর্তব্যরত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান এবং পুলিশের বাগ্বিতণ্ডা হয়। এর পর লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকালে মঞ্জুশ্রী মোড়ে ঘণ্টা খানেক পথ অবরোধ করে তৃণমূল নেতৃত্বরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে হাজির হন সদ্যনিযুক্ত জেলা শাসক পূর্ণেন্দুকুমার মাজি। নির্দেশ পেলে ফের গণনা হবে, এই আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। এরপর ইভিএম এবং পোস্টাল ব্যালটগুলি মহকুমা শাসকের হেফাজতে পাঠানো হয়।