Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কে তুমি নিন্দনী

ব্যোমকেশের গল্প। ‘শজারুর কাঁটা’। তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ কোথা থেকে এলেন? কঙ্কনা সেন শর্মা-ই বা কী করছেন? জানাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্তব্যোমকেশের গল্প। ‘শজারুর কাঁটা’। তার মধ্যে রবীন্দ্রনাথ কোথা থেকে এলেন? কঙ্কনা সেন শর্মা-ই বা কী করছেন? জানাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত

ছবি: রানা লোধ।

ছবি: রানা লোধ।

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩০
Share: Save:

বাংলা নাটকের মঞ্চ তাঁকে এখনও অভিনয় করতে দেখেনি।

তার আগেই অবশ্য বাংলা সিনেমার দর্শক তাঁকে মঞ্চে অভিনয় করতে দেখবেন। তা-ও আবার ‘রক্তকরবী’-র নন্দিনীর ভূমিকায়।

না, রবীন্দ্রনাথের এই নাটকটি অবলম্বনে কোনও সিনেমা এই মুহূর্তে তৈরি করছে না টলিউড। শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘শজারুর কাঁটা’ অবলম্বনে শৈবাল মিত্রর ছবিতে থাকছে ‘রক্তকরবী’-র একটি দৃশ্য। আর সেখানেই নন্দিনীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন কঙ্কনা সেনশর্মা।

যাঁরা ‘শজারুর কাঁটা’ পড়েছেন, তাঁরা আশ্চর্য হতেই পারেন এই ভেবে যে মূল গল্পে তো ‘রক্তকরবী’-র কোনও উল্লেখ নেই। তা হলে সিনেমায় এমন দৃশ্য কেন? শরদিন্দুর গল্পে একটা নাটকের দলের উল্লেখ আছে ঠিকই। নাট্যাভিনেত্রী দীপা এবং অভিনেতা দেবাশিসের প্রসঙ্গ রয়েছে। এই দীপার চরিত্রে অভিনয় করছেন কঙ্কনা। যাঁর গোপন প্রেমিককে খুঁজে বের করার ভার পড়ে ব্যোমকেশের উপর। আর দেবাশিসের চরিত্রে আছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত।

‘রক্তকরবী’ তখন। ছবি: তৃপ্তি মিত্র।

সৈকত মিত্র প্রযোজিত এই ছবি শুরুই হয় কঙ্কনা অভিনীত ‘রক্তকরবী’-র একটি দৃশ্য দিয়ে। আড়াই মিনিট দৈর্ঘ্যের দৃশ্য। মঞ্চে অভিনয় করে আসার পরে উইংসে একটা থাম ধরে এক মুহূর্তের জন্য দাঁড়ান কঙ্কনা। তখনও তাঁর পরনে সেই ধানী রঙের শাড়ি। হাতে রক্তকরবীর কঙ্কন। কিন্তু ওই দু-চার সেকেন্ডের মধ্যেই তিনি নন্দিনীর চরিত্র থেকে বেরিয়ে আসেন। ঢুকে পড়েন দীপার চরিত্রে। কাট বলার আগে মেক আপ রুমে গিয়ে বলে দেন মঞ্চে তিনি আর অভিনয় করবেন না!

এর পর চিত্রনাট্য নতুন মোড় নেয়। শুরু হয় দীপার ক্রাইসিসের গল্প। বিয়ের পর তার আর দেবাশিসের সম্পর্কের টানাপড়েন। আবার প্রেমও। নন্দিনীর ভূমিকায় কঙ্কনাকে গোটা ছবিতে আর দেখা যায় না। কিন্তু ছবির নানা দৃশ্যে ‘রক্তকরবী’-র সংলাপ ফিরে ফিরে আসে তাঁর মুখে। কখনও কঙ্কনা বলে ওঠেন, ‘নারী বলে আমার ভয় করে না?’ কখনও বা বলেন ‘পাগল ভাই, এই বন্ধ ঘরের ভিতরে কেবল তোমার আমার মাঝখানটাতেই একখানা আকাশ বেঁচে আছে। বাকি সব বোজা।’

ছবির শুরুতেই নাটকীয় দৃশ্য থাকার কারণে কঙ্কনার অভিনয়ের সঙ্গে তৃপ্তি মিত্রর তুলনা হবে বলেই মনে করছেন অনেকে। পরিচালকের মতে তাঁর ছবিতে নন্দিনীর চরিত্রটি রূপক হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে। বিদ্রোহী নারীশক্তির প্রতীক হল নন্দিনী। আর ‘শজারুর কাঁটা’য় দীপা চরিত্রটি বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে। বিবাহিত হয়েও সংসারধর্ম করতে রাজি হয় না সে। “অভিনয়ের সময় কঙ্কনা নিজের মতো করে সংলাপগুলো বলেছে। আমার ধারণা, তৃপ্তি মিত্রর নন্দিনীর মধ্যে একটা সাবমিসিভনেস ছিল। কিন্তু কঙ্কনার অভিনীত নন্দিনীর মধ্যে তা দেখিনি। হাল্কা চালে রাজার সঙ্গে প্রথম দিকে কথা বললেও সে নন্দিনী সব সময় নিজের আইডেন্টিটি সম্পর্কে সজাগ,” পরিচালক বলেন।

বেশ খানিকটা কাকতালীয় ভাবেই রবীন্দ্রনাথের ছোঁয়া বারবার করে এসে গিয়েছে কঙ্কনার ইদানীং কালের ছবির মধ্যে। সুমন ঘোষের ‘কাদম্বরী’ ছবিতে কঙ্কনা অভিনয় করেছেন মুখ্য ভূমিকায়। তার আগে লাবণ্যর চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘শেষের কবিতা’য়। ইতিমধ্যে দুবাইয়ের চলচ্চিত্র উৎসবে ‘শেষের কবিতা’-র স্ক্রিনিং দেখেছেন কঙ্কনা। “অ্যাজ আ হোল, ছবিটা বেশ ভাল লেগেছে। এখনও ‘কাদম্বরী’র ৬-৭ দিনের কাজ বাকি আছে আমার,” তিনি জানান।

কাদম্বরী দেবীর ভূমিকায় অভিনয় করার আগে কঙ্কনা পড়েছেন অরুণা চক্রবর্তীর লেখা ‘জোড়াসাঁকো’ বইটি।

এমনটাও শোনা যায় যে, রবীন্দ্রনাথ না কি কাদম্বরী দেবীকে সঙ্গে করে নিয়েও গিয়েছিলেন যখন তিনি মৃণালিনী দেবীকে প্রথম বার দেখতে যান। “এটা আমিও শুনেছি। কিন্তু কতটা সত্যি, তা জানি না। ছবিতে এটা দেখানো হয়নি। রবিঠাকুরের সঙ্গে কাদম্বরী দেবীর আসল সম্পর্কটা কী ছিল, তা জানা নেই। তবে এটুকু জানি ওঁদের মধ্যে ইমোশনাল বন্ড ছিল। কাদম্বরী ওয়াজ কট ইন আ টাইম অব ট্রানজিশন। অ্যাসপিরেশন ছিল। কিন্তু স্বপ্নগুলো পুরনো হয়নি। কাদম্বরীকে নিয়ে সিনেমাটা একটা ফ্যাসিনেটিং ইমোশনাল জার্নি।”

‘রক্তকরবী’র নন্দিনীকে নিয়ে এখনই কঙ্কনা বিস্তারিত আলোচনা চান না। সবে মাত্র ছ’দিন এই দৃশ্যে শ্যুটিং করেছেন। তৃপ্তি মিত্রর অভিনীত ‘রক্তকরবী’ না দেখলেও সে নাটকের অডিয়োটা তাঁকে শুনতে দেওয়া হয়েছিল শ্যুটিংয়ের আগেই। যাতে বোঝা যায় কী ভাবে নন্দিনীর সংলাপের স্ক্যানিংটা করা দরকার। “এমনিতেই আমি ছবি করার বিষয়ে বেশ চুজি। কম কাজ করি। ছেলেও বেশ ছোট। তবে এই স্ক্রিপ্টটা পড়ে ছবিটার বিষয়ে বেশ এক্সাইটেড ছিলাম। পরিচালক শৈবালদা আমার মায়ের চেনা। চিত্রনাট্য নিয়ে মায়ের সঙ্গে এর আগেও শৈবালদার কথা হয়েছিল,” বলেন কঙ্কনা।

পিরিয়ড ছবির প্রতি কঙ্কনার আগ্রহ রয়েইছে। তবে ‘শজারুর কাঁটা’ গল্পটা আগে লেখা হলেও পরিচালক তাঁর ছবির প্রেক্ষাপটে ইদানীং কালের কলকাতাকেই ধরতে চেয়েছেন। দীপার ভূমিকায় কঙ্কনার হাতে থাকছে মোবাইল ফোন-ও। “তবে ‘রক্তকরবী’র শ্যুটিংয়ের জন্য সোহাগ সেনের সঙ্গে ওয়ার্কশপ করে সুবিধে হয়েছিল আমার। ওই সংলাপগুলো কথ্য ভাষায় নয়। আমরা প্রথম কিছু দিন টেক্সটটা নিয়ে রিসাচর্র্ করেছিলাম,” জানান কঙ্কনা।

আরও একটা সুবিধে হয়েছিল যে ছবিতে তাঁর লুকটা কেমন হবে, সেটা ঠিক করে দেন অপর্ণা সেন নিজে। ঠিক হয় যে, কঙ্কনার গয়নার জন্য আসল রক্তকরবী ফুল জোগাড় করা হবে। কিন্তু তা জোগাড় করা তো মুখের কথা নয়। শ্যুটিংয়ের প্রথম দিনে ভাগ্যক্রমে কিছু ফুল পাওয়া গেলেও এমন কোনও গ্যারান্টি ছিল না যে পরেও সে ফুল পাওয়া যাবে। এ দিকে প্রথম দিন বিকেলের মধ্যেই তো ফুল শুকিয়ে যাওয়ার ভয়। তাই শ্যুটিং সেরেই ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয় কঙ্কনার গয়না। তাজা ফুল না পাওয়া গেলেও যাতে কন্টিনিউইটি শটের জন্য পরের দিন ঝামেলা না হয়! “মঞ্চের সাজ আলাদা। কিন্তু সিনেমার কথা মাথায় রেখে রিনাদি আমাদের বলেছিলেন কঙ্কনার গলায় অত বড় রক্তকরবীর মালা বদলে একটা কাঠের মালা পরাতে,” বলেন পরিচালক।

এত নিপুণ ভাবে তাঁর লুক-টা ঠিক করে দেওয়াতে কঙ্কনার বেশ সুবিধেই হয়। “আমার অভিনীত চরিত্রের কস্টিউম আর লুক-টা ঠিক হয়ে গেলে খুব সুবিধে হয়। তার পর অ্যাকচুয়াল লোকেশনে গিয়ে শ্যুট করাটা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। ক্রমশ ভেতরের দিকে যেতে থাকি। যাকে বলে ‘আউটসাইড টু ইনসাইড’,” বলেন কঙ্কনা।

তবে শুধু যে তুলনার ভয়, তা নয়। মঞ্চ আর সিনেমার অভিনয়ের মধ্যে বেশ অনেকটা পার্থক্য থাকে। ভয় থেকেই যায় যদি মঞ্চের অভিনয়ের রেশটা সিনেমার মূল অভিনয়ে অতিনাটকীয় হয়ে যায়। তবে শ্যুটিংয়ের সময় যাঁরা দীপা আর নন্দিনীর চরিত্রে কঙ্কনাকে অভিনয় করতে দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চিত যে কাজটা খুব নিষ্ঠার সঙ্গে করেছেন তিনি।

এ ছবিতে কঙ্কনার সহ-অভিনেতা কৌশিক সেন। এই নিয়ে চারটে ছবিতে অভিনয় করছেন কঙ্কনার বিপরীতে। প্রথমে ‘ইতি মৃণালিনী’, তার পর ‘গয়নার বাক্স’। সুমন ঘোষের ‘কাদম্বরী’তে তিনি জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর এ ছবিতে তিনি প্রবালের ভূমিকায়। নাটকের দল চালান। ‘রক্তকরবী’র দৃশ্যে অভিনয় করছেন রাজার চরিত্রে। “কঙ্কনা হল ইনস্টিঙ্কটিভ অভিনেত্রী। গাট ফিলিং দিয়ে অভিনয় করে। কাদম্বরীর বিষ খাওয়ার দৃশ্যে ওর কোনও সংলাপ নেই। কিন্তু ও এমন ভাবে শুয়েছিল যে আমার তাতে অভিনয় করতে সুবিধে হয়েছিল!” বলেন কৌশিক।

এ ছবির শ্যুটিং শুরুর আগে পরিচালকের অনুরোধে কঙ্কনার সঙ্গে ‘রক্তকরবী’র দৃশ্যে টানা আধবেলা ধরে তিনি রিহার্স করেছিলেন অহীন্দ্র মঞ্চে গিয়ে। এটা জেনেও যে রাজার সব সংলাপই তো নেপথ্যে থেকেই বলতে হবে তাঁকে। “আমার ধারণা, শৈবালদা যে ভাবনা থেকে ‘রক্তকরবী’র দৃশ্যটা কনসিভ করেছেন, সেখানে একটা মৌলিক চিন্তা আছে। এই মৌলিক ভাবনাচিন্তা আমি এর আগে সুমন মুখোপাধ্যায় এবং মণীশ মিত্রর ‘রক্তকরবী’র মঞ্চায়নেও দেখেছিলাম,” বলছেন কৌশিক।

ছবি: রানা লোধ।

তবু ‘শজারুর কাঁটা’তে আরও একটা তুলনার বিষয় থেকেই যাচ্ছে দর্শকের কাছে। এ ছবিতে বয়স্ক ব্যোমকেশের ভূমিকায় ধৃতিমান চট্টোপাধ্যায়ের লুক নিয়েও চর্চা হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। এই প্রথম আবার ধৃতিমানকে বড় পর্দায় গান গাইতেও শোনা যাবে! অতুলপ্রসাদের ‘যাব না যাব না যাব না ঘরে’ গানটি খালি গলায় গাইবেন তিনি! সেটার রেকর্ডিং এখনও হয়নি। কঙ্কনার সঙ্গে ধৃতিমানের শ্যুটিং শুরু হয়নি এখনও। তবে ধৃতিমানকে অভিনেতা হিসেবে কঙ্কনার বেশ পছন্দ। গত বছর গৌতম ঘোষের ‘শূন্য অঙ্ক’তে কঙ্কনা অভিনয় করেছেন ধৃতিমানের সঙ্গে। বললেন, “ছোটবেলা থেকে ওঁর কাজ দেখে এসেছি। ‘৩৬ চৌরঙ্গী লেন’ আমার প্রিয় ছবি। ওঁর সেনসিবিলিটিটা অন্য রকমের। ডিসেন্ট, ইন্টেলিজেন্ট...”

এ তো গেল নিজের অভিনীত সিনেমার কথা। সংসার, শ্যুটিং সামলে অন্যান্য সিনেমা দেখতে পারেন কি? উত্তরে তিনি জানান, “মায়ের কাছে শুনেছি ‘শব্দ’ আর ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ভাল হয়েছে। তবে দেখা হয়নি। ‘কুইন’ দেখেছি। কঙ্গনার রোলটা বেশ আনইউজুয়াল আর ইন্টারেস্টিং ছিল।”

তবে কঙ্কনার পছন্দ নয়, যখন বিবাহিত অভিনেত্রীদের কেরিয়ার নিয়ে আলাদা ভাবে আলোচনা হয়। “মনে হয় না, কেউ আলাদা করে জানতে চান যে অভিনেত্রীর ম্যারিটাল স্টেটাসটা কী। যে কোনও চরিত্রে এক অভিনেত্রী কতটা কনভিন্সিং সেটা নিয়েই দর্শক বদার্ড,” জানান তিনি। হয়তো সেটাই ঠিক। ক’জন আর ‘গৌর হরি দস্তান’ মুক্তি পেলে তা দেখে কঙ্কনার পারিবারিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন? বরং তাঁদের কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়াবে কঙ্কনাকে স্বাধীনতা সংগ্রামী গৌর হরি দাসের স্ত্রী লক্ষ্মী দাসের চরিত্রে কতটা মানিয়েছে।

ছেলে হারুন-কে সামলে মাঝে মধ্যেই আজ শিলং তো কাল কলকাতা শ্যুটিং করছেন কঙ্কনা। কখনও কি মনে হয় যে ‘ওয়ার্কিং মাদার’ হয়ে আজ তিনি তাঁর মাকে আরও ভাল করে বুঝতে পারছেন? “আমি সেটা চিরকালই বুঝতে পারতাম। আমি লাকি যে মায়ের মতো এত স্ট্রং একজন রোল মডেল পেয়েছি। ছোটবেলা থেকেই মাকে দেখেছি খুব লিবারাল, আনকনভেনশনাল মানুষ হিসেবে। খানিকটা বোহেমিয়ান। আমাকে পড়িয়েছেন। অফিসে নিয়ে গিয়েছেন। আমি খুব লাকি। টাচউড, এ রকম যেন থাকে সারা জীবন।”

মায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই আরও একটা প্রশ্ন জুড়ে যায়। অপর্ণা সেনের ‘মিস্টার অ্যান্ড মিসেস আয়ার’, ‘১৫ পার্ক অ্যাভিনিউ’, ‘ইতি মৃণালিনী’, ‘দ্য জাপানিজ ওয়াইফ’, ‘গয়নার বাক্স’-এর অভিনেত্রী কঙ্কনা কতটা আলাদা অন্যান্য পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার সময়? এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য এল কৌশিকের কাছ থেকে। বলেন, “এক এক পরিচালকের কাজের ধরন আলাদা। তাঁদের তৃপ্ত হওয়া বা না হওয়ার মাপকাঠিটাও ভিন্ন। দেখেছি অনেক বার শ্যুট নেওয়ার পরেও রিনাদিকে রিটেক করতে। এবং যখন উনি এক্সপেক্ট করেন যে অভিনেতারা যেন পরের বার তাঁদের পারফর্ম্যান্সটা আরও ভাল করে।” কিন্তু অন্য পরিচালকেরা সেভাবে নাও ভাবতে পারেন। “অন্য পরিচালকের ক্ষেত্রে দেখেছি যে কখনও শট ওকে হয়ে গেলেও কঙ্কনার মধ্যে আবার শ্যুট করে অভিনয়টা ভাল করার প্রবণতা থাকে। অভিনেত্রী হিসেবে এটা খুব বড় গুণ। কিন্তু নিজে যা-ই অনুভব করুক না কেন, ও সেখানে পরিচালকের সিদ্ধান্তকেই গুরুত্ব দেয়,” বলেন তিনি।

‘রক্তকরবী’র দৃশ্যে শ্যুটিং করতে গিয়ে অন্যান্য নাটক নিয়েও আলোচনা হয়েছে। “কঙ্কনা আমার ‘কলকাতা ইলেকট্রা’ বলে একটা নাটক দেখেছিল। প্রথম দিন শ্যুটিং করতে এসে আমায় বলেছিল ‘তোমার ‘কর্কটক্রান্তির দেশ’ দেখে মায়ের এত ভাল লেগেছে যে পরের শোতেও যাবেন। কিন্তু আমি থাকতে পারছি না বলে এ বার দেখা হবে না’,” বলেন কৌশিক।

যদি তেমন সুযোগ আসে কোন চরিত্রে কঙ্কনাকে বাংলার মঞ্চে অভিনয় করতে দেখতে চাইবেন কৌশিক? “সোফোক্লিস-এর ‘আন্তিগোনে’ নাটকের দু’টো ভার্সন আমি ভেবেছি। একটা ভার্সনের জন্য কঙ্কনা অ্যাবসোলিউটলি রাইট। ওর কণ্ঠস্বরের মধ্যে একটা ডিসট্যান্স আছে। চেহারার মধ্যে একটা নরম-সরম ভাব রয়েছে কিন্তু তাকে রুক্ষ করেও দেওয়া সম্ভব। সেটা আন্তিগোনের চরিত্রের ক্ষেত্রে বেশ মানানসই হবে,” বললেন কৌশিক।

সিনেমার জন্য নন্দিনী সেজেছেন তিনি।

পর্দার বাইরে, উইংসের আড়াল থেকে কঙ্কনা কি কৌশিকের এই ইচ্ছের কথা জানতে পেরেছেন?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

priyanka dashgupta konkona sen sharma nandini
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE