Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Assembly Election 2021

Bengal Polls: শীতলখুচিতে নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেল পরিবার, একটি দেহে নেই বুলেটের চিহ্ন

নিহত সমিউল মিয়াঁর বুকে স্‌প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় রয়েছে শক্ত কোনও বস্তুর আঘাত।

শীতলখুচিতে নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেল পরিবার।

শীতলখুচিতে নিহতদের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেল পরিবার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ২১:৪৮
Share: Save:

শীতলখুচি বিধানসভার ১২৬ নম্বর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিচালনার ঘটনায় নিহত ৪ জনের পরিবারের হাতে বুধবার সরকারি ভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তুলে দেওয়া হল। সেই রিপোর্ট জানাচ্ছে, ৩ জনের মৃত্যুর কারণ বুলেটের আঘাত হলেও চতুর্থ ব্যক্তি সমিউল মিয়াঁ গুলিতে নিহত হননি।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানাচ্ছে, সমিউলের বুকে স্‌প্লিন্টারের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথায় রয়েছে শক্ত কোনও বস্তুর আঘাত। গত ১০ এপ্রিল চতুর্থ পর্বের ভোটগ্রহণের সময় মাথাভাঙা ব্লকের জোরপাটকায় আমতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বুথে অশান্তির সময় সিআইএসএফ গুলি চালিয়েছিল। সমিউলের পাশাপাশি ওই ঘটনায় নিহত হয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা মণিরুল মিয়াঁ, হামিদুল মিয়াঁ এবং নুর ইসলাম মিয়াঁ। তাঁদের ৩ জনের দেহের বুলেটের ক্ষতচিহ্ন রয়েছে বলে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উল্লিখিত হয়েছে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা। ঘটনার পরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছিল তৃণমূল। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দেবাশিস ধর চতুর্থ দফার ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পরে বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ১২৬ নম্বর বুথে একজন ভোটার অসুস্থ হয়ে গেলে তার শুশ্রূষার জন্য বেশ কয়েকজন সেখানে জটলা তৈরি করেন। সেই জটলা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরে এলে, জওয়ানেরা কী হয়েছে তা দেখতে যান। সে সময় স্থানীয়দের একাংশ ভেবে বসেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর আক্রমণেই ওই ভোটার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এরপর গ্রাম থেকে প্রায় ৩০০ জনের একটি দল লাঠি এবং হাতে তৈরি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করে।

পুলিশ সুপার জানান, উত্তেজিত জনতা চড়াও হওয়ায় ইভিএম এবং আগ্নেয়াস্ত্র ছিনতাই হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। তাইকেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালায়। সেই গুলিতে ৪ জনের মৃত্যু হয় এবং একজন আহত হন। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই নতুন তথ্য উঠে এল। কারণ, তাতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজনের শরীরে বুলেটের আঘাত নেই। প্রশ্ন উঠছে, সমিউলের শরীরে স্‌প্লিন্টারের আঘাত কোথা থেকে এল? তাঁর মাথায় কী ভাবে আঘাত লাগলো? সেদিন ঠিক কী হয়েছিল ১২৬ নম্বর বুথে?

তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মেলার পরেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, বোমার স্‌প্লিন্টার বা ভোঁতা কোনও অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যু হয়নি সমিউলের। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সম্পাদক আলিজা রহমান বুধবার বলেন, ‘গুলিতেই ৪ জনের মৃত্যু হয়েছো। কিছু সংবাদমাধ্যম ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভুল ব্যাখ্যা করছে।’’

ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছ থেকে শীতলখুচি-কাণ্ডের তদন্তের ভার সিআইডি নিয়েছে। নিহতদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছেন সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসাররা। পাশাপাশি, ১০ এপ্রিলের গুলিচালনার ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে পৃথক ভাবে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্ত।

এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট স্তরের তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক রিনা জোশী মঙ্গলবার ১২৬ নম্বর বুথে ঘটনার দিন কর্তব্যরত ৪ জন ভোটকর্মী এবং একজন আশা কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন । গত ১০ এপ্রিল বুথে ঠিক কী হয়েছিল সেই বিষয়ে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE