Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Entertainment News

‘সপ্তককে আর মিস করি না, ফের বিয়ে করতে চাই’

সপ্তকের সঙ্গে বিয়েটা একেবারেই ভুল ছিল না। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। তবে ডিভোর্সের পরে তাঁকে একেবারেই মিস করেন না মানালি দে। ফের বিয়ে করতে চান। সঙ্গে জমিয়ে কাজ। ভাল কাজ। এক সময়ের ‘মৌরি’ এখন বড়পর্দার অভিনেত্রী। আগামী রবিবার ‘নিমকি’ নিয়ে ফের আসছেন টেলিভিশনের পর্দায়। কখনও মা-মারা যাওয়ার পর মনকেমনের গল্প। কখনও বা মেগা ধারাবাহিকের কনটেন্ট নিয়ে সমালোচনার উত্তর— আইস টি-তে চুমুক দিয়ে শুরু হল আড্ডা।

স্বরলিপি ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ১২:২৬
Share: Save:

সপ্তকের সঙ্গে বিয়েটা একেবারেই ভুল ছিল না। ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন। তবে ডিভোর্সের পরে তাঁকে একেবারেই মিস করেন না মানালি দে। ফের বিয়ে করতে চান। সঙ্গে জমিয়ে কাজ। ভাল কাজ। এক সময়ের ‘মৌরি’ এখন বড়পর্দার অভিনেত্রী। আগামী রবিবার ‘নিমকি’ নিয়ে ফের আসছেন টেলিভিশনের পর্দায়। কখনও মা-মারা যাওয়ার পর মনকেমনের গল্প। কখনও বা মেগা ধারাবাহিকের কনটেন্ট নিয়ে সমালোচনার উত্তর— আইস টি-তে চুমুক দিয়ে শুরু হল আড্ডা।

‘চিনি’, ‘মৌরি’, ‘নিমকি’— মিষ্টি থেকে ধীরে ধারে নোনতার দিকে যাচ্ছেন। এ বার কি টক-ঝালও হবে?

(হেসে) জানি না এরপর আমার কোনও চরিত্রের নাম ‘জোয়ান’ হবে কিনা। তবে সত্যিই আমি মিষ্টি থেকে আস্তে আস্তে নোনতার দিকে গিয়েছি।

আপনার কোন টেস্টটা পছন্দের?

আমি ঝাল খেতে ভালবাসি। যত বয়স বাড়ছে তত হয়তো মিষ্টি, নোনতা থেকে ঝালের দিকে এগোচ্ছি।

হঠাত্ ‘নিমকি’ কেন?

আমি ‘নিমকি ফুলকি’-র পরিচালক অভিমন্যুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম এই প্রশ্নটা। ও বলেছিল, ‘জানি না রে, কেন নিমকি নামটা। আর তুইও কাস্ট হয়ে গেলি।’ মনে হচ্ছে খাবারের নাম আমার জন্য লাকি। ভাবছি আমার মিডল নেম কোনও খাবারের নাম করে নেব (তুমুল হাসি)।

এই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

রাজ চক্রবর্তীর প্রোডাকশনে এটা আমার প্রথম কাজ। শ্রীপর্ণা, মানে আমার বোন ফুলকির চরিত্রে যে অভিনয় করেছে, আমার অনেক দিনের বন্ধু। ফলে কমফোর্ট জোন প্রথম থেকেই ছিল। একমাত্র ওকেই আমি চিনতাম। কিন্তু কাজটা করতে গিয়ে দেখলাম সকলে পরিবারের মতো। একটা সময় মনে হচ্ছিল কাজটা মাত্র ১১ দিনেই শেষ হয়ে যাবে! আরও কয়েকটা দিন হোক।

গল্পটা কেমন?

নিমকি গ্রামের ডানপিটে মেয়ে।

‘নিমকি’র সাজে মানালি ও ‘ফুলকি’র সাজে শ্রীপর্ণা।

আবার গ্রামের মেয়ে?

(উত্তেজিত) এটাই বলতে যাচ্ছিলাম। ‘বউ কথা কও’-এর ‘মৌরি’র সঙ্গে কিন্তু কোনও মিল নেই। দেখুন, সব সিরিয়ালেই তো বউ থাকে। সব বউয়ের গ্রাফ কি এক? তেমন সব গ্রামের মেয়ের চরিত্রই কি এক? এটা দুই বোনের গল্প। যাদের নিয়ে বাবা-মা অতিষ্ট হয়ে যায়। গ্রামের দুই বুড়ো আসে ওদের বিয়ে করার জন্য। কিন্তু ওরা বিয়ের দিন পালিয়ে যায় শহরে। এক ধাবায় কাজ নেয়। সেখানেই একটা ঘটনা ঘটে। যেখান থেকে গল্পের মোড় ঘুরে যায়। দর্শক রিল্যাক্স করে দেখতে পারবেন ছবিটা। আগামী ৯ এপ্রিল, সন্ধে ছ’টায় টিভিতে।

‘বউ কথা কও’ থেকে ‘প্রাক্তন’— জার্নিটা কেমন?

‘বউ কথা কও’ থেকে লোকে চিনেছে বটে। তবে তার আগেও অনেকগুলো ছোট ছোট কাজ করেছি আমি। এটা ঠিক যে ওই সিরিয়ালের পর একটা বড় চেঞ্জ আমি লক্ষ্য করেছিলাম। আগে প্রসেনজিত্, ঋতুপর্ণা, দেব-কে নিয়ে গ্রামে শো হত। কিন্তু ওই মেগার পর থেকেই ‘নিখিল-মৌরি নাইট’ শুরু হয়। তার পর টেলিভিশনের আরও অনেককে নিয়ে হয়েছে। ট্রেন্ডটা শুরু হয়েছিল ওটা থেকেই।

তারপর প্রায় এক বছরের ব্রেক নিলেন কেন?

আসলে একটা সময় লোকে ‘মৌরি’ বলে ডাকত। কিন্তু আমাকে মানালী বলে লোকের চেনা উচিত। সেজন্যই ওই সময়টা কাজ করিনি। যাতে নিজের একটা আইডেনটিটি তৈরি করতে পারি। তখন ভেবেছিলাম সিরিয়াল করব না, ছবি করব। সেই ডিসিশন নেওয়ার পর একটা সময় মনে হয়েছিল ক্রাইম করে ফেলেছি।

আরও পড়ুন, ‘যাঁরা সমালোচনা করছেন তাঁরাই নিয়মিত প্রত্যেকটা এপিসোড দেখছেন’

কেন?

সেই এক বছরে বুঝলাম সিরিয়ালে নাম হয়ে গেলে একটা ভাগ হয়ে যায়। এরা সিরিয়ালের আর্টিস্ট, এরা সিনেমার আর্টিস্ট। যেই ভাগটা এখন আর নেই। কিন্তু সেই সময়টা আমি ফেস করেছি। এখন সময় অনেক বদলেছে। ‘প্রাক্তন’-এর পর দেখছি সেই ভাগটা আর করা হয় না।

‘প্রাক্তন’-এর পর কি আরও ভাল চরিত্র পাওয়া উচিত ছিল আপনার?

যদি আমার কেরিয়ার গ্রাফটা দেখেন, রবি ওঝা, অঞ্জন দাশ, শিবু দা নন্দিতা দি— এমন কিছু মানুষের সঙ্গে আমি কাজ করেছি যে ব্লেসড মনে হয়। আমার জেনারেশনের খুব কম মেয়েই সেই সুযোগ পেয়েছে। আর শেষ আট-ন’বছরে কেরিয়ার তো থেমে যায়নি। হয়তো অনেক কাজ করিনি। কিন্তু যেটা করেছি তাতে পজিটিভ ফিডব্যাকই পেয়েছি। ফলে সেই আক্ষেপটা খুব একটা হয় না। বছরে একটা কাজই হোক, ভাল কাজ— এটাই আমি চেয়েছিলাম।

আবার মেগায় ফিরবেন?

যা যা কমিটমেন্ট এখন আছে, তাতে মেগায় ঢুকলে ছবি করতে পারব না। তাই এই মুহূর্তে মেগার কথা ভাবছি না।

মেগার কনটেন্ট নিয়ে তো দর্শকদের প্রচুর অভিযোগ…।

(প্রশ্ন থামিয়ে…) দর্শক নিন্দে করছেন ঠিকই, কিন্তু দেখছেনও তো। সে জন্যই টিআরপি বাড়ছে। এই যে বাচ্চাদের দিয়ে পাকা পাকা কথা বলানো হচ্ছে। লোকে সেটা দেখতেই পছন্দ করছে। দর্শক কখন যে কী ভালবাসে সেটা বলা মুশকিল। আবার কমেডিও ভালবাসে। নানারকম জাদু, ভুত, ব্ল্যাক ম্যাজিকও মানুষ দেখছেন। আমি কাউকে দোষ দেব না। মানুষ দেখছেন বলেই এ সব দেখানো হচ্ছে।

দর্শক তো বলছেন, যা দেখানো হচ্ছে তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই।

নেই তো। তবে অন্য কিছুও তো ট্রাই করা হয়েছে। ধরুন, ‘বউ কথা কও’– তে টিপিক্যাল গল্প ছিল। আমার তার পরের প্রজেক্ট ছিল ‘সখী’। একদম অন্যরকম। এটা তো বলতে কোনও অসুবিধে নেই ‘বউ কথা কও’ যেমন হিট করেছিল, ‘সখী’ তেমন হিট প্রজেক্ট নয়।

সম্প্রতি রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘অনেক সিরিয়ালই সমাদের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়।’’ কী বলবেন?

(একটুও না ভেবে) নয় যখন, তাহলে তো বন্ধ করে দেওয়া উচিত। বন্ধ না করতে পারলে তো এমন কমেন্ট করার কোনও মানে হয় না।

আরও পড়ুন, ইন্ডাস্ট্রিতে আমরা সবাই একে অন্যের পিঠ চুলকোচ্ছি

তার মানে দায় প্রশাসনের?

দেখুন, আমি যদি মনে করি এটা সমাজের জন্য ঠিক নয়, তা হলে ব্যান করে দেব। সেটা না করে ‘স্বাস্থ্যকর নয়’ বললে তো কোনও লাভ নেই। স্বাস্থ্যকর নয় তো আমিও বুঝতে পারছি। কিন্তু কী করা যাবে? সেন্সর তো আছে। সেখানেই তাহলে রেস্ট্রিকশন করে দেওয়া হোক যে, মেগা সিরিয়ালে একটা বউয়ের তিনটে বর বা একটা বরের চারটে বউ দেখানো যাবে না। কিন্তু লোকে যদি এটা দেখে আনন্দ পায়। যদি দেখা যায় ব্যবসার দিক থেকেও ভাল, তা হলে তো কিছু বলার নেই।

ব্যক্তিগত ভাবে সাপোর্ট করেন?

খুব একটা নয়। কিন্তু আমাদের কাছে কোনও অপশন নেই। কাজটা করে খেতে হবে তো। অনেক কিছু পছন্দ না করলেও তাই করতে হবে। এটা আমার কাজের জায়গা। বাড়িতে হয়তো আমি দেখলাম না। কারণ একটা বরের দু-তিনটে বউ এই কালচারটা তো সত্যিই সম্ভব নয়। শাশুড়ি-বউয়ের সবসময় ঝগড়া, মিল হয় না— এটাও তো ঠিক নয়। ফলে এগুলো যে আমি সবসময় সাপোর্ট করি এমন নয়।

কী কী কাজ করছেন এখন?

নীতীশ রায়ের ‘বুদ্ধু ভুতুম’ করলাম। রেশমীদির ‘বারান্দা’র কাজ শেষ। রাজর্ষি দে-র একটা ছবি মে থেকে শুরু হচ্ছে।

এত ব্যস্ততার মধ্যে সপ্তককে মিস করেন?

একেবারেই না। ব্যস্ততা না থাকলেও এখন আর সপ্তককে মিস করব না। আসলে মা মারা যাওয়ার পর মনে হয়েছিল এর থেকে বেশি দুঃখ আর আমি পাব না। সপ্তককে চিনতাম ধরুন ছ’বছর। আর মা তো…। মাকে ছাড়া যদি থাকতে পারি, তা হলে ছ’বছরের সম্পর্ক আর মিস করার জায়গায় থাকে না।

বিয়ে করে ভুল করেছিলেন?

না তো। বিয়েটা ওই সময়ের জন্য ঠিক ছিল। ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম।

কোথাও সপ্তকের সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে অস্বস্তি হয়?

প্রচুর বার দেখা হয়েছ অনেক জায়গায়। আগে হলেও এখন আর অস্বস্তি হয় না। ব্যাপারটা আমার কাছে ট্রান্সপারেন্ট হয়ে গিয়েছে। ও সামনে থাকলেও আমি আর দেখতে পাই না। আসলে সম্পর্ক ভেঙে গিয়েছে, কিন্তু বন্ধুত্ব আছে এটাতে খুব একটা বিশ্বাসী নই।

আরও পড়ুন, ‘বাঙালি কাঁকড়ার জাত, তাই আজও পিছিয়ে’

বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর ইন্ডাস্ট্রির বন্ধুরা সান্ত্বনা দিতে এসেছেন?

অনেকে সান্ত্বনা দিতে এসেছে। কিন্তু আমি স্মার্টলি কাটিয়ে দিয়েছি। আমি এটা পারি। আমি যদি দেখাতাম আমি অ্যাভেলেবল, আমার দুঃখ শেয়ার করার জন্য পাশে একটা কাঁধ চাই। নিশ্চয়ই পেতাম। কিন্তু আমি এন্টারটেইন করিনি।

এখন তা হলে আপনার বয়ফ্রেন্ড কে?

এখন আমি সিঙ্গল। স্পেশাল কোনও বয়ফ্রেন্ড নেই।

বিয়ে করবেন আবার?

বিয়ে তো ডেফিনেটলি করব। তবে সবটাই সিচুয়েশনের ওপর ডিপেন্ড করছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE