Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বসন্তসেনা

ফাগুন রাতে সবাই গেছে আনন্দplus বায়োস্কোপে। দেখলেন স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়এই বসন্তে তোমায় ছুঁয়ে দিলাম। সেই পলাশরঙা শাড়ি আর আগুনরঙা শরীরেরই যেন একমুঠো ভালবাসা। গল্ফ ক্লাবের পার্টিতে অসতর্ক শাড়ির আঁচল, পিঠ খোলা উষ্ণতা, ক্লিভেজের বসন্ত বাতাস রাত- শরীরের আলিঙ্গন মুহূর্তে পাল্টে দিল কলকাতার হালফিলের ফ্যাশন দুনিয়ার হিসেবনিকেশ।

শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৬ ০১:২৪
Share: Save:

এই বসন্তে তোমায় ছুঁয়ে দিলাম। সেই পলাশরঙা শাড়ি আর আগুনরঙা শরীরেরই যেন একমুঠো ভালবাসা।

গল্ফ ক্লাবের পার্টিতে অসতর্ক শাড়ির আঁচল, পিঠ খোলা উষ্ণতা, ক্লিভেজের বসন্ত বাতাস রাত- শরীরের আলিঙ্গন মুহূর্তে পাল্টে দিল কলকাতার হালফিলের ফ্যাশন দুনিয়ার হিসেবনিকেশ। ক্যামেলিয়া প্রেজেন্টস আনন্দplus বায়োস্কোপে বাজিমাত পাওয়ার্ড বাই মিঠি-সান্ধ্য আসরে কলকাতায় নতুন ফ্যাশন ট্রেন্ডের সূচনা হল।

শহরের তাবড় সুন্দরীরা বেশির ভাগই সাদাকালোয় মাতাল করলেন পুরুষের হৃদয়। তাঁদের সাজ জানিয়ে গেল এই বসন্ত শিমুলের নয়, পলাশেরও নয়। এই বসন্ত সাদাকালোর।

নিজেকে সব চেয়ে গ্ল্যামারাস আর আকর্ষণীয় করে তোলার পাসওয়ার্ড হল কালো রং। নতুন প্রজন্মের কাছে কালোই হল সাদা রং। অভিষেক দত্ত থেকে রাধিকা সিংভি, প্রত্যেকেই বলছেন বসন্তে নিয়ন রঙের চল আর নেই। সাদাকালোয় মিশে যাচ্ছে ফাগুন রাতের সাজ।

‘‘ভাইব্র্যান্ট কালার, প্রচুর গয়নাগাঁটি, লাউড মেক-আপের দিন কিন্তু শেষ। ইদানীং বিদেশের মতো কলকাতার রাস্তাতেও প্রচুর ম্যাক্সি ড্রেস বা লং গাউন পরা মেয়েদের দেখা যাচ্ছে। একঘেয়ে কুর্তি বা র‌্যাপার স্কার্টের জায়গা করে নিচ্ছে পালাজো,’’ বললেন অভিষেক।

‘ধূমকেতু’র নায়িকা শুভশ্রী আনন্দplus-য়ে ‘বায়োস্কোপে বাজিমাত’য়ে যখন পিঠখোলা দড়ি দেওয়া কালো গাউনে পা রাখলেন তখন হয়তো বা দেব থেকে শুরু করে অগুনতি পুরুষের হার্ট বিট বাড়তে শুরু করল।

ফ্যাশন ডিজাইনার রাধিকা সিংভি যেমন বলছেন, ‘‘ইউরোপ গিয়ে দেখেছি, গরম কালে দিব্যি মহিলারা কালো পোশাক পরে ঘুরছেন।’’ কালো পোশাকে যে একটু ট্রিম ডাউন লাগে তা খুব ভালই জানেন আজকের আধুনিকারা। ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম শাড়ি পরব। স্টাইলিস্ট স্যান্ডির সঙ্গে পরামর্শ করেই কালো গাউন পরেছিলাম। এই পোশাকে আত্মবিশ্বাস বাড়ে,’’ হেসে বললেন শুভশ্রী। সেই বসন্ত রাত বুঝিয়ে দিল একটা কালো পোশাক দিয়ে কী করে এলোমেলো করে দিতে হয় পুরুষ হৃদয়। বসন্তের রাতে লাল ছাড়া যদিও অন্য কিছু ভাবতে পারেন না অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। বললেন, ‘‘লাল নেটের শাড়িতে ড্রেপিংটা খুব সুন্দর ফুটে ওঠে। আর লালের সঙ্গে শাড়িতে হালকা সবুজ বর্ডার গ্ল্যামার অ্যাড করে।”

অভিনেত্রী মিমি ঋতু অনুযায়ী রং বাছতে নারাজ। বসন্ত পার্টিতে তিনি সাদা-কালো আনারকলি সালোয়ার কামিজ পরেছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভ্যালেন্টাইন ডে –তে লাল পরতে হবে, বসন্তে হলুদ পরতে হবে, এমনটা মানি না। বেরোবার ঠিক আগেই যে রকম মনে হয় পোশাক পরে ফেলি।’’ তাতেই জেন ওয়াইয়ের পুরুষ হৃদয়ে রাজ করছেন তিনি।

জাস্ট একটা হলদে লং ফ্রক আর সিন্ডারেলা শ্যু। তাতেই বাজিমাত ঊষসী চক্রবর্তীর।

‘‘আমি পোশাকের ব্যাপারে কনজার্ভেটিভ। আবার ওপেন। ‘বায়োস্কোপে বাজিমাত’ আমার খুব প্রিয় জায়গা। ওই দিনের জন্য আমার সব চেয়ে পছন্দের কালো গাউনটা পরেছিলাম। আমার পোশাকে যাতে আমার অ্যাপিয়ারেন্সে একটা নতুন মাত্রা যোগ করে সেটাই বরাবর চেষ্টা করি।’’ ফ্রায়েড চিকেনে কামড় বসিয়ে বললেন ‘রাজকাহিনী’র বেগমজান ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। বাংলাদেশের অভিনেত্রী জয়া এহসানের কাছে বসন্ত মানেই ঢাকার ফুলার রোডে বেগুনি জারুল গাছের সারি ধরে প্রেমিকের সঙ্গে রিকশা চড়া। আর ধানমুন্ডি লেকের ধারে কৃষ্ণচূড়ায় আগুন লাগা দেখে মন পাগল হওয়া। বললেন, ‘‘আনন্দplus ‘বায়োস্কোপে বাজিমাত’য়ে সেই ঢাকাকে মনে রেখেই বাংলাদেশি গাউনে সেজেছিলাম। চুড়িদার বাদ দিয়ে একটু এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য প্যান্ট পরেছি। আর পিচ আমার পছন্দের রং।’’

‘‘বসন্ত মানে মন উড়ু উড়ু। কখনও তা হলুদের মতো গাঢ়, কখনও বা লালের মতো হট আর র‌্যাভিশিং,’’ সেলফি দেখতে দেখতে বললেন তনুশ্রী চক্রবর্তী। ফাগুন রাতে তার একটু ছোঁয়ায়, একটু কথায় পুরুষ হৃদয় উথালপাথাল। ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক দত্তর সঙ্গে বসন্ত পার্টির জন্য বেছেছিলেন ঘন লাল রঙের পিঠ-কাটা ভেলভেট ব্লাউজ, লালপেড়ে ফিনফিনে নেটের ওড়না, — যেন বক্ষে জড়ানো দখিন হাওয়া। তার লাল ধুতি মুহূর্তে নিল শাড়ির চেহারা ।

বসন্তেই যেন আনমনা ঋতাভরী চক্রবর্তী। ‘‘বসন্ত মানেই অনেক রং, অনেক সাজ নয়। এই কনসেপ্টটাই সেকেলে হয়ে গিয়েছে। সলিড কালারে যতটা সাদামাঠা থাকা যায় ততই আকর্ষণ বাড়ে,’’ বললেন ঋতাভরী। নরম লাল তসরের বুনোটে আর খোলা পিঠের রহস্যে তার শরীরে যেন পলাশের নেশা। লাল ছাড়াও আলিয়া ভট্টের মতো ডেনিম শর্টস আর চিকনের কুর্তিতে বসন্তে নিজেকে সব চেয়ে স্বচ্ছন্দ মনে করেন তিনি।

সাদাকালোর বাইরে গিয়ে আজও বসন্তের রঙের খেলায় মেতে উঠতে চান অভিনেত্রী গার্গী রায় চৌধুরী। ‘‘ফাগুন রাতে পলাশ রঙের শাড়ি। আর আগুনরঙা ব্লাউজ না পরলে বসন্তের প্রেম-খুনসুটি কিছুই জমে না। বায়োস্কোপে শাড়ি দিয়েই বাজিমাত করতে চেয়েছি আমি,’’ গার্গীর সাফ জবাব। পার্নো মিত্র শাড়িতেই বসন্তের দরজা খুলেছেন। পিচ রঙের জর্জেট শাড়ির আঁচলে তাঁর রামধনু রঙের নকশা। হাতকাটা গোলাপি রঙের ব্লাউজে অবাধ্য মনের ইশারা। এ ভাবেই পুরনো সাজ খসিয়ে নতুন সাজে বসন্তের মতোই ফাগুন রাতের হ্যাং-আউটে অভিনেত্রীরা সাজের মধ্যে দিয়ে রং ছড়িয়ে জানিয়ে দিলেন চুমুর চেয়েও অনেক গোপন চুমুর কথা। পুরুষ মন তখন মাতোয়ারা। চুরমার লিপস্টিক ঠোঁটের গন্ধে।

চিয়ার্স আনন্দplus বায়োস্কোপের রাত!

এস এস সুরিয়ার আউটফিটে র‌্যাচেল হোয়াইট যেমন পুরুষদের মন ছুঁয়ে গিয়েছেন, গাঢ় পিঙ্ক রঙের সালোয়ার কামিজে। তাঁর শরীরে খেলে বেড়াচ্ছে ‘রঙ বরসে’র উষ্ণ ঝলক। বললেন, ‘‘ওপেন এয়ারে এত সুন্দর একটা পরিবেশ। দূরে কোকিলের ডাক ভেসে আসছে। এমন একটা পার্টিতে ইন্ডিয়ান ওয়্যার পরার সুযোগ খুব একটা আসে না। আর ব্রাইট পিঙ্ক তো হোলিরই রং।’’

পুরুষদের মাতাল করতে

সাদা কালো বা হাল্কা সলিড রং বাছুন:
বায়োস্কোপে বাজিমাত-য়ে যেমন সেজেছিলেন পাওলি,
জয়া এহসান, শুভশ্রী

দখিন হাওয়ার ছোঁয়া পেতে:

ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
টাইট পোশাক চলবে না। যেমন পরেছিলেন ঊষসী।

সাহসী হতে:

ফিনফিনে স্বচ্ছ কাপড়ের জ্যাকেট, ট্যাঙ্ক টপ, লং লেন্থ প্যান্ট বা ডিপ নেক আনারকলি, নেটের ওড়না আর শাড়ি, গাউন—যেমন সেজেছিলেন কোয়েল, তনুশ্রী।

সিম্পল লুক পেতে:

হাল্কা লিপস্টিক, কিংবা গ্লস আর কাজল যথেষ্ট। যেমন সেজেছিলেন ঋতুপর্ণা ।

বসন্তে নিরাভরণ:

কোনও গয়নারই দরকার নেই। যেমন কোয়েল

বসন্তে এলোমেলো:

পোশাকের ক্ষেত্রে ফিউশনই এখন ফ্যাশন। যেমন তনুশ্রী

বসন্ত কখনও অভিমানী। সাদা ঢাকাইয়ের জমির ওপর সাদা নকশার শাড়িতে পাওলিকে দেখেই বুঝি সেই অভিমান ভাঙা যায়। তার গুছিয়ে করা খোঁপায় সাদা গোলাপেই বসন্ত ফুটে আছে। লম্বা দুলের ঝটকায় আর সুডৌল হাতে সোনার বালায় কে জানে, কখন পুরুষের মনে গান—‘ঝনক ঝনক কনক কাঁকন বাজে!’ তাঁর স্নিগ্ধ শরীর পুরুষের লাল আবিরের অপেক্ষায়...

আজ বসন্ত। কচি পাতার গন্ধ তাদের শাড়ির ভাঁজে। তাদের চুলে মাতোয়ারা দখিন হাওয়া। তাদের খোলা কাঁধে স্তব্ধ হয়ে আছে দোল ফাগুনের রাত। এ ভাবেই কলকাতার তিলোত্তমারা তৈরি করে দিলেন বসন্তের পাগল করা স্টাইল স্টেটমেন্ট। এ বার শহরের বসন্তসেনারাও কি এই সাজে মন ভোলাবেন? শুধু ফিনফিনে কালো শাড়ি, অফ শোল্ডার গাউন, খাদির নরম কাপড়ে নিজেদের শরীরের কার্ভকে উন্মোচিত করবেন?

আড়ালের দিন শেষ।

মনে ফাগুন, প্রেমে আগুন।

(অনুষ্ঠানটি দেখতে হলে চো‌খ রাখুন ১০ এপ্রিল কালার্স বাংলায়)

ছবি: সুব্রত কুমার মণ্ডল,কৌশিক সরকার, উৎপল সরকার, দেশকল্যাণ চৌধুরী

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

spring entertainment tollywood lifestyle
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE