Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

‘যিশু কি উত্তমকুমার হয়ে উঠল? না করে ছবিটা নিয়ে সমালোচনা করলে ভাল’

যিশু সেনগুপ্ত এ বার বড় পর্দার উত্তমকুমার। সৌজন্য সৌমিক সেনের ‘মহালয়া’। উত্তমকুমার হয়ে ওঠার গল্প বললেন যিশু...যিশু সেনগুপ্ত এ বার বড় পর্দার উত্তমকুমার। সৌজন্য সৌমিক সেনের ‘মহালয়া’। উত্তমকুমার হয়ে ওঠার গল্প বললেন যিশু...

উত্তমকুমারের লুকে যিশু।

উত্তমকুমারের লুকে যিশু।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:১৩
Share: Save:

আপনি তা হলে এ বার উত্তমকুমার?

হুম…। ওঁর ছবি করেছি আগে। ‘চিড়িয়াখানা’, তার পর ‘সন্ন্যাসী রাজা’র গল্পটা করেছি। ওঁর অভিনীত ছবি। কিন্তু এই প্রথম উত্তমকুমার করছি।

কঠিন তো…

সত্যিই কঠিন। আমি ভেবেছিলাম, সৌমিককেও (পরিচালক) বলেছিলাম, ক্যারিকেচার যেন না হয়ে যায়। আমরা অভিনয়ও সে ভাবেই করেছি। এক জন অভিনেতা উত্তমকুমারের পার্টটা করছেন…। খুব ভয়ে ভয়ে অভিনয়টা করেছি।

কেন?

উত্তমকুমার বলেই। তবে সেটা কাজে লেগে গিয়েছে।

দেখুন, বিনোদনের নানা কুইজ

কী ভাবে?

১৯৭৬-এর ঘটনাটা, যেটা নিয়ে গল্পটা, উত্তমকুমারও প্রথম থেকে যে ইচ্ছের সঙ্গে কাজটা করেছিলেন, তেমন নয় কিন্তু। না বলে দিয়েছিলেন। করব না। কিন্তু আশেপাশে যাঁরা থাকেন…আপনি সুপারস্টার, আপনি লেজেন্ড বলে…করিয়েছিল। বাংলায় একটা কথা আছে না, ‘বার খাওয়া’! সেটাই হয়েছিল।

উত্তমকুমার ‘বার খেয়ে’ ১৯৭৬-এ রেডিয়োয় মহালয়া করেছিলেন?

আমার মনে হয় ‘বার খেয়েই’ করেছিলেন। হেমন্তবাবুও যে ভাবে বলেছিলেন। উনি কিন্তু হেমন্তবাবুকে বলেছিলেন, আমি অডিয়োভিজুয়ালের স্টার। আমার মুখটা স্টার। কিন্তু রেডিয়োতে আমার মুখ তো দেখা যাবে না। যখন সে বছর বসে মহালয়ার সকালে রেডিয়ো শুনছেন, পাশ থেকে লোকজন বলছে, আপনি ফাটিয়ে দিয়েছেন দাদা। কিন্তু উনি বুঝেছিলেন, কিছু একটা অপূর্ণ রয়েছে। খুব সুন্দর একটা লাইন সৌমিক লিখেছে, এখনই বলতে চাই না। আমার খুব ভাল লেগেছে। ভেতরটা ভেঙেচুরে যাচ্ছে। উত্তমকুমারের লাইফে তো বিগেস্ট ফ্লপ...। ফলে আমার অভিনয়ের মধ্যে যে ভয়টা ছিল সেটা কাজে লেগে গিয়েছে মনে হচ্ছে।


উত্তমকুমারও প্রথম থেকে যে ইচ্ছের সঙ্গে কাজটা করেছিলেন, তেমন নয় কিন্তু, বলছেন যিশু

আপনি এ বার উত্তমকুমার, এ ধরনের কাজে সমালোচনার দিকটা ভেবেছেন?

যাঁরা সমালোচনা করার, করবেনই। যত নেগেটিভ পাবলিসিটি হবে সেটা তো ছবিটার জন্য ভাল। এই ছবিটা কিন্তু উত্তমকুমারকে নিয়ে নয়। এটা বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে। পঙ্কজ মল্লিককে নিয়ে। হেমন্তবাবুকে নিয়ে। এবং উত্তমকুমারকে নিয়ে। মানে উত্তমকুমার একটা পার্ট। ছবিটা নিয়ে সমালোচনা হলে আমি খুশি হব। এই ছবিটা তো বাংলা ছাড়া অন্য কোনও ভাষায় হতে পারে না। ফলে যিশু উত্তমকুমার হয়ে উঠল না, তার থেকেও বেশি ছবিটা নিয়ে সমালোচনা করলে ভাল।

প্রযোজক প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করে কেমন লাগল?

বুম্বাদা তো কোনওদিন ফ্লোরে আসেইনি। ভাল ছবি করতে চেয়েছে বুম্বাদা। সেটা করেছে। অনেক জায়গায় ঘোরার পর বুম্বাদা ফাইনালি প্রোডিউস করল। এক-দেড় বছর ঘোরা হয়ে গিয়েছিল তার আগে। তার পর বুম্বাদা স্ক্রিপ্ট শুনে বলল, আমি করব ছবিটা।

আরও পড়ুন, ‘আর কী করলে আমাকে অন্য চরিত্রেও ভাববে, জানি না’

মহালয়া শোনেন আপনি?

মা যত বছর বেঁচেছিলেন, তখন প্রত্যেক বছর শুনতাম।

তার পর?

বিয়ে হয়নি যখন, ধরুন ২০০৩ পর্যন্ত আমার পুরনো পাড়া…সেই পুজো এখনও কন্টিনিউ করি। প্যান্ডেল একদম বাড়ির সামনে। মহালয়ার দিন ঠাকুর আসত। ভোর সাড়ে চারটে, পাঁচটার সময়। দু’তিন বার ঠাকুর আনতেও গিয়েছি। যখন থেকে অভিনয় শুরু করি, সে সময় মূলত টেলিভিশনে কাজ করতাম, যাওয়া হত না। কিন্তু মহালয়া মানে চারটে থেকে শুরু হয়ে যেত। পাড়ার প্যান্ডেলে গিয়ে ঠাকুর নামানো। তার পর ছ’টা থেকে টেলিভিশনে হত। সেগুলোও দেখেছি। সব বাঙালির মতোই মহালয়া আমার জীবনের অংশ। এখনকার কথা আমি বলতে পারব না। আমার বড় মেয়েকে আমি শুনিয়েছি। ছোটটা এখনও খুবই ছোট। বুঝবেও না। বড় মেয়েও যে খুব বুঝেছে এমন নয়। তবে এই কালচারটা নিয়ে বড় হোক ওরা, আমি চাইব।


খুব ভয়ে ভয়ে অভিনয়টা করেছি, বললেন যিশু।

এই যে বলছিলেন, উত্তমকুমারের চারপাশে বহু চাটুকার জুটেছিলেন। যাঁদের কথাতেই ১৯৭৬-এ মহালয়া করেছিলেন উনি। আপনার চারপাশেও এ হেন চাটুকারদের উপস্থিতি টের পান?

দেখুন, আমার কেরিয়ারগ্রাফটা যদি দেখেন, আমি জেড ক্যাটেগরি থেকে শুরু করে টপ ডিরেক্টরদের সঙ্গে কাজ করেছি একই সময়ে। যখন শ্যাম বেনেগালের সঙ্গে কাজ করেছি, সে সময়ই এমন ডিরেক্টরের সঙ্গেও কাজ করেছি যে প্রোডাকশন কন্ট্রোলারের সঙ্গে বসে টাকার হিসেব করছে। ডিরেক্ট করছে অন্য কেউ। ফলে আমার কাছে এগুলো ম্যাটার করে না। আই আন্ডারস্ট্যান্ড। খেতে না পাওয়া থেকে আজকের পাঁচতলা বাড়ি, অনেক কিছু দেখেছি। আমাকে যখন ইন্ডাস্ট্রিতে আনলাকি অ্যাক্টর বলা হত, তখনও ম্যাটার করত না, এখনও ম্যাটার করে না যখন লোকে আমায় স্টার বলছে। আই ডোন্ট কেয়ার অ্যাবাউট এনি অব ইট। আই ওনলি কেয়ার অ্যাবাউট গুড ওয়ার্ক।

আরও পড়ুন, অল্প বয়সে সাফল্যে পিআর কতটা কাজে লাগল? ঋদ্ধি বললেন...

চাটুকারদের ধরতে পারেন তা হলে?

অফকোর্স। যখন চাটুকারিতা করে, শুনতে খুব ভাল লাগে। কিন্তু ওই পর্যন্ত। তার থেকে বেরিয়ে গেলেই জানি আমাকে কী করতে হবে। আমি এক জন বাবা, স্বামী, অভিনেতা— কত চরিত্র আছে করার…। এখনও অ্যাকশন বললে হাত কাঁপে। ডায়লগ ভুলে যাই। যত দিন ভুলে যাব, তত দিন থাকব। যে দিন কনফিডেন্টলি বলে দেব, সে দিন বোধহয় আর থাকব না।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE