Advertisement
E-Paper

অনুপম রায় বলে কাউকে জানি না

দুমদাম আবেগপ্রবণ মন্তব্যের জন্য তিনি চির বিতর্কিত। কিন্তু তিনি অভিজিৎ থামার পাত্র নন এই সাক্ষাৎকারেও। নাসরিন খান শুনলেনদুমদাম আবেগপ্রবণ মন্তব্যের জন্য তিনি চির বিতর্কিত। কিন্তু তিনি অভিজিৎ থামার পাত্র নন এই সাক্ষাৎকারেও।

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০১
Share
Save

তাঁর গান এখনও জনপ্রিয়। কিন্তু বিতর্কিত মন্তব্য করে সমস্যা ডেকে আনায় তাঁর জুড়ি নেই। যদি বা ক্ষমা চান, সেক্ষেত্রেও সেই চাওয়ার মধ্যেও এমন একটা ভাব যেন সারা বিশ্বের নজর তিনি কাড়তে চাইছেন।

বিতর্ক যেন কিছুতেই আপনার পিছু ছাড়ে না।

না না। যা বলি তার সঙ্গে বিতর্কের কোনও সম্পর্ক নেই। স্বভাবে আমি সোজাসাপ্টা মানুষ। অনুরাগীরা তো আমার দৃষ্টিভঙ্গি পছন্দ করেন। বাদবাকিরা কী ভাবল, তাতে কিছু যায় আসে না।

সলমনকে সমর্থন করে আপনি যে টুইট করেছিলেন সেটা তো কম বিতর্ক তৈরি করেনি…

আমি কখনও সলমনকে সমর্থন করিনি। তার প্রতি আমার আলাদা কোনও মুগ্ধতা নেই। আমার কথা হল লোকে রাস্তায় ঘুমোবে কেন? এ দেশে কোটি কোটি সলমন আছে। আমার অভিযোগ পরিস্থিতিটার বিরুদ্ধে। দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। মানুষকে এখনও কেন ফুটপাথে শুতে হয়? আর আপনি যদি অভিযোগ করেন সলমনকে সমর্থন করার জন্য রায় বেরোবার আগের দিন তার বাড়িতে সাদা পোশাক পরে গিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছি যেন কেউ মারা গিয়েছে, এমন তো নয়।

আপনি রাজনীতিক ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণের বিরুদ্ধে যা নয় তাই মন্তব্য করেছিলেন টুইটে।

উনি যদি ইয়াকুব মেমনকে সমর্থন করেন তা হলে আমি শুধু টুইট করব না। টুইটে যা বলেছি সেটাই করব।

আপনার মতো মানুষের মুখে এই রকম ভাষা শোভা পায়?

দেখুন আমি নিজেকে সব সময় একজন অতি সাধারণ নাগরিক মনে করি। গায়ক হিসেবে হয়তো আমি সুপরিচিত, কিন্তু লোকে যখন আমার অটোগ্রাফ নেয় বা আমার সঙ্গে ছবি তোলে সত্যি কথা বলতে কী অদ্ভুত লাগে। কাউকে কিছু বলার হলে মুখের ওপর বলে দিই। তাতে যদি আমাকে কেউ কটুভাষী মনে করেন আমার কিছু করার নেই।

সোনু নিগম, শান, আপনি—আপনাদের সিনেমার গান এখনও জনপ্রিয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আপনাদের গান কেন সিনেমায় এখন আমরা শুনতে পাই না?

এখন সলমন, অক্ষয়কুমার, আমির গান গাইছে। একটা ছবিতে চার-পাঁচ জন সঙ্গীত পরিচালক থাকেন। তিরিশ-চল্লিশ জন গান করেন। টেকনোলজি দিয়ে বেসুরো গলাকে সুরেলা করা হয়। কোনও শিল্পী স্থায়ী জায়গা পায় না। কোনও গায়কের গান হিট করলেও, পরের বছর দেখা যাবে তাঁকে আর খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা এখন কেমন? এখানকার মিউজিশিয়ানদের সম্পর্কে আপনার কী মত?

বাংলার গানে একটা আভিজাত্য ছিল। কী গানে, কী ছবির গল্পে একটা নতুন ধারা এনেছিল বাংলা। আগে বাংলায় যা হত, বলিউড তাকে অনুসরণ করত। এখন বাংলার সঙ্গীতও ‘ঘাটিয়া’ হয়ে গিয়েছে। সফ্টওয়্যার সব জায়গায় সহজে পাওয়া যাচ্ছে। তার জন্য কোনও মেধার দরকার নেই।

অনুপম রায়কে কেমন লাগে? সম্প্রতি অনুপম বলিউডেও কাজ করা শুরু করেছে।

আমি অনুপম রায় বলে কাউকে জানি না। সে কে? আমি জানি শান আর সোনু নিগমের নাম। ওদের পরে আমি আর কারও গান শুনিনি। গান শোনা বন্ধ করে দিয়েছি। সব গায়কই আজকাল পিচ কারেকশানের সফ্টওয়্যার ব্যবহার করছে। এই সব গায়ককে আমি গায়ক বলে মনেই করি না।


এখনও কি কুমার শানুর সঙ্গে সম্পর্কে তিক্ততা রয়ে গিয়েছে?

না তো। একেবারেই না। বছরের পর বছর আমি আর কুমার শানু একসঙ্গে অনুষ্ঠান করে আসছি। যখনই দেখা হয় তখনই প্রচুর গল্প হয়। আমাদের সময়কার গায়কদের মধ্যে একটা আলাদা আন্তরিক সম্পর্ক আছে। কম বয়সে লোকে অন্য ভাবে রিঅ্যাক্ট করে। একই গানের পুরস্কারে আমি আর কুমার শানু দু’জনেই নমিনেটেড হয়েছি, এমনটা অনেক সময়ই হত। আর শানু সব পুরস্কার নিয়ে চলে যেত। সেই সময় আমার খুব রাগ হত। আমি কখনওই ওকে শুভেচ্ছা জানাতাম না। ও মেরা বচপনা থা।

তার মানে কি এখন আপনি পরিণত হয়েছেন? প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রশংসা করতে আর দ্বিধা নেই?

না, নেই। আমি ভণ্ড নই। আমি মোটেই বলিউডের খানদের মতো নই, যারা ওপর ওপর মিষ্টি ভাব দেখায় আর আড়াল হলেই পরস্পরকে গালি দেয়। এক খান আর এক খানের নামে কুকুর পোষে।

এ আর রহমানও বলিউডের তেমন কোনও প্রজেক্ট করছেন না...

বেশ হয় ও যদি বলিউডে কাজ না পায়। ও-ই প্রথম সিনেমায় টেকনো ঢুকিয়েছিল। রহমান এত ভাল সুরকার—ওর কিন্তু এই সব করার দরকার ছিল না। যদিও পরে মিউজিক নিয়ে নানা ধরনের প্রোগ্রামিং করতে শুরু করে। আর এখন তো ওর প্রতিদ্বন্দ্বীরা পরীক্ষানিরীক্ষার দিক থেকে ওকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। গানের সুর আর কথা নিয়ে যদি খেলতেই হয়, তা হলে উচিত আর ডি বর্মনের মতো হয়ে ওঠা।

আপনার মনে হয় সত্যিকারের গায়ক-সুরকারেরা আপনার জেনারেশনের সঙ্গেই শেষ?

লোকে ছবির নায়ককে ভুলে যায়, কিন্তু গান মনে রাখে। রাজেশ খন্না-দেব আনন্দকে লোকে মনে রাখতে নাও পারে। কিন্তু মহম্মদ রফি-কিশোরকুমারকে মনে রাখবে। মনে রাখবে আর ডি বর্মনের মিউজিক। আমি কিশোরকুমারের মতো বড় ব্র্যান্ড নই ঠিকই, কিন্তু লোকে আমার গান মনে রাখে। এটা আজকাল আর হয় না। এখন সব গায়কই সঙ্গীত পরিচালক, আর সব সঙ্গীত পরিচালকই গায়ক।

আপনি তো সকলেরই নিন্দে করছেন! এই রকম করলে তো ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন।

আমি ও সব পাত্তা দিই না। বিচ্ছিন্ন হয়েই সুখী থাকব আমি।

কী ভাবে আপনার সংসার চলে?

কনসার্ট করি। অ্যালবাম আছে। ভারতের প্রথম পাঁচ জন গায়কের মধ্যে আমি থাকব। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আমার ডাল-ভাতের জোগান দেয় না। আমি হলাম আধুনিক কালের জমিদার। প্রচুর বহুজাতিক সংস্থা এবং ব্র্যান্ড আমার ভাড়াটে। আমার রিয়েল এস্টেটের বিজনেস আছে।

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল।

abhijit bhattacharya interview abhijit bhattacharya anupam roy anupam roy abhijit bhattacharya ananda plus interview
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy