নয়ের দশকের রবিবার মানেই ছোটদের কাছে টিভি-র অমোঘ অকর্ষণ। ঠিক দুপুর ১২টা থেকেই শুরু এক ঘণ্টার মজার জগৎ। মোগলি, বালু, বাঘেরা, কা, আকিলা আর শের খানদের অন্য রাজত্ব। কিন্তু সব ছাপিয়ে কান তৈরি থাকত শুধুমাত্র এক বার সেই গানটি শোনার আশায়। যেন রবিবার দুপুরের মাংস ভাতের থেকেও লোভনীয় সে সুর। সেই সময়ের বাচ্চাদের কন্ঠস্থ ছিল ‘জঙ্গল জঙ্গল বাত চালি হ্যায়’-এর প্রতিটা সুর, প্রতিটা শব্দ। কিন্তু এমন জনপ্রিয় গান যাঁর গলায় তাঁকে কখনও প্রচারের আলোয় দেখা যায়নি। রবিবারের দুপুরে যাঁর কচি গলা দেশের হাজার হাজার খুদের চোখ আটকে দিত টিভির পর্দায়, আসলে কে তিনি? এখন কোথায় আছেন সেই গলার মালিক?
নাহ! বড় হয়ে গায়ক হননি রবিবারের সেই খুদে জাদুকর, অমল সহদেব। বর্তমানে তিনি ৩৫ বছরের আইটি কর্মী। নয়ডার টাটা কমিউনিকেশনস-এর সিনিয়র ম্যানেজার তিনি। কিন্তু কী ভাবে হঠাৎ এই জনপ্রিয় টেলি সিরিজে গান গাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল অমলের?
ছোটবেলায় অমল শহদেব (বাঁদিকে)। অমল এখন যেমন(ডানদিকে)।
জাপানি টেলি সিরিজ ‘জঙ্গুরু বুক্কু শোহনেন মোগলি’ দূরদর্শনে যখন প্রচার করার কথা ভাবা হয় তখন তাঁর মিউজিকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন গুলজার। টাইটেল সঙটি লিখেছিলেন তিনি। সুর দিয়েছিলেন বিশাল ভরদ্বাজ।
ছোটবেলায় অমল থাকতেন মুম্বইয়ে। পড়াশোনা করেন কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে। তাঁদের বাড়িতে ছিল গান বাজনার পরিবেশ। সেই সময় ঘরোয়া আড্ডায় অমলের গলা পছন্দ হয়েছিল বিশালের। মূল গায়ক হিসাবে নির্বাচন করা হয় তাঁকেই। সঙ্গে কোরাসে ছিল আর চার শিশু শিল্পী। বাকিটা তো ইতিহাস।
কিন্তু সেই সময়ে প্রচার পেলেও মোগলি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যান অমলও। ছোট বয়সে বেশ কিছু স্টেজ পোগ্রাম করেছিলেন অমল। দূরদর্শনের ‘ছোটি সি বাত’ বলে একটি অনুষ্ঠানের টাইটেল ট্র্যাক রেকর্ডও করেছিলেন তিনি। কিন্তু ‘জঙ্গল বুক’-এর মতো জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি।
তবে এখন তাঁর ফেসবুক, ইমেলে হাজার হাজার ভক্তের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। অমল জানাচ্ছেন, এ বছর এপ্রিল মাসে যখন জন ফ্যাবরু-র ‘দ্য জঙ্গল বুক’ মুক্তি পেল তখনই তাঁকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে খুঁজে বের করেছিলেন তাঁর ফ্যানেরা। অমলের একটাই আক্ষেপ, ‘‘সেই সময় যদি সোশ্যাল মিডিয়া থাকত...।’’
ছেলে ও স্ত্রীর সঙ্গে অমল
আরও পড়ুন: কার সঙ্গে ডেট করছেন জাহির খান?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy