দিন গিয়েছে তালপাতার সেই সেপাইদের!
এক সময় তালপাতার সেপাই নিয়ে সিঁদ কাটতে যেত চোরেরা। পরে লিকপিকে সেই পুতুলই শিশুর খেলার উপকরণ হয়ে ওঠে। দু’দশক আগেও মেলায় কিংবা হাটেবাজারে দেখা মিলত এই পুতুলের। এখন গাঁ-গঞ্জের মেলায় বিশেষ আর দেখা যায় না বাংলার ঐতিহ্য-প্রাচীন এই পুতুলটিকে। বিদেশি সফ্ট টয়ের ভিড়ে হারিয়ে গিয়েছে তালপাতার সেপাই।
বিশ্ব পুতুল দিবসে হারাতে বসা এই পুতুল শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্যোগী হল ‘ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমি’। সংস্থার অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্র জানান, তালপাতার সেপাই পুতুল-শিল্পটি প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন। খ্রিস্ট-পূর্ব পঞ্চম শতকে শূদ্রক রচিত সংস্কৃত ভাষায় ‘মৃচ্ছকটিকম্’ নাটকে এই পুতুলের ব্যবহারের কথা জানা যায়। তবে মূলত চুরির জন্যই এই পুতুল ব্যবহার করত চোরেরা। প্রাচীন ওই নাটকের একটি চরিত্র ‘সার্বিলক’ নামে এক ব্রাহ্মণ চৌর্যপেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সার্বিলক গৃহস্থের ঘরে সিঁধ কাটতেন। সিঁধ কাটার পরে লিকপিকে হাত-পা ছোড়া পুতুলটিকে সিঁধের ফোকর দিয়ে ঢুকিয়ে দেখে নিতেন তিনি। নিশ্চিত হওয়ার পরে তারপর চুরি করতে ঢুকতেন সার্বিলক। এই নাটকের সূত্র ধরলে হিসেব মতো আড়াই হাজার বছর আগে এই পুতুলের অস্তিত্ব ছিল। পরবর্তীকালে উজ্জয়িনীর এই পুতুলটি শিশুর খেলার সামগ্রী হিসেবে বঙ্গদেশে জনপ্রিয় হয়।