Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শুভশ্রীর চেন্নাই এক্সপ্রেস

টলিউড থেকে এক মাসের ছুটি নিয়ে তিনি এখন অভিনয় করছেন তামিল ছবিতে। লিখছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।বলুন তো শুভশ্রীর ল্যান্ডলাইন নম্বরের এসটিডি কত? ভাবছেন এটা তো সহজ প্রশ্ন। ০৩৩ যে কলকাতার এসটিডি কোড সেটা কে না জানে? কিন্তু না। উত্তরটা সহজ নয়। প্রায় এক মাস যাবত্‌ শুভশ্রীকে ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে গেলে ওঁর নম্বরের আগে ০৩৩ না করে ০৪৪ ডায়াল করতে হচ্ছে।

তামিল ছবি ‘মানে থানে পায়ে’য়ে শুভশ্রী ও আরি।

তামিল ছবি ‘মানে থানে পায়ে’য়ে শুভশ্রী ও আরি।

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০০
Share: Save:

বলুন তো শুভশ্রীর ল্যান্ডলাইন নম্বরের এসটিডি কত?

ভাবছেন এটা তো সহজ প্রশ্ন। ০৩৩ যে কলকাতার এসটিডি কোড সেটা কে না জানে?

কিন্তু না। উত্তরটা সহজ নয়। প্রায় এক মাস যাবত্‌ শুভশ্রীকে ল্যান্ডলাইনে ফোন করতে গেলে ওঁর নম্বরের আগে ০৩৩ না করে ০৪৪ ডায়াল করতে হচ্ছে।

না, পাকাপাকি ভাবে শুভশ্রী কলকাতা ছেড়ে চেন্নাইতে শিফট করেননি।

একটা তামিল ছবির শ্যুটিং করতে ৮ নভেম্বর গিয়েছেন সেখানে। কলকাতায় ফিরছেন ১২ ডিসেম্বর।

সিনেমার নাম ‘মানে থানে পায়ে।’ “এটা একটা শহুরে প্রেমের গল্প। বলিউডে যেমন আজকাল বাণিজ্যিক আর প্যারালাল ছবির সে ভাবে বিভাজন নেই, এখানেও তাই। বাংলায় এখনও তা রয়েছে। কারণ ওখানে বেশির ভাগ বাণিজ্যিক ছবি রিমেক হয়। আর অন্য ধারার ছবি মানেই সেটা অরিজিনাল গল্প। কিন্তু এখানে প্রায় সব ছবি অরিজিনাল। তাই সে ভাবে বিভাজনটা এখানে নেই,” জানাচ্ছেন শুভশ্রী।

এত দিন বেশ কয়েকটা তামিল আর তেলুগু ছবির বাংলা রিমেকে অভিনয় করার পর নিজেই এখন একটা দক্ষিণী ছবির নায়িকা হয়েছেন শুভশ্রী। কেমন লাগছে অনুভূতিটা? “ফ্যান্টাসটিক ফিলিং। এই ছবিটা রিমেক নয়। আরও খুশি হব যদি এই ছবিটা কোনও দিন বাংলায় রিমেক হয়। আর সেখানে আমাকেই নায়িকা হিসেবে কাস্ট করা হয়,” জানাচ্ছেন তিনি।

কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল যে তামিল ছবির বাজেট নাকি ৫০ কোটি। শুভশ্রীকে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করাতে তিনি বলেন, “ না, ৫০ কোটি নয়। তবে আমার কাছে এটা বেশ বড় বাজেটের ছবি।”

ছবির পরিচালক এন কৃষ্ণা। এর আগে মাত্র দুটো ছবি করে কৃষ্ণা তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে দারুণ নাম করে ফেলেছেন। তাঁর পরিচালনায় প্রথম ছবি ‘সিলুনু ওরু কাদাল’। অভিনয় করেছিলেন তামিল ‘গজনি’ খ্যাত অভিনেতা সুরিয়া। এ ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন এ আর রহমান। দ্বিতীয় ছবি ‘নেদুলছল্লাই’ সাফল্য পাওয়ার পরে পরিচালক তাঁর তৃতীয় ছবির কাজ শুরু করেন এই বছর। তৃতীয় ছবিতে নায়ক হিসেবে শুভশ্রীর বিপরীতে বেছে নিয়েছেন তাঁর দ্বিতীয় ছবির নায়ক আরি-কে।

এর আগে ভূমিকা চাওলা, জোথিকার মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করেছেন কৃষ্ণা। হঠাত্‌ টলিউড থেকে শুভশ্রীকে পছন্দ করলেন কেন? “সেলভাজি আমার নামটা সাজেস্ট করেছিলেন। টলিউডে আমি সেলভাজির সঙ্গে কাজ করেছিলাম ‘বস’ আর ‘গেম’ ছবির জন্য। উনি ওই ছবিগুলোর চিত্রগ্রাহক ছিলেন।”

ছবিতে শুভশ্রী থাকছেন এক ডাক্তারের ভূমিকায়। সেই চরিত্রের বয়ফ্রেন্ড এক সফ্‌টওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। ছবির গল্প দু’জনের লিভ-ইন রিলেশনশিপ নিয়েই। ব্যক্তিগত জীবনে শুভশ্রী কি লিভ-ইন সম্পর্ককে সমর্থন করেন? “আমি বিয়েকেই সমর্থন করি। কিন্তু বিয়ের পর ডিভোর্সকে নয়। যদি দু’জনে কমিটেড হয়, এবং ঠিক করে যে কিছু বছর পর বিয়ে করবেই, তা হলে বিয়ে পর্যন্ত লিভ-ইন করে নিজেদের চিনে নেওয়াতে কোনও সমস্যা নেই,” সাফ জানাচ্ছেন তিনি।

বেশ কিছু দিন শ্যুটিং হয়ে গিয়েছে চেন্নাইতে। নতুন জায়গা, বড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিসব কিছুই বেশ পছন্দ হয়েছে শুভশ্রীর। দাবি করছেন যে পরিচালককে জিজ্ঞেস করলে উনিও নাকি বলবেন, অচেনা ভাষায় শ্যুট করতে গিয়েও তিনি ওয়ান টেক-য়ে ওকে দিচ্ছেন। বাড়ির বাইরে নতুন এক ইন্ডাস্ট্রিতে শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা ভাল। গোটা ইউনিট নাকি চেষ্টা করছে যাতে তাঁর কোনও অসুবিধা না হয়। “আমি সব সময় চেয়েছিলাম কেরিয়ারে দুটো তামিল আর তেলুগু ছবি করতে। এই তামিল ছবির অফার পেয়ে দারুণ খুশি। স্টার ডিরেক্টর। বড় প্রোডাকশন হাউজ। বাংলা রিমেক ছবি করলে আমরা সাধারণত একবার অরিজিনাল ছবিটা দেখি। তা ছাড়া আজকাল টেলিভিশনে প্রায়ই হিন্দিতে ডাব করে তামিল-তেলুগু ছবি দেখানো হয়। তাই ওই ছবিগুলোর গল্পের পটভূমি নিয়ে আমি পরিচিত ছিলাম,” বলছেন শুভশ্রী।

ইতিমধ্যে আবার দু’-একটা তামিল শব্দ শিখে ফেলেছেন তিনি। “লাঞ্চের পরে আমি আজকাল ইউনিটের কাউকে জিজ্ঞেস করতে পারি ‘নিঞ্জে সাবতিংলা?’ অর্থাত্‌, তুমি খেয়েছ তো?” বলছেন তিনি।

‘আমি তোমাকে ভালবাসি’ শব্দগুলো তামিলে কী ভাবে বলতে হয়, তা কি শিখেছেন তিনি? “না, ওটা শিখিনি,” হেসে উত্তর দেন শুভশ্রী। ইতিমধ্যে আবার দুটো তামিল ছবির অফার পেয়েছেন এই বাঙালি নায়িকা। ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁর ডেট চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও কথা দেননি। তার একটা কারণ, বাংলাতেও তাঁর কিছু প্রতিশ্রুতি রয়েছে। তবে পরপর দক্ষিণী ছবিতে অফার পেলে তখন কী করবেন? “এখানে সমস্ত জিনিস বড় মাত্রায় হয়, ওভারসিজ মার্কেটটা বড়। এখানে যদি ভাল অফার পাই, আর বাংলাতে তখন যদি কোনও কমিটমেন্ট না থাকে, তা হলে এখানে কাজ করতে কোনও বাধাই নেই,” সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন শুভশ্রী।

তাহলে কি চেন্নাইতে বাড়ি খোঁজা শুরু করে দেবেন তিনি। “না, না। এখনও সেরকম কোনও প্ল্যানিং নেই। আমি কলকাতাকে খুব মিস করছি। মিস করছি আমার কো-স্টারদের... আমার পরিচিত ইউনিটকে। মনে করি আমি এখানে টলিউডেরই প্রতিনিধিত্ব করছি,” বলছেন শুভশ্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE