Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

স্বপ্নপূরণ হল হনিমুনে, বললেন পাওলি

আনন্দবাজার ডিজিটালের হয়ে শুনলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়।বার বার নিজের উপলব্ধির কথা বলছেন! কই অর্জুনের কথা তো বলছেন না? “অর্জুন দারুন ট্র্যাভেলার। খুব অরগানাইজড। আমার খুব খেয়াল রেখেছে...” আবেগ জড়ানো গলায় বললেন নায়িকা।

দম্পতির ‘হানিমুন ডায়েরি’। ছবি: পাওলি দামের টুইটার পেজের সৌজন্যে।

দম্পতির ‘হানিমুন ডায়েরি’। ছবি: পাওলি দামের টুইটার পেজের সৌজন্যে।

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ১৩:৪০
Share: Save:

এখনও যেন বিস্ময়ের ঘোর কাটেনি একটুও। “আমার রূপকথার পাহাড়ের দল। এত বছর পেরিয়ে তাদের দেখতে পেলাম! ছোটবেলার বই-বন্দি রূপকথার দেশের যে ছবি মনের মধ্যে এত কাল ভরা ছিল, সেটাই খুলে গেল চোখের সামনে। সেই তারা ভরা রাত আর মিঠে রোদের দুধ ফেনা পাহাড় যার নাম সুইজারল্যান্ড! আমার স্মৃতিগুলো ওদের দেখে চকমকিয়ে উঠল। দেখলাম, কেবল আমি আর অর্জুন!” ফোনের ও পারের গলায় মনে হল আজও বিস্ময়ের বরফ লেগে আছে। পাওলি দাম

বিয়ের পর তাঁর মধুচন্দ্রিমার গল্প করতে বসলেন আনন্দবাজারের ডিজিটাল বিভাগের কাছে। নিজে কলম ধরলেন না। চাইলেন রূপকথার দেশের গল্প শোনাতে।

বিদেশ ভ্রমণ পাওলির কাছে নতুন কিছু নয়। তাঁর স্বামী অর্জুনও ছোটবেলায় জুরিখ ঘুরে এসেছেন। কিন্তু নায়িকার সুইজারল্যান্ড ছোঁয়া এই প্রথম। মাথায় ছিল জুরিখ, সেন্ট মরিৎজ, জারমাট। সেই মতো দুবাইয়ে পারিবারিক জমায়ত সেরে সোজা ক্রিম ঢালা শীত পথে। দু’জনের একান্ত বিনিময়ের এই দিনে যদিও সুটকেস ছিল আলাদা। মজার সুরে পাওলি বললেন, “ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে ট্রেক করতে গিয়ে নিজের জিনিস নিজে বইতে শিখেছি। আর আমি মনে করি বেড়াতে গেলে সব সময় নিজের জিনিস নিজের নিয়ে চলা উচিত। অর্জুন ওর নিজেরটা প্যাক করেছে আলাদা করে, আর আমি আমারটা। হ্যাঁ, প্রয়োজনে হেল্প অবশ্যই করেছি।”

সুইজারল্যান্ডের বরফে ঢাকা পথে বেড়ানোর সেলফি। ছবি: পাওলির টুইটার পেজের সৌজন্যে।

কথা বলতে গিয়ে বার বার বলছিলেন এই পাহাড়ি ভ্রমণ যেন সব কিছু থেকে আলাদা। দিনের বেলা কোনও শহরকে ঠিক কেমন দেখায়, তা তাঁর ভালভাবে জানাই হয়নি বেড়াতে গিয়ে। বেশির ভাগ শহরেই সকাল সকাল জলখাবার সেরে দৌড়তে দৌড়তে শুটে। ফিরেছেন যখন ততক্ষণে সন্ধে হয়ে এসেছে। এ বার যেন সব উলটে পালটে গিয়েছে।

বলিউড-টলিউড-টেলিউডের হিট খবর জানতে চান? সাপ্তাহিক বিনোদন সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

সেন্ট মরিৎজে ইতিহাস তাঁদের তাড়া করে বেড়িয়েছে। “১৭ শতাব্দীর বাড়ি আজও ওরা একই ভাবে রেখে দিয়েছে।বাড়ির মধ্যে তখনকার পশু খামার, আগুন পোহানোর রীতি দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল, আমি অনেক পিছিয়ে নিজেকে দেখতে পাচ্ছি। কী সুখ যে ওখানকার মানুষের হাসিতে।ওখানে গিয়ে মনে হয়, চিন্তা, স্ট্রেস এগুলোও স্রোতের মতো। বরফ পাহাড় এগুলোকে নিজের কাছে জমিয়ে সব ভুলিয়ে দেয়”— যোগ করলেনপাওলি।

বাঁক, সুড়ঙ্গ, সাঁকো সামলে বরফের মধ্যে দিয়ে রেল লাইনে পাহাড়ের পথে যখন গিয়েছিলেন, মনে হয়েছিল এখানেই পৃথিবী যদি থেমে যেত। অর্জুনের বাড়ি থেকে যখন কথা বলছেন, তখনও তাঁর গলায় যেন শীত জড়িয়ে। ওই রেল সফরে তিনি এখনও যেন ডুবে আছেন। আসলে সুইস রেলের ঐতিহ্যের সঙ্গে সুইস নিপুণতার মেলবন্ধন এখানে দেখা যায়৷তিনি জানালেন, সুইজারল্যান্ডের মানুষ ট্রেনে চাপতে বড় ভালবাসেন৷ শোনালেন, ট্রেন ম্যানেজার পাইডার হেয়ার্টলির উক্তি। তাঁর মতে,‘‘ফুটবলে কোনওদিন বিশ্বকাপ না পেলেও রেল যাত্রার ক্ষেত্রে আমরাই চ্যাম্পিয়ন৷ এ নিয়ে আমরা গর্ব করতে পারি৷ অন্য কোনও দেশের মানুষ এত বেশি ট্রেনে চাপেন না৷ সবচেয়ে বড় ট্রেনের সুড়ঙ্গও এখানেই আছে৷’’

পাওলির স্বপ্নপূরণ। ছবিটি টুইটারে শেয়ার করেছেন নায়িকা।

বার বার নিজের উপলব্ধির কথা বলছেন! কই অর্জুনের কথা তো বলছেন না? “অর্জুন দারুন ট্র্যাভেলার। খুব অরগানাইজড। আমার খুব খেয়াল রেখেছে...” আবেগ জড়ানো গলায় বললেন নায়িকা।

এই হনিমুনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির কথা জানতে চাইলাম, আবার এড়িয়ে গিয়ে নিজের রাস্তায় হাঁটলেন পাওলি। “আমি বেড়াতে গিয়ে একটুও ডায়েট করিনি। সুইজারল্যান্ডে এসেছি আর চকোলেট, চিজ খাব না! হতেই পারে না। প্রচুর খেয়েছি। মোটাও হয়েছি। ইচ্ছে হল তো সারাদিন ঘুমিয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা তাঁর জন্য আমার কোনও পাপ বোধ নেই।”

ঠান্ডায় জবুথবু পাওলি ও অর্জুন। ছবি: পাওলির টুইটার পেজের সৌজন্যে।

নানা রকম চকোলেটের দেশ সুইজারল্যান্ড। মন ভাল করা খাবারের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে চকোলেট। হেসে বললেন পাওলি, “তাহলে সুইজারল্যান্ডের মানুষ কেন সুখী হবে না, বলুন তো? আর ওদের ভারত, কলকাতা নিয়ে প্রচুর আগ্রহ। আমি আর অর্জুন কথা বলে বুঝেছি সেটা।”

আরও পড়ুন, আলিয়ার নাচের ভিডিও ভাইরাল, কেন জানেন?

বরফের মাঝে হারিয়ে যেতে গিয়েই নাকি ঘটেছিল বিপত্তি? মিডিয়া তো তোলপাড়! সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরেছেন নাকি আপনারা? পাওলি বললেন, “তেমন কিছুই না। দিন দুয়েক তুষারপাতের জন্য আমাদের রিসর্টে আটকে থাকতে হয়েছিল। প্রথমে ভয় পেলেও পরে বেশ মজা পেয়েছি। ধুর সব কিছু প্ল্যান করে করায় মজা নেই...” রহস্য তাঁর গলায়। ঘরের চাবি বরফ পাহাড়ে রেখে যেন ইচ্ছে করেই অর্জুনের সঙ্গে নিজের রূপকথা তৈরি করছিলেন তিনি। সব কি আর বলা যায়! এক কথায় বললেন, “বেড়ানো নয়, এ যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সময়।”

আরও পড়ুন, ‘সরস্বতী পুজো আমার কাছে শাড়ি পরার একটা স্পেশ্যাল দিন’

একলা বারান্দায় যেমন পাহাড়ের আলো আঁধারি দেখেছেন, তেমনি শীত ঘুম জড়ানো গির্জার কাছে দু’জনে দু’জনের জন্যে নত হয়েছেন।

এই পাওলি যেন অন্য কেউ! কে জানে হয়তো ভিতরের কথা বলে ওঠা এক পাহাড়ি মেয়ে। তাঁর সামনে তখন কেবল সাদা আকাশ, পাহাড়। আনেক দূরে নতুন কাজ, গ্ল্যামার ওয়ার্ল্ড। মাথার ভেতর কারও দখলদারি নেই।

কেবল ক্যানভাস বড় হয়...পাহাড় কাছে ঘেঁষে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE