Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কংগ্রেসের ঘর ভেঙেই জয়, দাবি শাসকের

লোকসভা নির্বাচনে এই দুই কেন্দ্রে বামেদের থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার বাম-কংগ্রেস জোট। ফলে জেলার যে ক’টি আসন নিয়ে জোটের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে উঠেছিল, পাড়া এবং জয়পুর তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ফল বেরোতে দেখা গেল, জোটকে প্রায় মাঠের বাইরে নিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। পাড়া কেন্দ্রে ফের জয়ী হয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক তৃণমূলের উমাপদ বাউরি। গত বিধানসভায় ব্যবধান ছিল ছ’শোর কাছাকাছি।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৬ ০২:৫৪
Share: Save:

লোকসভা নির্বাচনে এই দুই কেন্দ্রে বামেদের থেকে পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ বার বাম-কংগ্রেস জোট। ফলে জেলার যে ক’টি আসন নিয়ে জোটের প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে উঠেছিল, পাড়া এবং জয়পুর তার মধ্যে অন্যতম। কিন্তু ফল বেরোতে দেখা গেল, জোটকে প্রায় মাঠের বাইরে নিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। পাড়া কেন্দ্রে ফের জয়ী হয়েছেন বিদায়ী বিধায়ক তৃণমূলের উমাপদ বাউরি। গত বিধানসভায় ব্যবধান ছিল ছ’শোর কাছাকাছি। এবারে সেটা বেড়ে সাড়ে তেরো হাজারেরও বেশি হয়েছে। জয়পুরেও তৃণমূলের বর্ষীয়ান প্রার্থী শক্তিপদ মাহাতোর কাছে কার্যত ধরাশায়ী হয়েছেন ফরওয়ার্ড ব্লকের ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো। উমাপদবাবু এই জয়ের নেপথ্যে যতই উন্নয়নের ফিরিস্তি দিন না কেন, অনেকেই মনে করছেন, পাড়া এবং জয়পুরে কংগ্রেসের ভোটের একটা বড় অংশ জোটের পরিবর্তে তৃণমূলের ঝুলিতে চলে গিয়েছে।

তৃণমূলের অন্দরের কিছু নেতার মতে, দু’টি কারণে পাড়ায় সাফল্য নিশ্চিত হয়েছে তাঁদের। প্রথমত, এই বিধানসভার অন্তর্গত রঘুনাথপুর ২ ব্লকে শাসকদলের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল। উমাপদবাবু ওই ব্লকে সংগঠনের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই দ্বন্দ্ব মিটিয়ে সবাইকে লড়াইয়ের ময়দানে এককাট্টা করতে পেরেছিলেন। এ বারের ফলেও দেখা গিয়েছে, ওই ব্লক থেকেই ভালো ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন উমাপদবাবু। দ্বিতীয়ত, তৃণমূলের এক জেলা নেতার দাবি, গত লোকসভায় কংগ্রেস পাড়া কেন্দ্রে যে ভোট পেয়েছিল, এ বার তার অর্ধেকেরও বেশি তাঁদের দিকে চলে এসেছে। তবে আপাতত বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি জোটের কোনও নেতাই।

জয়পুরে কেন্দ্রে, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া বর্ষীয়ান নেতা শক্তিপদ মাহাতোর জয় সহজ ছিল না বলে দলের অন্দরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি হিসাবে জয়পুর পরিচিত। গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বাম এবং কংগ্রেসের মিলিত ভোট তৃণমূল প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৩৫ হাজার বেশি ছিল। তার উপরে শক্তিপদবাবু প্রার্থী হওয়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও তুঙ্গে উঠেছিল। দলের ব্লক সভাপতির অনুগামীরা প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছিলেন। শেষে ঝামেলা মেটাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করত হয়।

এতগুলি কাঁটা সামলে শেষপর্যন্ত জয়পুরে জয় ছিনিয়ে নিলেন শক্তিপদবাবু। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘মনে রাখতে হবে পাড়া এবং জয়পুর— দু’টি আসনেই আমাদের জেতা দুই প্রার্থী কংগ্রেস থেকে এসেছেন। আসলে কংগ্রেসের নিচুতলার কর্মী সমর্থকরা দীর্ঘদিনের শত্রু বামেদের চেয়ে ওই দুই প্রার্থীকে ভোট দিতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করেছেন।” তবে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তবেই পরাজয়ের কারণ নিয়ে মুখ খুলবেন বলে জানিয়েছেন জয়পুরের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী ধীরেন্দ্রনাথ মাহাতো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 congress cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE